Naya Diganta
দৃষ্টিপাত

ভোগ্যপণ্যের আকাশচুম্বী দাম

দৃষ্টিপাত

সিয়াম সাধনার মাস। এই মাসে গোটা দুনিয়ায় ভোগ্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে থাকে। বিপরীত শুধু বাংলাদেশে মানে আমাদের দেশে। পণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েই চলছে, জনজীবনে নেমে এসেছে নাভিশ্বাস!
কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অভিনব কায়দায় সিন্ডিকেটের মাধ্যমে রাত-দিন পণ্যের দাম বাড়িয়ে শুধু পকেটই কাটছে না, বরং রাষ্ট্র ও জনগণের সাথে ডাকাতি করছে।
সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ। এ যেন অকূল পাথার অবস্থা যাকে বলে, বুক ফাটে তো, মুখ ফাটে না! মানুষের ভেতরে চলছে হাহাকার আর বোবাকান্নার রোল বাতাসে উড়ছে।
সব কিছুর দামই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে, দৈনন্দিন বাজার খরচায় জীবন যেন হাঁসফাঁস। সবজির বাজারে যেন আগুন লাগছে!
অথচ রোজা শুরু হওয়ার আগেও তরিতরকারির দাম স্বাভাবিক ছিল, মুদি বাজার করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে মানুষ। জীবন বাঁচাতে মধ্যবিত্ত থেকে নি¤œ বিত্ত মানুষেরা বাজারের ফর্দে কাটছাঁট করছে, কমে আসছে সদাইয়ের ফিরিস্তি!
ব্যয় বাড়লেও বাড়েনি মানুষের আয়। এক প্রকার জমানো টাকা ভেঙে বাড়তি দামেই নিত্যপণ্য সামগ্রী কিনছে মানুষ। দেশে সার্বিক দিকে অবকাঠামোগত অভাবনীয় উন্নয়ন করেছে সরকার, উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন। সংবিধান মতে, রাষ্ট্রের মালিক জনগণ; জনগণের টাকায় রাষ্ট্রের উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু উন্নয়ন আর জনগণের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করা, জনগণের দাবি পূরণ করা এক বিষয় নয়। অথচ সরকারের দায়িত্বশীলরা উন্নয়নের দোহাই দিয়ে আমজনতাকে খুশি করতে চাইলেও মানুষ তা মানছে না। কারণ মানুষের জীবনযাত্রার মান বা জীবনযাপনে স্বস্তি নেই। রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অ্যারিস্টটলের মতে, ‘জনগণের সুখ দুঃখে রাষ্ট্র পাশে থাকবে।’
এই যে লাগামহীনভাবে মানুষের জীবনযাত্রার মান বাড়ছে, এতে ব্যয় সঙ্কোচনে রাষ্ট্র কী ভূমিকা রাখতে পারছে? যদি জনকল্যাণমুখী সরকার না হয় তাহলে শুধু ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়ায় দায়ী নয়, সব ব্যর্থতার দায়ভার রাষ্ট্রের ওপর বর্তায়। এ নিয়ে বরং একেক সময় একেক দায়িত্বরত মন্ত্রী বিব্রতকর বক্তব্য দিয়ে রাষ্ট্রের মালিকের সঙ্গে তিরস্কার করছে না তো?
লেখক: সাংবাদিক
ইমেইল : hussaain82@gmail.com