রমজানে সুলভে দুধ ডিম ও গোশত বিক্রি হবে ভ্রাম্যমাণ গাড়িতে

আজ শুক্রবার থেকে পুরো রমজান মাসজুড়ে রাজধানীতে সুলভ মূল্যে দুধ, ডিম ও গোশত ভ্রাম্যমাণ গাড়িতে বিক্রি করা হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর ফার্মগেটে প্রাণিসম্পদ অধিদফতর চত্বরে এ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
মন্ত্রী বলেন, মানুষ যেন তার সাধ্যের মধ্যে দুধ, ডিম ও গোশত কিনতে পারে, সে জন্য সরকার ভ্রাম্যমাণ বিক্রি কার্যক্রম চালু করছে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সর্বপ্রথম করোনায় ভ্রাম্যমাণ বিক্রির ব্যবস্থা চালু করে খামারি ও ভোক্তাদের উপকার করেছে, অর্থনীতি সচল রেখেছে, যারা বিপণনের সাথে বিভিন্নভাবে যুক্ত তাদের সহায়তা করেছে। সে ধারাবাহিকতায় রমজানে ভ্রাম্যমাণ বিক্রির পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় বিপণন কার্যক্রমের মন্ত্রণালয় নয়। এই মন্ত্রণালয় উৎপাদন প্রক্রিয়ায় সহায়তাকারী। দাফতরিক ম্যান্ডেট না হলেও আমরা মানুষের উপকারার্থে এ কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় ঢাকার ২০টি স্থানে ভ্রাম্যমাণ বিক্রির ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে।
মন্ত্রী আরো বলেন, এ বছর প্রাথমিকভাবে গরুর গোশত প্রতি কেজি ৬৪০ টাকা, খাসির গোশত প্রতি কেজি ৯৪০ টাকা, ড্রেসড ব্রয়লার প্রতি কেজি ৩৪০ টাকা, দুধ প্রতি লিটার ৮০ টাকা এবং ডিম প্রতিটি ১০ টাকা মূল্যে বিক্রি করা হবে। তবে আমরা যে দাম ধার্য করেছি এটা নির্ধারিত নয়। প্রাথমিকভাবে উৎপাদকদের সাথে বসে ডিমের দাম নির্ধারণে আমরা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি রমজানে পর্যায়ক্রমে আশা করি এটা আরো কমে আসবে। একইভাবে আমরা আশা করছি গোশতের দামও আরো কমে আসবে। অন্যান্য সামগ্রীর দামও পর্যায়ক্রমে কমে আসবে বলে আমরা আশা করছি। প্রতি দিনের অবস্থা অনুযায়ী এটি পরিবর্তিত হবে। তবে কোনোভাবেই প্রাথমিকভাবে নির্ধারিত মূল্যের উপরে যাবে না। আমরা চেষ্টা করব এ মূল্যের নিচে রেখে কিভাবে মানুষকে সাহায্য করা যায়।

উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, উৎপাদক ও বিপণনকারীদের মাঝখানে একটি মধ্যস্বত্বভোগী মহল কাজ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর, প্রশাসন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এ বিষয়গুলো খতিয়ে দেখছে। উৎপাদনের সঙ্গে যুক্তিসঙ্গত লাভের বাইরে যারা অতিরিক্ত মূল্য নিচ্ছে, অতিরিক্ত মুনাফার জন্য মানুষকে কষ্ট দিচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট, ভোক্তা অধিকার কর্তৃপক্ষসহ সরকারের অন্যান্য প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করেছে। আশা করি মানুষের সহনশীল মূল্যে এসব পণ্য বিপণনে আমরা সহযোগিতা করতে পারব।
সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, যারা অতিরিক্ত লাভ করতে চায় তারা অতিরিক্ত মূল্য নেয়। দুধ, ডিম ও গোশতের ভ্রাম্যমাণ বিপণনে সরকার কোনো লাভ করছে না, কোনো ভর্তুকি দিচ্ছে না। কোনো ভর্তুকি না দিয়ে রমজানে যে দামে সরকার বিক্রি করতে পারছে, সে দামে বিক্রি করার মতো ব্যবসায়ীদেরও যৌক্তিক অবস্থা রয়েছে।
প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের মহাপরিচালক ডা: মো: এমদাদুল হক তালুকদারের সভাপতিত্বে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য প্রদান করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ টি এম মোস্তফা কামাল, বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো: ইমরান হোসেন এবং ওয়ার্ল্ড পোলট্রি সায়েন্স-বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব হাসান। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন প্রাণিসম্পদ অধিদফতর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক মো: আব্দুর রহিম।