Naya Diganta

হজ-ওমরাহ পালনে যেসব সমস্যায় পড়েন হাজীরা

হজ-ওমরাহ পালনে যেসব সমস্যায় পড়েন হাজীরা।

সৌদি আরবে ওমরাহ পালন করতে গিয়ে গত ১০ মে মক্কার মসজিদ আল হারাম থেকে হারিয়ে যান ৫৭ বছর বয়সী জাহানারা বেগম। মেয়ের সাথে নামাজ পড়তে গিয়ে ভিড়ের মধ্যে দলছুট হয়ে যান ফেনীর চাডিপুর এলাকার ওই নারী।

টানা তিন দিন মসজিদ প্রাঙ্গণ ও হজ ক্যাম্পে ব্যাপক খোঁজাখুজি করেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরে মসজিদ প্রাঙ্গণ থেকেই তিনি উদ্ধার হন।

সৌদি আরবে অবস্থানরত নিখোঁজের জামাতার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক মেসেঞ্জারে একটি অপরিচিত আইডি থেকে কল আসে। সেখানে জাহানারা বেগমের খোঁজ জানানো হয়।

নিখোঁজের আরেক জামাতা মোহাম্মদ হারুণ বলেন, হারিয়ে যাওয়ার সময় তার সাথে মোবাইল, পরিচয়পত্র কিছুই ছিল না। কানো ফোন নম্বরও মুখস্ত রাখেননি।

জাহানারা বেগম মসজিদের ভেতরে দায়িত্বরত বাংলাদেশী কর্মীদের সাহায্য নিয়ে মেয়েকে খোঁজার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু এত বড় প্রাঙ্গণে কারো খোঁজ করা অনেকটা খড়ের গাদায় সুঁই খোঁজার মতো।

পরে বাংলাদেশী এক ব্যক্তি তার মেয়ের জামাইয়ের নাম ফেসবুকে সার্চ দিয়ে খোঁজ বের করেন।

জাহানারা বেগমের হারিয়ে যাওয়ার ওই বিজ্ঞপ্তি ফেসবুকের কয়েকটি গ্রুপে দেখা যায়। প্রতিনিয়ত এ ধরনের অসংখ্য নিখোঁজ সংবাদ পোস্ট হতে দেখা যায়।

সিলেটের কুলাউড়ার বাসিন্দা সৌদ আল আরেফিন পাপলু গত ৮ মে মসজিদ আল হারামে তাওয়াফ করার সময় প্রচণ্ড ভিড়ে ভাই ও মায়ের থেকে আলাদা হয়ে যান। তার কাছেও ফোন, ঠিকানা, কাগজপত্র কিছুই ছিল না।

সৌদ আল আরেফিন পাপলু দীর্ঘ দিন ধরে ডিমেনশিয়া রোগে ভোগায় খুব দ্রুত সবকিছু ভুলে যেতেন। এ কারণে তার নিখোঁজ থাকার ছয় দিন বেশ দুশ্চিন্তায় ছিল পরিবার। পরে তারা ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপে নিখোঁজের সন্ধানে পোস্ট দেয়। ওমরাহ করতে যাওয়া এক দম্পতি তাকে মসজিদ প্রাঙ্গণে ঘোরাঘুরি করতে দেখে পরিবারের নম্বরে যোগাযোগ করে তার অবস্থান সম্পর্কে জানান।

সৌদের মামাতো ভাই আবুল কামাল রাসেল জানান, ‘মক্কা শরিফে লাখ লাখ মানুষ ঘুরে। কেউ হারিয়ে গেলে তাকে সাহায্য চাইতে হবে, তাহলে খোঁজ পাওয়া যাবে। কিন্তু আমার ভাই সব ভুলে যান। তিনি কাউকে বলতেও পারে নাই যে হারিয়ে গিয়েছে। এ জন্য আমরা পুলিশকে জানিয়েছি, নিজেরা খুঁজেছি, কিন্তু পাইনি। এরপর আমরা ফেসবুকে পোস্ট দেই। ওই পোস্ট দেখেই একজন আমাদের জানিয়েছে।’

তবে ভিন্ন ধরনের ঘটনা ঘটেছে রুহুল আমিনের সাথে। তিনি ছয় বছর ধরে সৌদি আরবের দাম্মাম শহরে শ্রমিকের কাজ করতেন। পিরোজপুরের এই বাসিন্দা গত মাসে তার পরিবারকে জানান যে তিনি ওমরাহ পালন করতে যাবেন।

এরপর টানা ১৪ দিন রুহুল আমিনের আর কোনো খোঁজ পাননি পরিবার।

রুহুল আমিনের স্ত্রী শিমলা শিমু বলেন, ‘আমাদেরকে ফোন দিয়ে বলেন যে তিনি ওমরাহ করতে যাবে। তারপর দুই-চার দিন করে ১৪ দিন চলে যায়, কোনো খোঁজ নেই তার। ফোন বন্ধ। আমার দুই সন্তান দিন-রাত কাঁদে। একবার তো মনে হয়েছিল, বেঁচে আছে না-কি মারা গেছে। যাদের সাথে কাজ করে তাদের নম্বরও জানি না। টেনশনে কেউ ঘুমাইনি। পরে ১৫ দিনে তার ফোন পাই।’

পরে তিনি স্বামীর কাছে জানতে পারেন, দাম্মাম থেকে মদিনা যাওয়ার পথে পাসপোর্ট ও অন্য কাগজপত্রে জটিলতা থাকায় তিনি ইমিগ্রেশনে আটকা পড়েন। পরে তার ফোন জব্দ করে জেদ্দা কারাগারে ১৪ দিন রাখা হয়।

কারাদণ্ড শেষে সৌদি কর্তৃপক্ষ তাকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়।

আবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন অনেক ভিডিও রয়েছে, যেখানে নয় মাস ধরে হজযাত্রীর কোনো খোঁজ না পেয়ে প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা চাইছে স্বজনরা।

বাংলাদেশ থেকে হজের আনুষ্ঠানিকতা পালন করতে গিয়ে এভাবে হারিয়ে যাওয়া, অসুস্থতা, প্রতারিত হওয়াসহ নানা বিড়ম্বনার মুখে পড়েন হজযাত্রীরা।

হারিয়ে যাওয়া ঠেকাতে
গত বছর ওমরাহ পালন করতে গিয়ে ১২৩ জন বাংলাদেশীর মৃত্যু হয় এবং অসংখ্য ওমরাহযাত্রী সৌদি আরবে হারিয়ে যান বলে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে জানান জেদ্দায় বাংলাদেশ হজ অফিসের কাউন্সিলর।

২৩ জানুয়ারি লেখা ওই চিঠিতে হজযাত্রীদের হারিয়ে যাওয়া প্রতিরোধে ব্যাপক প্রচার কার্যক্রম পরিচালনা করা এবং এসব বিষয়ে সক্ষমতা বাড়াতে সহযোগিতা চাওয়া হয়।

তবে হজ বা ওমরাহ পালন করতে গিয়ে হারিয়ে যাওয়া সমস্যা এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানিয়েছেন, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ অধিশাখার উপ-সচিব ড. মোহাম্মদ মঞ্জুরুল হক।

তার মতে, হজে হারিয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা খুব কম। কারণ হজে যাওয়ার সময় সবার গলায় বাধ্যতামূলকভাবেই প্রয়োজনীয় ফোন নম্বর ও ঠিকানা ঝুলিয়ে দেয়া হয়। সাধারণত ওমরাহ করতে গিয়েই হারিয়ে যাওয়ার ঘটনা বেশি ঘটে।

তিনি জানান, ‘হারিয়ে যাওয়া নিয়ে মানুষ এখন আগের চাইতে অনেক সচেতন হয়েছে। কেননা এ বিষয়ে হাজীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। প্রতি ৪৪ জন হাজীর জন্য একজন গাইড থাকে। তাদের নির্দেশনা দেয়া থাকে যেন কোনো হাজী একা কোথাও না যান। ওই গাইডরা হাজীদের সবার সমস্যার সমাধানে কাজ করে। তার দ্বারা সম্ভব না হলে মিশন অফিস প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়।’

তিনি জানান, কেউ হারিয়ে গেলে তাকে যদি মক্কার ইব্রাহিম খলিল রোডে বাংলাদেশ হজ অফিস কিংবা মদিনার কিং ফাহাদ ২১ নম্বর গেইটের কাছে বাংলাদেশের হজ অফিসে আনা হয় তাহলে সেখানকার আইটি বিভাগ তার পরিচয় বের করে ঠিকানা মতো পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করে।

হারিয়ে যাওয়া ঠেকাতে সব সময় দলের সাথে যুক্ত থাকা এবং গলায় ঝোলানো ব্যাগে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, ফোন নম্বর রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। বয়স্ক কাউকে নিয়ে হজে গেলে ভিড়ের মধ্যে তারা যেন দলছুট হয়ে না যান তার জন্য সজাগ থাকতে বলেছেন তিনি।

কয়েকজন হজযাত্রী, ওমরাহ পালনকারী ও ভুক্তভোগীরা বলছেন, কেউ হারিয়ে গেলে কোথায় অপেক্ষা করতে হবে এমন একটি জায়গা আগে থেকেই ঠিক করে রাখলে দুশ্চিন্তা এড়ানো যায়।

অ্যাজেন্সির প্রতারণা
সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন অ্যাজেন্সির মাধ্যমে হজ পালন করতে গিয়ে নানা ভোগান্তিতে পড়ার অভিযোগ করেন হাজীরা। এ নিয়ে বাংলাদেশী হজযাত্রীদের বড় অভিযোগের জায়গা হলো, বিভিন্ন হজ অ্যাজেন্সি তাদেরকে এক ধরনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে নিয়ে যান। পরে গিয়ে দেখেন উল্টা চিত্র।

হজ করতে গিয়ে এমন বিরূপ অভিজ্ঞতার কথা জানান আবুল কালাম।

তিনি বলেন, ‘হাজীরা চান তাদের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মক্কায় থাকার সময় কাবা শরিফে পড়তে আর মদিনায় থাকলে মসজিদে নববীতে পড়তে। তাই তারা চান হোটেল যেন হাঁটার দূরত্বে হয়। এ জন্য অ্যাজেন্সিগুলো বেশি টাকা চার্জ করে। কিন্তু গিয়ে দেখা যায় যে ক্যাম্প থেকে মসজিদ এতই দূরে যে হেঁটে যাওয়ার উপায় নাই। তার মধ্যে নোংরা পরিবেশ, পানি না থাকা, নোংরা টয়লেটের সমস্যা তো থাকেই। অ্যাজেন্সিগুলো এই হজ নিয়েও ব্যবসা করে।’

এ বিষয়ে সরকারের সু-নজর থাকা প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।

এক্ষেত্রে কোনো অ্যাজেন্সির মাধ্যমে হজে গেলে তা বাংলাদেশের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন প্রাপ্ত বৈধ অ্যাজেন্সি কি-না এবং ওই অ্যাজেন্সির বিরুদ্ধে সৌদি হজ মন্ত্রণালয়ের অভিযোগ রয়েছে কি-না, তা যাচাই করার পরামর্শ দিয়েছে হজ মিশন।

ওই অ্যাজেন্সির মাধ্যমে আগে যারা হজ বা ওমরাহ করেছেন, তাদের কাছ থেকে সার্ভিস সম্পর্কে খোঁজ-খবর নেয়া যেতে পারে।

তবে কোনোভাবেই দালাল বা বেনামী মোয়াল্লেমের সাথে চুক্তিবদ্ধ না হওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

অ্যাজেন্সিগুলো বিভিন্ন দামে নানা ধরনের হজ প্যাকেজ সুবিধা দিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে প্যাকেজের টাকা দেখে নয় বরং সার্ভিস দেখে বেছে নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন অ্যাজেন্সির মাধ্যমে হজ আদায় করা ব্যক্তিরা।

তারা বলছেন, হজ প্যাকেজে থাকা, খাওয়া, বিমান ভাড়া সব সুবিধাদি আছে কি-না তা যাচাই করে প্যাকেজ নির্বাচন করতে হবে। কম টাকার প্যাকেজে অনেক জরুরি সার্ভিস বাদ পড়তে পারে, আবার প্রতারিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

এছাড়া হজ গাইড বা মোয়াল্লেম অ্যাজেন্সির পক্ষ থেকে কী ধরনের সেবা দিবেন এবং অতিরিক্ত সেবা বাবদ কত খরচ নেবেন তা লিখিত রাখলে পরে বিড়ম্বনা এড়ানো যায়।

থাকা-খাওয়া
মক্কা বা মদীনায় যেখানে থাকবেন, ওই হোটেল, ক্যাম্প বা বাসা কী ধরনের, মসজিদ থেকে কত দূরে, লিফট আছে কি-না, একেক রুমে কতজন থাকবেন, একটি টয়লেট কতজনের সাথে শেয়ার করতে হবে- ওই সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা নিয়ে যেতে হবে। এমন পরামর্শ দিয়েছেন হজ পালনকারীরা।

সৌদি আরবে পৌঁছে তিন বেলা খাবার দেয়া হবে কি-না, খাবার না দিলে কোথায় কী ধরনের খাবার পাওয়া যাবে, কত খরচ পড়বে তার ধারণা রাখার পরামর্শ দেন তারা।

হজ ক্যাম্পে বাংলাদেশী হাজীদের খাবার হিসেবে সাধারণত ভাত দেয়া হয়। এত ভাত খাওয়ার কারণে অনেক যাত্রীর ব্লাড সুগার বেড়ে যেতে পারে, সেক্ষেত্রে তাদের বিকল্প খাবার যেমন রুটি, সবজি, শুকনা খাবার পরামর্শ দেয় হজ মিশন।

এ ব্যাপারে হজ অধিশাখার উপ-সচিব ড. মোহাম্মদ মঞ্জুরুল হক বলেন, ‘অ্যাজেন্সির বিরুদ্ধে আগেও অভিযোগ ছিল, তবে এখন পরিস্থিতি বদলাচ্ছে।’

তিনি জানান, অ্যাজেন্সির সার্বিক সেবা নজরদারির জন্য মক্কা ও মদিনায় বাংলাদেশের মিশনের কয়েকটি দল কাজ করে থাকে।

অ্যাজেন্সি হাজীদের যেখানে রাখবে তার তালিকা মিশনকে দেয়। পরে মিশন থেকে একটি দল সরেজমিনে থাকা-খাওয়ার পরিস্থিতি পরিদর্শন করে। এরপর হাজী ও মোয়াল্লেমের সাথে কথা বলে মক্কার কাউন্সিল অফিসের কাছে রিপোর্ট জমা দেয়।

সেবা ঠিকঠাক মতো না থাকলে বা কোনো অভিযোগ থাকলে মিশনের পক্ষ থেকে, না হলে সৌদি কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় তা তাৎক্ষণিক সমাধান করা হয় বলে জানান মঞ্জুরুল হক।

অসুস্থতা
হজ ও ওমরাহ সফরে বিরূপ আবহাওয়ার মধ্যে দীর্ঘ পথ হাঁটা এবং প্রচুর মানুষের ভিড় থাকায় অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাই মানসিক ও শারীরিক সক্ষমতা থাকা জরুরি বলে মনে করেন হজ পালনকারীরা।

কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের জন্য মক্কা ও মদিনায় মিশন অফিসে স্বাস্থ্য সেবার ব্যবস্থা আছে বলে জানান ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ অধি-শাখার উপ-সচিব ড. মোহাম্মদ মঞ্জুরুল হক।

রোগীর পরিস্থিতি গুরুতর মনে হলে চিকিৎসকরা বড় হাসপাতালে রেফার্ড করে থাকেন।

এর বাইরে মক্কা-মদিনায় মিনা, মুজদালিফা, আরাফাতে ক্লিনিক ও হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। হাজীদের জন্য সব স্বাস্থ্যসেবা ও অ্যাম্বুলেন্স সেবা বিনামূল্যে দেয়া হয়ে থাকে।

তবে কোনো হজযাত্রীর যদি নিয়মিত কোনো ওষুধ খেতে হয় তাহলে যতদিন সফরে থাকবেন ওই হিসেব করে প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র সাথে রাখার পরামর্শ দেয়া হয়েছে সরকারি হজ নির্দেশিকায়। কেননা ওই দেশে কেউ ফার্মেসি থেকে চাইলেই ওষুধ কেনা যায় না। তার জন্য চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র দেখাতে হয়।

অন্য সমস্যা
যেকোনো ধরনের বিভ্রান্তি এড়াতে হজের সার্বিক আনুষ্ঠানিকতা, কোথায় কী করতে হবে, তা সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা রাখার পরামর্শ দিয়েছেন হজ পালনকারীরা।

এ নিয়ে সরকারি নির্দেশিকা সাথে রাখা যেতে পারে। এছাড়া আগে হজ পালন করেছেন, এমন কয়েকজনের সাথে কথা বলে প্রাথমিক ধারণা নিয়ে গেলেও অনেক সমস্যা থেকে দূরে থাকা সম্ভব।

হজ ও ওমরাযাত্রীদের হারিয়ে যাওয়া ঠেকাতে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কাছে পাঠানো চিঠিতে কিছু সুপারিশ তুলে ধরেছেন জেদ্দায় বাংলাদেশ হজ অফিসের কাউন্সিলর। তার মধ্যে রয়েছে, ওমরাহযাত্রীদের গ্রুপভিত্তিক সৌদি আরবে পাঠানো। মক্কা, মদিনার রাস্তাঘাট চেনেন, আরবি ভাষা বুঝেন, যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলার ক্ষমতা রয়েছেন এমন দক্ষ গাইড সাথে রাখা। যারা হজ বা ওমরাহ পালন করবেন, তাদের প্রত্যেকের সাথে স্থায়ী ঠিকানা, জরুরি যোগাযোগের মোবাইল নম্বর, মক্কা-মদিনায় আবাসিক হোটেলের ঠিকানা, পাসপোর্টের ফটোকপি, ছবিসহ আইডি কার্ড সার্বক্ষণিক সাথে রাখা।

পাসপোর্ট সাবধানতার সাথে সংরক্ষণ করা। কোনো কারণে পাসপোর্ট হারিয়ে গেলে সাথে সাথে বাংলাদেশ হজ অফিসে যোগাযোগ করা এক্ষেত্রে জেদ্দায় বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল থেকে ট্রাভেল পারমিট গ্রহণ করা যেতে পারে।

এছাড়া হজ বা ওমরাহযাত্রীর মৃত্যু হলে লাশ সৌদি আরবে দাফন কিংবা দেশে ফিরিয়ে নেয়ার উপায়ও চিঠিতে জানিয়েছেন হজ কাউন্সিলর।

সৌদি আরবে আসার সময় ব্যাগ গোছানোর সময় ইহরাম, প্রয়োজনীয় কাপড়, গামছাসহ কয়েকটি জিনিষ রাখার পরামর্শ দেয়া হয়েছে হজ নির্দেশিকায়।

সেগুলো হলো সাবান, পেস্ট, ব্রাশ, মিসওয়াক, নেইলকাটার, সুই-সুতা, কাগজ কলম, চিরুনি, খাবার বাসন, গ্লাস ইত্যাদি। কেননা এগুলো হোটেল থেকে সরবরাহ নাও করা হতে পারে। এক সেট শীতের কাপড় রাখতে হবে, কেননা মদিনায় রাতে ঠান্ডা পড়ে।

চশমা পড়লে অতিরিক্ত এক সেট চশমা রাখা নিরাপদ, চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্রসহ প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র, সাথে সৌদি রিয়েল ও বাংলাদেশী টাকা রাখতে পারেন।

ব্যাগ বা স্যুটকেস তালাবদ্ধ রাখা ভালো। ব্যাগের ওপরে নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর ও পাসপোর্ট নম্বর লিখে রাখতে হবে।

তবে হাতের ব্যাগে বাড়তি কিছু কাপড়, ইহরাম, চশমা, ওষুধপত্র ও প্রসাধনী রাখতে পারেন। কারণ অনেক সময় লাগেজ পেতে দেরি হয়। অনেকে লাগেজ না পেয়ে পুরো হজযাত্রায় ভিষণ ভোগান্তিতে পড়ার কথা জানান।

সূত্র : বিবিসি