Naya Diganta
রক্তঝড়া মার্চ

বায়তুল মোকাররমে শপথ পড়ালেন ওসমানী

রক্তঝড়া মার্চ

আলোচনার নামে পশ্চিম পাকিস্তান কর্তৃপক্ষের প্রহসন আর সময় ক্ষেপণের অজুহাত সবার কাছে স্পষ্ট হয়ে ওঠে। ফলে ক্ষোভের মাত্রা ক্রমেই বাড়তে থাকে। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের আশা পরিত্যাগ করে আন্দোলনে যোগ দিতে থাকে সর্বস্তরের জনতা। লড়াইয়ের কোনো বিকল্প নেই এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়ে প্রত্যেকে যার যার মতো করে প্রস্তুতি নিতে শুরু করে। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের সামনে সমবেত হন সাবেক সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর অবসর নেয়া কর্মকর্তা ও সৈন্যরা। তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রশ্নে ঐকমত্য প্রকাশ করেন। এখানে তারা স্বাধীনতার শপথ নেন। তাদের শপথ পাঠ করান কর্নেল এম এ জি ওসমানী।
১৯৭১ সালের এই দিনে দেশের সংবাদপত্রগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে। ‘বাংলার স্বাধিকার’ শিরোনামে প্রকাশিত এই ক্রোড়পত্রে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শুভেচ্ছাবাণী প্রকাশিত হয়। এতে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সাত কোটি মানুষের সার্বিক মুক্তির জন্য আমাদের এই সংগ্রাম। অধিকার বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এই সংগ্রাম চলবে। বুলেট বেয়নেট দিয়ে বাংলাদেশের মানুষকে আর স্তব্ধ করা যাবে না। কেননা জনতা আজ ঐক্যবদ্ধ। ’
প্রেসিডেন্ট ভবনে বঙ্গবন্ধু এবং পাকিস্তান পিপলস পার্টি-পিপিপি নেতা জুলফিকার আলী ভুট্টোর সাথে জেনারেল ইয়াহিয়া খানের এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক চলে এক ঘণ্টা ১৫ মিনিট ধরে। বৈঠক শেষে বঙ্গবন্ধু তার বাসভবনের সামনে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আলোচনার যদি অগ্রগতি না হতো তাহলে কেন আলাপ আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি?’
প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ২৫ মার্চ অনুষ্ঠেয় জাতীয় পরিষদের বৈঠক অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করেন। এ বিষয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘আমি তো আগেই বলেছি আমাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা জাতীয় পরিষদে যোগ দিতে পারি না।’