Naya Diganta

দ্রব্যমূল্য কেন এতো মূল্যবান

দ্রব্যমূল্য কেন এতো মূল্যবান।

আমরা যখন প্রতিদিন কাঁচাবাজারে যাই, তা হোক সকালে কিংবা রাতে, পিলে চমকাবার মতো অবস্থা হয়। আমাদের বলতে আমি বোঝাতে চাইছি, আমার মতো আর্থিক সঙ্গতির মানুষদের কথা। ১০/১৫ বছর আগেও আমি ভাবতাম, আমি বোধহয় এদেশের তথাকথিত মধ্যবিত্তবান মানুষ। এই টার্মটা এখনও চালু আছে ঠিকই, কিন্তু তার কোনো অর্থনৈতিক মাপক বা ব্যারোমিটার নেই বললেই চলে। ফলে আসলেই কারা মধ্যবিত্তের মানুষ আর কারা নিম্নবিত্তের আর কারা উচ্চবিত্তের ধনবান, তা বোঝা কঠিন। উচ্চবিত্তবানদের চেনা যায়। তারা সেই বিত্তের শোআপটা বেশ ভালো করেই করতে শিখেছেন।

এই সত্য ‘কঠিনেরে’ই তো আমরা ভালোবেসেছি।
গত ২৯ মার্চ, ২৩-এ টিভিতে একটি রিপোর্টে শুনলাম ও দেখলাম নিত্যপ্রয়োজনের ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় গরিব মানুষেরা কি কি করছেন। পরের দিনের অধিকাংশ পত্রিকায়ই সেই সংস্থার রিপোর্ট বেরিয়েছে। তারা গ্রাফ করে দেখিয়েছে গরিবেরা কি করে বেঁচে আছে বা বাঁচার সংগ্রাম করছে। তারা তাদের সামর্থ অনুযায়ী খাদ্যপণ্য কিনছেন। আগে যদি হাফ কেজি জিনিস কিনতেন, এখন কিনছেন ২৫০ গ্রাম। মাছ মাংস মাসে একবারও কেনার চিন্তা তারা করেন না। পরিমাণের কথা নাই বা বললাম। এই পরিস্থিতি যে একদিনে বা একমাসে হয়েছে, তা নয়, সরকারের চোখের সামনে, তাদের সকল রকম তৎপরতা সত্ত্বেও কাঁচাবাজারের সবরকম পণ্যের দাম বাড়ছে। সেই পণ্য যদি দেশের হয়, তাও যেমন বাড়ছে, তেমনি আমদানিকৃত হলে তো কথাই নেই। সেক্ষেত্রে ডলারের মূল্যবৃদ্ধি, আমদানির বাড়তি খরচ আর বিশ্ববাজারের দোহাই তো দোকানি থেকে সরকারি দলের আত্মপ্রবঞ্চক রাজনীতিকরা গলার রগ ফুলিয়ে বলেই চলেছেন। তাদের দোকানে যেমন পণ্যের ঘাটতি নেই, তেমনি মূল্যেরও বাড়তির কোনো সীমা নেই। একটা রিপোর্টের তরফে খেজুরের আমদানি দাম আর খোলাবাজারে বিক্রির দামের তুলনা করলেই বোঝা যায় আকাশ আর পাতালের ফারাকটা কতো বড়ো। তিন রকমের খেজুর আমদানি হয়েছে নিম্নমানের এক পণ্য সনাক্তকরণ কোডের অধীনে। তাতে ৪৫ টাকা থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত দাম পড়েছে। ওই দামের গড় করলে তা ৯৪ টাকা হয়। সেই খেজুর বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা থেকে ১হাজার ৮০০টাকায় প্রতিকেজি। যাদের পকেটে টাকা থৈ থৈ করে তারা কিনছেন আনন্দে আর যারা দরদাম করে কিনছেন বাধ্য হয়ে তাদের মুখ শুকনো, দেখতে পেলাম। খেজুর কেনার ঘটনাটি দেখেছি গুলশানের ডিসিসিতে।

আমদানি করা সব রকম পণ্যেরই মূল্যবৃদ্ধির পেছনে যে মুনাফার লোভ তা ওই আকাশ আর পাতালের ফাঁকের মতোই। এরই মাঝখানে আছেন মাননীয় সরকার বাহাদুর এবং তার পারিষদবর্গ, যারা বাজারে গিয়ে পণ্য কেনেন না বলেই মনে হয়। কিনলে, কিভাবে তারা এতো টাকা দিয়ে কেনেন, তা বুঝতে পারি না। আবার এটাও মনে হয়, এতো টাকা তারা পেলেন কোথায়? কিভাবে তারা রোজগার করেন? নাকি বাজারে যে লুটপাটের কাহিনী চালু আছে, যা সত্য না মিথ, সেই পথ ধরেই কি তারা ধনবান?

কোন চাকরিতে এতো টাকা বেতন পাওয়া যায় যেখানে আকাশে ওঠা দামেও পণ্য কিনতে তাদের ভয় পেতে হয় না। মনে হয় তা স্বাভাবিকই আছে। আবার কোনো কোনো নেতা/মন্ত্রী বলেন, দ্রব্যমূল্যের এই চাপ ক্রেতাদের সয়ে যাবে। এই সয়ে যাওয়ার মানে কি? মানুষ যে চিড়েচ্যাপ্টা হয়ে যাচ্ছে, সেটা কি সরকারের চোখে পড়ছে না? নাকি সরকার তার উন্নয়ন স্বপ্নের যে দিগন্ত উন্মুক্ত করেছেন ফ্লাইওভার আর সেতু-টানেল, সড়ক মহাসড়ক নির্মাণের মাধ্যমে, সেটা তো অসত্য নয়? কিন্তু এতে কি অর্থনৈতিক মন্দার ধেয়ে আসা ঢেউকে সামলে নিতে পারবে?

এর আগেও আমরা লিখেছিলাম, যাদের সঞ্চয় আছে তারা তা ভাঙিয়ে খাচ্ছেন। বিশেষ করে জাতীয় সঞ্চয়পত্র ভাঙিয়ে তারা খাদ্য কিনছেন। কারণ অনেক হলেও, প্রধানত চাকরিহারা মানুষেরাই এই পথে যাচ্ছেন। আর যারা আগেই বেকার ছিলেন, গত ১০/১৫ বছর ধরে, তারা তো এমনিতেই পরনির্ভরশীল হয়ে বেঁচে আছেন। আর যাদের জীবন শ্রমের ওপর নির্ভরশীল, মানে খেটে খাওয়া গরিব মানুষ, নুন কিনতে গেলে যাদের পান্তাভাত সাবাড় হয়ে যায়, তাদের কি দশা, সেটা কি আমরা কখনো ভাবি? আমরা তো কোন ছাড়! আমরা তো সমাজের একটি সুবিধাভোগী অংশ, আমাদেরই নাভিশ্বাস ওঠার জোগাড়। আর্থিক সংকট এতোটাই যে, আমরা না পারছি ধার করতে, না পারছি কারো কাছে হাত পাততে। ওএমএসএর ট্রাকের পেছনে লাইন দিয়ে দাঁড়াতে পারছি না। কারণ সেখানে খেটে খাওয়া হতদরিদ্র মানুষের লম্বা লাইন। তাদের সঙ্গে তো আমরা দাঁড়াতে পারছি না। ফলে আমাদের যে সামাজিক পরিচয় ছিলো, যা আমরা নিজেরাই নিজেদের দিয়ে ভেবেছিলাম আমরা মধ্যবিত্ত, তারা এখন হাহাকারের মধ্যে দিনাতিপাত করছি। আমাদের দশা কি হবে, তা আমরা জানি না। তাহলে আমরা কি আমাদেরই খেয়ে ফেলছি? মানুষ তো আর মানুষ খায় না। কিন্তু ব্রিটিশ উপনিবেশ সৃষ্টিকারীরা আফ্রিকাতে এই মিথ্যা গল্প চালু করেছিলো, যাতে তাদেরকে মানুষ হিসেবে নয়, নরখাদক হিংস্র পশু হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিলো। এতে অনেক লাভ? লাভ হচ্ছে, সেই পশুদের শাসন করে শিক্ষা দিয়ে মানুষ করে তোলা। আফ্রিকানরা কালচারালি মানুষ নয়, এটাই প্রমাণ করা। তাতে তাদের ওপর শাসন ও শোষণ দীর্ঘায়িত করা যায়। কেউ তাদের প্রশ্ন করবে না। কেউ তাদের কালচারাল হেজিমনিকে (সাংস্কৃতিকভাবে উন্নত) চ্যালেঞ্জ করবে না। নির্বিঘ্ন হবে শাসন ও শোষণ এবং সম্পদ লুটে নেয়াও হবে সহজ। এই ধারাটা ভারতীয় উপনিবেশেও চালুর চেষ্টা করা হয়েছে এই বলে যে, তোমরা তো অনুন্নত কালচারের মালিক। তোমাদের উন্নত শিক্ষায় শিক্ষিত করে, আমাদের কালচার দিয়ে উন্নত করছি আমরা। তাদের সেই কালচারাল আধিপত্যের শিকার হয়েই তো আমরা আজও স্বসমাজকেই নানাভাবে কচুকাটা করে খাচ্ছি। আমরা যে উন্নত সংস্কৃতির মালিক ছিলাম, সেই জায়গায় ইংরেজ ভাষা ও সাহিত্যের মাধ্যমে তাদের কালচারাল আদিপত্য চাপিয়ে দিয়েছে, যা আজো আমরা সরকারি স্ট্রাকচারে, প্রশাসনিক বিন্যাস ও কর্মধারায় বহন করছি এবং নিজেরা গৌরবান্বিত বোধ করছি ইংরেজি জানি বলে। নিজেরা বাংলা ভাষাটা ঠিক মতো লিখতে ও বলতে পারি না, কিন্তু ইংরেজি ঠোঁটস্থ। এই হলো আধিপত্য।

আমাদের মধ্যবিত্তের আকারই কেবল ধসে যায়নি আজ, আমাদের নিম্নবিত্তের মানুষদের নিঃস্ব করে তাদের বাস্তুচ্যুত করে ফেলছে ওই প্রশনিক আধিপত্যবাদ। সরকার বুঝতেও পারে না যে তারা যে প্রশানিক স্ট্রাকচার দিয়ে শাসন কায়েম রেখেছেন, সেখানে মানুষকে মানুষ হিসেবে বিবেচনা করা হয় না। শাসক ও শাসিতের মধ্যে ফারাক রাখতে তারা নানান কায়দা ফলো করেন। আমরা কাউকেই বাস্তুচ্যুত থাকতে দেবো না’ এই রাজনৈতিক ঘোষণার সঙ্গে ব্রিটিশদের আমরা তোমাদের শিক্ষিত জাতি হিসেবে গড়ে তুলবো’র মিল আছে মনন ও মানসিকতায় ও সাংস্কৃতিক আধিপত্যের। শাসক ও শাসিতের মধ্যে যে ফারাক, তা দেখেই বোঝা যায় ব্যাপারটা। সেই দৃশ্যটি আমরা বাস্তুহীন মানুষদের জন্য লালটিনের ঘর বানিয়ে দেবার রাজনৈতিক কর্মসূচিতে কি দেখতে পাই না? আমরা কি মহানগরের খেটে খাওয়া মানুষদের ওএমএস লাইনে তাদের সারি দীর্ঘ থেকে দীর্ঘ হতে দেখছি না? সামাজিক স্তরের মধ্যে এই যে সোশ্যাল ক্যানিবলিজম (social kanibolism) সামাজিক স্তরের মানুষদের আর্থিক স্তর খেয়ে হজম করে দিচ্ছেন এবং তারা সম্পদের পাহাড় সৃষ্টি করে নিজেদের শৌর্যময় ক্ষমতার শিখরে তুলে নিচ্ছেন, তা কি আমাদের ‘জনগণের সরকার, জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার’! চোখে দেখেন না? সরকারের কি চোখ নেই? সরকারের কি বিচার করার ক্ষমতা নেই? তার কি জনগণের প্রতি কর্তব্যের কথা ভুলে গেছেন। তাদের সঙ্গে লেজুড় হয়ে ঝুলে থাকা ব্যবসায়ীদের সদাহাস্যময় লোভী মুখ দেখলেই দেশের উন্নতির শিখর দেখতে পান তারা?

নিচের পরিসংখ্যানটি একবার দেখেুন। একবার ভাবুন যে ওই জরিপ গবেষণা মিথ্যা নয়। সামান্য ভুল-ত্রæটি থাকতে পারে, কিন্তু সত্য তো বাজারেই বিরাজমান।

সায়েমের (সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং) চিত্রটি এবার দেখা যাক।
খরচের চাপে পড়ে খাদ্যাভ্যাস বদলের এই জরিপ রিপোর্ট-এর সময়কাল ৬ মাসের। ছয় মাস আগে যে পরিবারটি মাংস কিনতো সেই পরিবারটি এখন মাসে একবার বা ছয় মাসে একবার মাংস কেনে বা কেনার সামর্থ রাখে। কেনার সামর্থ হারানোর মূল কারণ কোথায় লুকিয়ে আছে তা সরকারকে খুঁজে বের করতে হবে। গরিব পরিবারগুলো ৬ মাসের মধ্যে মাংস খাওয়া কমিয়েছে ৯৬ শতাংশ। মাছ কম খাচ্ছে ৮৮ শতাংশ গরিব পরিবার। ঋণ করে পরিস্থিতি সামাল দিচ্ছে ৭৪ শতাংশ পরিবার। সঞ্চয় ভেঙে খাচ্ছে ৩৫ শতাংশ পরিবার।

গরিব পরিবারগুলোর আর্থিক সঙ্গতি কেমন হয়েছে তা এই জরিপ থেকে বোঝা যায় বা অনুমান করতে পারি। পুষ্টির কথা বিবেচনা বাদই রাখা হোক, মানুষ যে কংকালসার হয়ে পড়ছে, রাস্তাঘাটে কি আমরা তাদের দেখতে পাচ্ছি না? মসজিদের সামনের রাস্তায় ভিক্ষুকের ভিড়ে বের হতে পারি না আমরা। কেউ ডাক্তার বা হাসপাতালের কাগজপত্র নিয়ে দাঁড়িয়ে সাহায্য ভিক্ষা করছেন। কেউ বা মায়ের চিকিৎসার জন্য সাহায্য চাইছেন। কেউ বা ছিলেন ছোট দোকানি, কেউ রিকসাঅলা, কেউ ঠেলাঅলা, এমন কি কাঁচাবাজারের কর্মীরাও উঠে এসেছে ভিক্ষা করতে। যারা সামর্থবান তারা দিচ্ছেন। যারা পারছেন না, তারা পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছেন। এই দৃশ্যটি সর্বত্রই একই রকম।

‘কেমন আছেন নিম্ন আয়ের মানুষ’ শীর্ষক সায়েমে’র জরিপে উঠে এসেছে এই চিত্র। এই চিত্র দেখে কি আমরা আতঙ্কিত হবো, নাকি এই চিত্রের কারণ অনুসন্ধান করে কি করে তার সমাধান করা যায় সরকার সেই উদ্যোগ নেবে?
এই সত্যটা মানতে হবে যে, দেশে খাদ্যশস্যের উৎপাদন বেড়েছে চাহিদাকে সামনে রেখে। কিন্তু জন্মহার বেশি থাকায় আমাদের এই ছোট দেশের ভূমির পরিমাণ কমছে, উৎপাদনের খেত কমছে আর আমরা তা সামাল দিচ্ছি খাদ্যশস্য ও রবিশস্য আনাজপাতি আমদানি করে। দেশটা এখন প্রায় পুরোপুরিই আমদানিনির্ভর হয়ে পড়েছে। আমরা নিজেরা বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করেছি, তার পরও হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে ভারত থেকে, প্রয়োজন ছাড়াই বিদ্যুৎ আমদানি করছি। সরকার বলছেন, এই বিদ্যুৎ আর পাইপ লাইনে তেল ভারত থেকে কিনে এনে নাকি নতুন যুগের সৃষ্টি হলো।

কোনো রকম আমদানি কি সেই দেশের জন্য সুযোগ? নাকি পরনির্ভরতা? কেন আমাদের মধ্যবিত্তের সম্পদ ধসে গেছে, কেন নিম্নবিত্তের গলা শুকিয়ে উঠেছে ক্ষুধা ও তৃষ্ণায়, কেন তারা নিত্য পুষ্টির খাদ্য কিনতে পারছে না, সেই বিবেচনাটা সব কিছুর আগে করতে হবে। মনে রাখতে হবে, বিত্তহীন বেসাতহীন মানুষের সংখ্যাই বেশি। এদের পিঠ, আর্থিক শক্তি নিঃশেষ হয়ে গেলে বাঁচার জন্য যে কোনো পথ নিতে পারে, যা দেশের সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে নারকীয় করে তুলতে পারে।

সাংবাদিকতার অধিকারকে ডিজিটাল নামক মানবতাবিরোধী ও মানবিক ও সাংবিধানিক অধিকারবিরোধী আইন দিয়ে মতপ্রকাশকে নাজেহাল করা যাবে, কিন্তু শেকড়শুদ্ধ উপড়ে ফেলা যাবে না সত্য উচ্চারণ। ইতিহাস এটাই বলে আমাদের। আজ আমরা প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান ও সাভারের স্টাফ করেসপেন্ডেন্ট শামসুজ্জামানের অধিকার নিয়ে কথা বলতে চাই। কিন্তু ভয়, যা আমাদের অধিকারকেও পিষ্ট করছে, সেই ভয়ের কারণে কোনো কথাই লিখবো না আমরা। বঙ্গবন্ধু এক ভাষণে বলেছিলেন, তোমরা আমাদের দাবায় রাখতে পারবা না- তাঁর এই বাণী- ভাষণের কথা মনে করিয়ে দিতে চাই। অধিকার রুদ্ধ করলে তার প্রতিক্রিয়া শত-সহস্র গুণ বেড়ে যায়। ছড়িয়ে পড়ে জন থেকে কোটি কোটি জনে। তখন পেটের ক্ষুধার কথাই প্রধান দাবি হয়ে ওঠে। শিখিয়ে দিয়েই হোক, বা সরকারকে বেকায়দার ফেলার জন্যই হোক, এটা তো সত্য, দেশে পর্যাপ্ত খাদ্যশস্য থাকার পরও দরিদ্র মানুষ খাদ্য কিনতে পারছে না। বিনে পয়সায় তো আর খাদ্য চাইছে না কেউ। চাইছে ন্যায্যমূল্যে। ধনবানের চোখে যে মূল্য ন্যায্য গরিবের চোখে তা অন্যায্য। খাদ্য পাওয়ার ও খাদ্য চাওয়ার অধিকার সবারই আছে। সেই অধিকার সংরক্ষণের দায়িত্ব সরকারের। সংবিধানই দিয়েছে নাগরিককে খাদ্য-বস্ত্র-বাসস্থান চিকিৎসা ও শিক্ষার অধিকার দিয়েছে। সেই অধিকার যদি সরকার না মানেন, সেই অধিকার বলে কেউ যদি কোনো দাবি তোলে, তাহলে আইন দিয়ে তাকে হেনস্থা করা যাবে কিন্তু সত্য লুকিয়ে রাখা যাবে না।

নিশ্চয়ই সাংবাদিকগণ সোস্যাল কানিবলিজমে বা নিজেদেরই পায়ে কুড়াল মারার প্রতি ঝুঁকবেন না।