Naya Diganta

অভয়নগরে কার্গোর মালামাল হাতিয়ে নিচ্ছে সিন্ডিকেট

সঙ্ঘবদ্ধ তিন সিন্ডিকেটের মাধ্যমে যশোরের অভয়নগরের শিল্প ও বন্দরনগরী নওয়াপাড়া নদীবন্দরের জাহাজ থেকে হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে মালামাল। কার্গোর এক শ্রেণীর মাস্টার ও সুকানির যোগসাজশে ডিসকাউন্ট চুক্তিতে প্রতি রাতেই ঘটছে চুরির ঘটনা। নৌ-পুলিশের তৎপরতা না থাকায় নির্বিঘেœ ঘটছে এসব চুরি। এখানে গড়ে ওঠা ভারী শিল্প-কারখানা ও ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানগুলো বেশির ভাগই গড়ে উঠেছে ভৈরব নদীর গাঁ ঘেষে। এখানে রয়েছে সার, সিমেন্ট, কয়লা, পাথর, গম, ভুট্টা, ডালসহ বিভিন্ন ধরনের মালামালের ব্যবসা। এসব ব্যবসার কারণে বিভিন্ন সমুদ্রবন্দর থেকে লাইটার জাহাজগুলো মালামাল নিয়ে আসে নওয়াপাড়ায়।
এ দিকে নওয়াপাড়ার চেঙ্গুটিয়া থেকে ফুলতলা পর্যন্ত শতাধিক ঘাট পয়েন্টে মালামাল খালাসের জন্য দীর্ঘদিন অপেক্ষায় থাকতে হয় জাহাজগুলোকে। একেকটি জাহাজকে প্রায় ১০-১২ দিন বা তারও অধিক সময় ধরে অপেক্ষায় থাকতে হয়। এসব কার্গো জাহাজ থেকে কয়েকটি সঙ্ঘবদ্ধ চক্র প্রতি রাতেই অতি অল্প মূলে বিভিন্ন প্রকার মালামাল কিনে নেয়। মালামালগুলোর মধ্যে রয়েছে ডিজেল, মবিল, সার, সিমেন্ট, কয়লা, গম, ভুট্টা এবং ওই জাহাজের মূল্যবান সব লোহা-লক্কড় ও যন্ত্রাংশ। এ কাজে সহযোগিতা করে নিজ নিজ জাহাজের এক শ্রেণীর অসৎ মাস্টার-ড্রাইভার ও সুকানি।


তিনটি গ্রুপে বিভক্ত চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে এ ধরনের অপকর্মে লিপ্ত রয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছে নওয়াপাড়ার একটি গ্রুপ, যার প্রধান জনৈক গরিব উল্লাহ ও তার সহযোগীরা। অপর দুটি চক্র রয়েছে তালতলায়। এ চক্রগুলো নিয়ন্ত্রণ করে আব্দুল হাকিম, রাসেদ ও বাদলসহ আরো অনেকে। চক্র তিনটি সন্ধ্যা নামতেই শুরু করে তাদের কর্মকাণ্ড। ব্যক্তি উদ্যোগে তৈরি নিজস্ব ইঞ্জিন চালিত নৌকা নিয়ে তারা রাতে বিভিন্ন ঘাটে অভিযান চালায়। চেঙ্গুটিয়া থেকে ফুলতলা পর্যন্ত প্রায় ২০০ থেকে ৩০০ জাহাজে তাদের অভিযান চলে প্রতি রাতেই।
চক্রটি কোনো কোনো জাহাজ থেকে ১০০ থেকে এক হাজার লিটার পর্যন্ত ডিজেল অল্পমূল্যে কিনে থাকে। মূলত ডিজেল তেল আর মবিলই তাদের মূল টার্গেট। জাহাজ থেকে ৯০ টাকা লিটার দরে কেনা ডিজেল তারা বাইরে ১০০ থেকে ১০১০ টাকায় বিক্রি করে। পাশাপাশি তারা মবিল কিনে ১০০ টাকা থেকে ১১০ টাকা দরে। আর খুচরা মূল্যে বিক্রি করে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা দরে। অন্যান্য মালামালের ক্ষেত্রে তারা জাহাজে কর্তব্যরত স্টাফদের জিম্মি করে অল্প দামে মালামাল নিয়ে নেয়। চক্রগুলো স্থানীয় হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। থানা পুলিশকে ম্যানেজ করেই তারা এ কাজ করে থাকে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানান।
নওয়াপাড়া নৌ-পুলিশ জানায়, আমরা নি-িদ্র নিরাপত্তার জন্য সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের কাছে কেউ তো অভিযোগও নিয়ে আসেন না।