Naya Diganta
রানা প্লাজার সামনে সমাবেশ

২৫ হাজার টাকা মজুরি নির্ধারণের দাবি গার্মেন্ট শ্রমিকদের

রানা প্লাজার সামনে সমাবেশ

অবিলম্বে মজুরি বোর্ড গঠন ও ন্যূনতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা করাসহ ৭ দফা দাবিতে গতকাল রোববার স্বাধীনতা দিবসে রানা প্লাজার সামনে তৃতীয় দিনের মতো আলোকচিত্র প্রদর্শনী সমাপ্ত ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি রানা প্লাজার সামনে বেলা ১১টায় এ কর্মসূচি পালন করেন।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, ২০১৩ সালে রানা প্লাজা ধসে হাজারো শ্রমিক প্রাণ হারান। অথচ ১০ বছরেও মালিকসহ দোষীদের শাস্তি হয়নি। ক্ষতিপুরণের আইনের উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন হয়নি, আহত অনেকেই এখনো শারীরিক ও মানসিক ক্ষতের চাপ বয়ে বেড়াচ্ছেন। রানা প্লাজার ঘটনার পর মালিকপক্ষ, সরকার ও বায়াররা শ্রমিকদের নিরাপত্তা, মজুরি ও ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার নিয়ে অনেক আওয়াজ তুলেছে। বাস্তবে পোশাকখাত ও মালিকদের উন্নয়ন হলেও শ্রমিকের জীবন মানের উন্নতি হয়নি। মাত্র ৮ হাজার টাকায় সস্তা মজুর হিসেবে পোশাক শ্রমিকরা নিদারুন সময় পার করছে বাজারের ঊর্ধ্বগতি ও মুদ্রাস্ফীতির কারণে। তারা আরো বলেন, রানা প্লাজার এই ঐতিহাসিক স্থান বর্তমানে সুরক্ষিত নেই। বরং এটি উন্মুক্ত পাবলিক টয়লেট, ময়লা ফেলার জায়গা এবং আসক্তদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে রানা প্লাজার স্থান সংরক্ষণ এবং স্থায়ী স্মৃতিস্থান তৈরি করার আহ্বান জানান।
তারা বলেন, এই দুঃসহ স্মৃতি আমরা হারিয়ে যেতে দিতে চাই না। আমরা এই ভয়াবহ স্মৃতি, রানা প্লাজায় হতাহতর শারীরিক-মানসিক ক্ষত পুরোটাই পোশাক শ্রমিকসহ দেশবাসীকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই। অবিলম্বে রানা প্লাজার দোষীদের শাস্তি দিতে হবে, ক্ষতিপূরণের আইন বদল করতে হবে।
সাত দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- সোহেল রানাসহ সব দোষীদের শাস্তি দিতে হবে। পোশাক কারখানার সকল শ্রমিকের জন্য অবিলম্বে মজুরি বোর্ড গঠন ও ন্যূনতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা করতে হবে। মজুরি বৃদ্ধির আগ পর্যন্ত পোশাক শ্রমিকদের ৬০% মহার্ঘ ভাতা দিতে হবে। ২৪ এপ্রিল শোক ও নিরাপত্তা দিবস হিসেবে সব কারখানা বন্ধ ঘোষণা করতে হবে। ভিক্ষা নয়, ক্ষতিপুরণের আইন বদল করে একজীবনের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। আহত শ্রমিকদের দীর্ঘমেয়াদি শারীরিক ও মানসিক ক্ষতর দায়, চিকিৎসাভার ও প্রয়োজনীয় পুনর্বাসনের দায়িত্ব মালিক-সরকার ও বায়ারকে নিতে হবে। সব শ্রমিকদের জন্য মালিক-সরকার ও বায়ারের উদ্যোগে জরুরি তহবিল গঠন করতে হবে। রানা প্লাজা এলাকা যথাযথ সংরক্ষণ ও স্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করতে হবে।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার, সাধারণ স¤পাদক বাবুল হোসেন, রানা প্লাজার শ্রমিক রূপালী আক্তার, নিহত পরিবারের সদস্য জমিলা আক্তার, নিহত সেকান্দর ও সেন্টুর মা রুবি আক্তার প্রমুখ।