Naya Diganta

এবার বোমারু বিমান পেতে পারে ইউক্রেন

এবার বোমারু বিমান পেতে পারে ইউক্রেন

ইউক্রেনের লাগাতার অনুরোধে সাড়া দিয়ে ব্রিটেন ও নেদারল্যান্ডস বোমারু বিমান সরবরাহ করতে এক আন্তর্জাতিক জোট গড়ার ঘোষণা করেছে। ফ্রান্স আগেই পাইলট প্রশিক্ষণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

রাশিয়ার হামলার মোকাবিলা করতে শুরু থেকেই ইউক্রেনকে সামরিক সাহায্য করে আসছে পশ্চিমা বিশ্ব। শীর্ষ নেতারা বার বার সেই সহায়তার অঙ্গীকার করে বলছেন, যতদিন প্রয়োজন তারা ইউক্রেনের পাশেই থাকবেন। অথচ ইউক্রেনের অস্ত্র, গোলাবারুদ ও সামরিক সরঞ্জামের চাহিদা মেটাতে শুরু থেকেই দ্বিধা ও দ্বন্দ্ব কাজ করছে। রাশিয়ার সাথে সংঘাতের ‘লাল রেখা’ অতিক্রম করার ঝুঁকি, ভয়, পরিণাম বিবেচনা করে অনেক দেশই প্রথম পদক্ষেপ নিতে ভয় পেয়েছে। তবে ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন, ব্যাটেল ট্যাংক সরবরাহ নিয়ে সেই দ্বিধা শেষ পর্যন্ত কাটিয়ে দেরিতে হলেও ইউক্রেনকে সেগুলো সরবরাহ করেছে ইউরোপ ও অ্যামেরিকা। বর্তমানে বোমারু বিমান সরবরাহের প্রশ্নে তেমন মনোভাব দেখা যাচ্ছে।

‘সাহসী’ পদক্ষেপের ক্ষেত্রে শুরু থেকেই নেতৃত্ব দিচ্ছে ব্রিটেন। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদোমির জেলেনস্কি ইউরোপের বিভিন্ন দেশ সফর করে বোমারু বিমানের জন্য অনুরোধ করলেও কোনো নেতা ইতিবাচক সাড়া দেননি। কিন্তু শেষ গন্তব্য লন্ডনে তিনি কিছুটা আশার আলো পেয়েছেন। ফ্রান্সের পর ব্রিটেনও ইউক্রেনের পাইলটদের উন্নত বোমারু বিমান চালানোর প্রশিক্ষণের আশ্বাস দিয়েছে। সেই লক্ষ্যে নতুন স্কুল খোলার ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। এবার সরাসরি এমন বিমান সরবরাহের উদ্যোগও শুরু করছে তার সরকার। এর আগে প্রথম দেশ হিসেবে ইউক্রেনকে দূর পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দেবার ঘোষণা করেছে সে দেশ।

ব্রিটেনর প্রধানমন্ত্রী সুনাক এবং নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটে মঙ্গলবার ইউক্রেনকে বোমারু বিমান সরবরাহ করতে এক আন্তর্জাতিক জোট গড়ার অঙ্গীকার করেছেন। সেই জোটের ছত্রছায়ায় পারস্পরিক সমন্বয়ের মাধ্যমে পাইলট প্রশিক্ষণ থেকে শুরু করে এফ-১৬ বোমারু বিমান জোগাড় করার মতো পদক্ষেপের প্রস্তাব দিয়েছেন তারা। উল্লেখ্য, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিও এমন স্পর্শকাতর অনুরোধের ক্ষেত্রে কোনো একটি দেশের উপর চাপ সৃষ্টি না করে ‘ফাইটার জেট কোয়ালিশন’ গড়ার ডাক দিয়ে আসছেন।

বলা বাহুল্য, ব্রিটেন ও নেদারল্যান্ডস সেই ডাকে সাড়া দেয়ায় জেলেনস্কি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। দৈনিক ভিডিও বার্তায় তিনি প্রথমে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট, তারপর নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকারের উল্লেখ করে ‘জোট গড়ার শুভ সূচনা’র জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানান। এতকাল অ্যামেরিকাসহ সব পশ্চিমা দেশ এফ-১৬ বোমারু বিমান সরবরাহের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করার পর ইউক্রেনের প্রশাসন অবশেষে আশার আলো দেখছে।

জার্মানি এখনো ইউক্রেনের ডাকে সাড়া দেয়নি। জেলেনস্কির সাম্প্রতিক বার্লিন সফরের আগে ইউক্রেনের জন্য বিশাল সামরিক প্যাকেজ ঘোষণা করে ওলাফ শলৎসের সরকার প্রশংসা কুড়িয়েছে। ইউক্রেনের জন্য সামরিক সহায়তার ক্ষেত্রে অ্যামেরিকার পরেই জার্মানি দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। জার্মানিকে ‘প্রকৃত বন্ধু’ হিসেবে উল্লেখ করে শলৎসের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন জেলেনস্কি। সূত্র : ডয়চে ভেলে