Naya Diganta

বাজিতপুরে ইটভাটার মাটি পড়ে সড়ক এখন মরণ ফাঁদ!

ইটভাটার যানবাহন থেকে মাটি পড়ে সড়ক পিচ্ছিল থাকায় প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা : নয়া দিগন্ত

কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর থেকে সরারচর সিঅ্যান্ডবি রোডে ইটভাটার মাটি টানা ট্রাক্টর থেকে মাটি পড়ে আঞ্চলিক মহাসড়কটির বিভিন্ন স্থান এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। গত তিন-চার দিন গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির কারণে পিচঢালা সিঅ্যাবি রোড কাদামাটিতে একাকার হয়ে পড়েছে। ফলে এই সড়কে অহরহ যানবাহন দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে।
সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলা সদরের নিতারকান্দি শ্মশানখলার কাছ থেকে তেঘরিয়া এলাকা পর্যন্ত সড়কটি পিচ ঢালাই হলেও দেখে বোঝার উপায় নেই রাস্তাটি পাকা না কাঁচা। পিচের ওপর মাটি পড়ায় সামান্য বৃষ্টিতে রাস্তাটি পিচ্ছিল হয়ে যায়। গাড়ি চলাচল তো দূরের কথা হেঁটে চলতে কষ্ট হচ্ছে পথচারীদের। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছে মোটরসাইকেল ও ছোট গাড়ির চালকরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এ উপজেলায় ১২টি ইটভাটা রয়েছে। এর মধ্যে সাতটি অবৈধ, পাঁচটি মেয়াদোত্তীর্ণ। আটটি ইটভাটা রয়েছে আঞ্চলিক মহাসড়কের ওপরে। এসব ইটভাটা সারা বছর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষি জমি থেকে মাটি কেনে। ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৩ অনুযায়ী, ফসলি জমির মাটি কেটেই ইট উৎপাদন করা যাবে না। কৃষি জমিসহ পরিবেশের ক্ষতি হয় এমন এলাকায় ইটভাটা স্থাপন করা যাবে না।
টাঙ্গাইলের উজালা ট্রান্সúোর্টের চালক শাহীন বলেন, আমি কোহিনূর কেমিক্যালসের মালামাল নিয়ে রাতে সরারচর হয়ে বাজিতপুর বাজারে যাওয়ার সময়ে ইটভাটার মাটি রাস্তায় ফেলে রাখার কারণে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছি।
মোটরসাইকেল চালক ডা: নুরুজ্জামান বলেন, ইটভাটায় মাটি বহনকারী ট্রাকগুলো থেকে মাটি পড়ে শুকনো মৌসুমে ধুলা আর বৃষ্টি হলে পাকা রাস্তা কাঁদা পিচ্ছিল রাস্তায় পরিণত হয়। কয়েক দিন আগে রাস্তা পিচ্ছিল হওয়ার কারণে অনেকে দুর্ঘটনার শিকার হন। এতে গাড়ির অনেক ক্ষতি হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন জানান, প্রশাসনকে ম্যানেজ করে বছরের পর বছর ধরে অবৈধ, মেয়াদোত্তীর্ণ ভাটা মালিকরা পাকা রাস্তা দিয়ে ট্রাক্টর-ট্রলি করে মাটি এনে পবিবেশ নষ্ট করছেন। এসব ভাটার মালিকরা প্রভাবশালী হওয়ায় স্থানীয়রা তাদের কিছু বলার সাহস পান না। আবার কেউ কিছু বললেই মালিকদের রোষানলে পড়তে হয়।
বাজিতপুর থানার ওসি শফিকুল ইসলাম জানান, তিনি নিজেও একাধিকবার গাড়ি নিয়ে কাঁদায় পড়েছেন। তখন তার গাড়ির ড্রাইভার গাড়ির গতি কমিয়ে দুর্ঘটনা থেকে বেঁচেছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা যে কোনো মুহূর্তে ইটভাটা ও ট্রাক্টর-ট্রলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেন বলে তিনি জানান।