Naya Diganta

ভারতে বাঁধের পানি সরিয়ে ফোন তোলায় কর্মকর্তাকে জরিমানা

ছত্তিশগড়ে খেরকাত্তা বাঁধ

সেলফি তুলতে গিয়ে বাঁধের পানিতে পড়ে গেছে মোবাইল। এই ফোন উদ্ধার করতে ভারতীয় এক কর্মকর্তা বাঁধের কয়েক মিলিয়ন লিটার পানি সরানোর নির্দেশ দেবার পর সরকার তাকে বড় অঙ্কের জরিমানা করেছে।

কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়েই রাজেশ ভিশওয়াস নামে ওই কর্মকর্তা ৪ দশমিক এক মিলিয়ন লিটার (আট লাখ ৮০ হাজার গ্যালন) পানি বের করার জন্য তিপ্পান্ন হাজার ৯২ রুপি অর্থ খরচের নির্দেশ দেন।

বন্ধুদের সাথে পিকনিকে গিয়ে সেলফি তোলার সময় ফোনটি তার হাত থেকে বাঁধের পানিতে পড়ে যায়। ভিশওয়াশ দাবি করেন ফোনটি তোলা খুবই জরুরি ছিল। কারণ ওই ফোনের মধ্যে স্পর্শকাতর সরকারি তথ্য ছিল। কিন্তু তার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ আনা হয়েছে।

খাদ্যদ্রব্য পরিদর্শক এই সরকারি কর্মকর্তার হাত থেকে তার এক লাখ রুপি মূল্যের স্যামসাং ফোনটি গত সপ্তাহে পড়ে যায় ছত্তিশগড় রাজ্যের খেরকাত্তা ড্যামের পানিতে।

স্থানীয় ডুবুরি নামিয়ে ফোন খুঁজে না পাবার পর ওই কর্মকর্তা একটি ডিজেল চালিত পাম্প সেখানে নিয়ে যাবার জন্য অর্থ দেন।

ভিশওয়াশ একথা জানান সামাজিক মাধ্যমে দেয়া এক ভিডিও বিবৃতিতে। পাম্পটি সেখানে চালানো হয় কয়েক দিন ধরে এবং পাম্প দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার লিটার পানি তুলে ফেলা হয়।

কিন্তু ফোনটি যখন উদ্ধার করা হয় তখন দেখা যায় ফোনের ভেতর পানি ঢুকে ফোন অচল হয়ে গেছে।

সেসময় মিডিয়াতে ভিশওয়াস বলেছিলেন যে একজন কর্মকর্তা তাকে বাঁধ থেকে ‘কিছু পানি পাশের একটি খালে সরিয়ে নেয়ার জন্য’ মৌখিক সম্মতি দিয়েছিলেন।

তিনি আরো বলেছিলেন, ওই কর্মকর্তা তাকে বলেছিলেন এতে ‘বরং কৃষকদের উপকারই হবে, কারণ তারা বাড়তি কিছু পানি সেচের জন্য পাবে’।

কিন্তু এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কর্তৃপক্ষ ভিশওয়াসকে তার পদ থেকে বরখাস্ত করেন।

দিন কয়েক আগে রাজ্যের সেচ দফতর তাকে একটি চিঠি পাঠিয়ে তার পদক্ষেপের জন্য তাকে শাস্তিস্বরূপ জরিমানা করে। বিবিসি সেচ দফতরের ওই চিঠিটির কপিও দেখেছে।

ওই চিঠিতে বলা হয় ভিশওয়াস ৪১ লাখ লিটার (আট লাখ ৮০ হাজার গ্যালন) পানি অপচয় করেছেন তার ‘ব্যক্তিগত স্বার্থে’ এবং তাকে এই পানির দাম পরিশোধ করতে হবে। একইসাথে ‘বিনা অনুমতিতে পানি সরানোর দায়ে’ তাকে ১০ হাজার রুপি জরিমানা দিতে হবে।

চিঠিতে আরো বলা হয় তিনি ‘অবৈধ’ কাজ করেছেন এবং ‘ছত্তিশগড়ের সেচ আইনের ধারা অনুযায়ী তার এই কাজ শাস্তিযোগ্য’। এই ঘটনার খবর যখন প্রথম জানাজানি হয়, তখন এনিয়ে সারা দেশে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ওঠে।

বহু রাজনীতিক এই কর্মকর্তার পদক্ষেপের সমালোচনা করেন এবং বলেন যেখানে দেশের বহু অংশে পানির অভাব দেখা দিয়েছে, বিশেষ করে গ্রীষ্মের দাবদাহের কারণে। সেখানে এক ব্যক্তির স্বার্থে এইভাবে পানির অপচয় না করে তা আরো ভাল কাজে লাগানো যেত।

সূত্র : বিবিসি