Naya Diganta

গোপালগঞ্জে শিশুকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন

শিশু ইয়ামিনকে এভাবে বেঁধে নির্যাতন করা হয় : নয়া দিগন্ত

সামান্য ডাব চুরির অভিযোগে গোপালগঞ্জে ঘটে গেছে এক মধ্যযুগীয় বর্বরতা। এক শিশুর ওপর চালানো হয়েছে ভয়াবহ নির্যাতন। কাশিয়ানী উপজেলায় ইয়ামিন শেখ নামে ১০ বছরের এক শিশুকে দু’হাত পিছনে বেঁধে নির্মম নির্যাতন করা হয়েছে। নির্যাতনের সময় শিশুটির হাতবাঁধা একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে গোপালগঞ্জ তথা সারা দেশে ধিক্কার পড়ে যায়। সাধারণ মানুষের মুখে মুখে একটা কথা ঘুরে ফিরে উচ্চারিত হয়-‘শিশুর সাথে এ কেমন নির্মমতা!’ কেউ কেউ বলেন, ‘খোদ প্রধানমন্ত্রীর নিজের জেলায় যদি এ ধরনের ঘটনা তাহলে সারা দেশের অবস্থাটা কি!’ মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার রাতইল ইউনিয়নের শ্যামবাজারে এ ঘটনা ঘটে।
ইয়ামিন পাশর্^বর্তী পাথরঘাটা গ্রামের তোতা শেখের ছেলে। সে ধানকোড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র। নির্যাতনের শিকার শিশুর মা পক্ষাঘাতগ্রস্ত রোগী সেলিনা বেগম জানান, ইয়ামিন সকালে বাড়ি থেকে স্কুলের উদ্দেশ্যে বের হয়। দুপুরে টিফিনের সময় ইয়ামিনকে শ্যামবাজার গ্রামের হেমায়েত শেখের ছোট ভাই ইউসুফ শেখ ধানকোড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠ থেকে গেঞ্জির কলার ধরে টেনে ভ্যানে তুলে তার বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে ডাব চুরির অভিযোগ তুলে হেমায়েত শেখ ইয়ামিনের দু’হাত রশি দিয়ে বেঁধে মারধর করে। পরে তাকে বাজারে এনে খুঁটির সাথে দু’হাত বেঁধে রাখে। একপর্যায়ে হেমায়েত শেখ লোকের মাধ্যমে ইয়ামিনের বাবার কাছে খবর পাঠায় তার ছেলেকে বাজারে বেঁধে রাখা হয়েছে। ছাড়িয়ে না আনলে থানায় পাঠিয়ে দেয়া হবে। বাবা হেমায়েত শেখ তার ছেলের নির্যাতনের সঠিক বিচার দাবি করেন।
রাতইল ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য রবিউল ইসলাম ডাব চুরির অভিযোগ হাত বেঁধে রাখার কথা স্বীকার করে বলেন, শিশু ইয়ামিনকে হেমায়েত শেখের জিম্মা থেকে আমি উদ্ধার তার পরিবারের কাছে দিয়ে এসেছি।
এ বিষয়ে হেমায়েত শেখ বলেন, গাছের দু’টি ডাব চুরি করায় আমার ভাই ইউসুফ শেখ ওকে ধরে বাড়িতে নিয়ে এসেছিল। আমি ওকে অভিভাবকের কাছে বুঝিয়ে দেয়ার জন্য এবং শিক্ষা দেয়ার জন্য মাছ বাজারে এনে দড়ি দিয়ে হাত বেঁধে রেখেছিলাম। পরে রবিউল মেম্বার এসে তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে গেছেন।
কাশিয়ানী থানার ওসি মোহাম্মদ ফিরোজ আলম বলেন, এ ধরনের কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।