Naya Diganta

কুরআনের শিক্ষাকে সবার মাঝে পৌঁছে দেয়া ইমামদের দায়িত্ব : আইম্মাহ পরিষদ

বাংলাদেশ আইম্মাহ পরিষদ ঢাকা জেলার উদ্যোগে আজ শুক্রবার সাভারস্থ মাদরাসাতুশ শারীয়াহ মিলনায়তনে পবিত্র মাহে রমজানের তাৎপর্য শীর্ষক আলোচনা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আইম্মাহ্ পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মাওলানা মুহিউদ্দিন রাব্বানী বলেন, কুরআন নাযিলের মাস পবিত্র মাহে রমযানে কুরআনের শিক্ষাকে সকলের মাঝে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা আলেম উলামা ও ইমামদের দায়িত্ব ও কর্তব্য। তাই প্রত্যেক আলেমের উচিৎ, বেশি বেশি কুরআন তেলাওয়াত ও যিকির ইস্তিগফার পাঠ করার জন্য মুসল্লীদেরকে উৎসাহিত করা। নিজেদের মসজিদ এলাকায় দিনের বেলায় হোটেল-রেস্তোরাঁ বন্ধ রাখার ব্যবস্থা নেয়া। সকল প্রকার বেহায়াপনা এবং অশ্লীল প্রদর্শনী বন্ধ রাখার ব্যবস্থা গ্রহণ করা। খোদাদ্রোহী অপশক্তির বিরুদ্ধে তৌহিদী জনতার ঈমান শানিত করা। নিজেদের মুসল্লিদের সম্পদের যাকাত প্রাপ্যদের মাঝে বিতরণ করার ব্যবস্থা নেয়া। ২০ রাকাত তারাবীহের বিরুদ্ধে যাবতীয় প্রোপাগাণ্ডা ও বিভ্রান্তিকর ষড়যন্ত্র থেকে মুসল্লিদের রক্ষা করা। মাহে রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফ করার জন্য মুসল্লীদেরকে উদ্বুদ্ধ করা।

সাভারস্থ কলমা দারুল মাদরাসার প্রিন্সিপাল, বাংলাদেশ আইম্মাহ্ পরিষদের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আশরাফ মাসরূরের সভাপতিত্বে ও মুফতী আদনান মাসউদের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আফসার মাহমুদ। আরো আলোচনা করেন, মুফতী হারুন রাসূলাবাদী, মাওলানা খন্দকার কাউসার হুসাইন , মাওলানা মাসুম বিল্লাহ্, মুফতী সুলতান মাহমুদ, মুফতী মাহবুব গুলজার, মাওলানা জহিরুল ইসলাম, মুফতী সুহাইল আহমাদ, মাওলানা ময়নুল হক, মাওলানা আবরার মাহফুজ, মাওলানা মনিরুজ্জামান, মাওলানা জসিম আহমাদ, মাওলানা আশিকুল্লাহ, মাওলানা আম্মার মানসূর, মুফতী এহসানুল হক প্রমুখ।

মাওলানা মুহিউদ্দিন রাব্বানী বলেন,বলেন, মাহে রমাযান আমাদের মাঝে এসেছে তাকওয়া ও খোদাভীতির আহবান নিয়ে। তাকওয়ার মূল কথা সংযম ও আত্মনিয়ন্ত্রন, আল্লাহর ভয়ে গুনাহ ও পাপাচার এবং গর্হিত ও অশোভন আচরণ থেকে বিরত থাকা। এটি এমন এক বিষয়, যা মানবের পার্থিব শান্তি ও লৌকিক মুক্তির জন্য অপরিহার্য। রমযান মাস মুসলমানদের জন্য নিজেদের পরকালের মুক্তি এবং দুনিয়ার জীবনকে সুন্দরভাবে গুছিয়ে নেওয়ার সূবর্ণ সুযোগ। এ মাস মুসলমানদের জন্য আল্লাহর তরফ থেকে এক বিশেষ রহমত স্বরুপ এবং এর ফজিলত অপরিসীম। সবাইকে ব্যাক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে রমজান মাস থেকে শিক্ষা নিয়ে সংযম, ধৈর্য্যশীল ও সহমর্মি হবার শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। তাহলেই আমরা উভয় জাহানে সফল হতে পারবো।এছাড়া তিনি কারাবন্দী আলেমদের মুক্তির জন্য সরকারের নিকট জোর দাবী জানান। রহমত মাগফিরাত ও নাজাতের মাসে কাদিয়ানী সম্প্রদায়ের ফেৎনা থেকে দেশের সাধারণ মুসলমানদের ঈমান আক্বিদা হেফাজতের জন্য কাদিয়ানিদের রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা দাবী জানান। ইফতারের আগ মূহুর্তে তিনি দেশ-জাতী ও মুসলিম উম্মাহর সমূহ কল্যাণ কামনায় এবং দেশ-বিদেশের যে সমস্ত শীর্ষ মুরুব্বি আলেমেদ্বিন ইন্তেকাল করেছেন তাদের জন্য দু'আ করেন। বিশেষ করে অল্প কয়েকদিনের ব্যবধানে যে সমস্ত মুরুব্বি গত হয়েছেন তাদের জন্য দু'আ করেন। তাদের মাঝে আল্লামা মমতাজুল করিম বাবা হুজুর রহ:, আল্লামা আহমাদ উল্লাহ কাসেমী রহ:, আল্লামা শায়েখ আব্দুল জলিল রহ:, আল্লামা শাব্বির আহমাদ রহ:, আল্লামা মুফতী নূর আহমাদ রহ: বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

সভায় বক্তারা আরো বলেন, রমজান আত্মসংযম, অনুকম্প ও ক্ষমা লাভের মাস। এ মাসে ত্যাগ স্বীকারের শিক্ষার মাধ্যমে আত্মার পরিশুদ্ধি ঘটে ও সর্বশক্তিমান আল্লাহর নৈকট্য লাভের সুযোগ হয়। তাই রমজানের পবিত্রতা রক্ষা করে চলুন, ইনশাআল্লাহ জীবনে বরকত আসবে। রমজানুল মুবারক বান্দার জন্য আল্লাহতায়ালার অনেক বড় নেয়ামত। এই মাসের দিবস-রজনীকে আল্লাহতায়ালা খায়ের ও বরকত দ্বারা পূর্ণ করে রেখেছেন। আল্লাহতায়ালা এ মাসকে তাকওয়া অর্জনের অনুশীলন, ইবাদত-বন্দেগি ও আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের সব আমলের জন্য ভরা বসন্ত বানিয়েছেন। এ মাস শুধু একটি মাসই নয়; বরং গোটা বছরের এটা তাপকেন্দ্র। এ মাস থেকেই মুমিন গোটা বছরের তাকওয়া ও তাহারাতের মূলমন্ত্র সঞ্চয় করে। পুরো বছরের ঈমানি প্রস্তুতি এ মাস থেকেই গ্রহণ করে।