Naya Diganta
রাজধানীতে পেশাজীবীদের মানববন্ধন

‘সরকারকে হঠাতে না পারলে দেশের সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হবে’

রাজধানীতে পেশাজীবীদের মানববন্ধন
রাজধানীতে পেশাজীবীদের মানববন্ধন

নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি, দমন-পীড়ন বন্ধ, অবৈধ সংসদ বাতিল, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ এবং বিশেষ ক্ষমতা আইন-১৯৭৪-সহ মৌলিক মানবাধিকার হরণকারী সব কালাকানুন বাতিল, গুমের শিকার সব নাগরিককে উদ্ধার এবং বিচারবহির্ভূত হত্যা ও রাষ্ট্রীয় নির্যাতনের প্রতিটি ঘটনার দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা করে যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর, উপাসনালয় ভাঙচুর এবং সম্পত্তি দখলের জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ রাজবন্দীদের মুক্তির দাবিতে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ আজ শনিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত রাজধানীর নটর ডেম কলেজের সামনে মানববন্ধন করেছে। ১০ দফা দাবিতে বিএনপির মানববন্ধন কর্মসূচির প্রতি সমর্থন জানিয়ে পেশাজীবীরা এ মানববন্ধনের আয়োজন করে।

পেশাজীবী নেতৃবৃন্দের মধ্যে এ সময় বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব, সাংবাদিক কাদের গনি চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সহসভাপতি প্রফেসর ড. লুৎফর রহমান, ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ড্যাব সভাপতি প্রফেসর ডা. হারুন আল রশিদ, এগ্রিকালচারিস্ট এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-অ্যাব সভাপতি কৃষিবিদ রাশিদুল হাসান হারুন, ড্যাবের মহাসচিব ডা. আব্দুস সালাম, সাংস্কৃতিক জোটের মহাসচিব রফিকুল ইসলাম, প্রফেসর ডা.সাহিদুর রহমান,প্রফেসর ডা. মোস্তাক রহিম স্বপন, ডা. জহিরুল ইসলাম শাকিল, ডা. মেহেদি হাসান, ডা. আবু নাসের, ডা. তালুকদার তরিকুল ইসলাম আয়াত,ডা. তোফাজ্জল হোসেন বকুল, ডা. এমরান, ডা. ওবায়দুল কবির, প্রফেসর ড. নজরুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার একেএম জহিরুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার আসাদুজ্জামান চুন্নু, ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ হানিফ , ইঞ্জিনিয়ার আইনুল কবির, ইঞ্জিনিয়ার গোলাম রহমান রাজিব, ইঞ্জিনিয়ার নাহিদুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার রাকিবুল ইসলাম রকি, সাংবাদিক সাখাওয়াত ইবনে মঈন চৌধুরী, এস এম রিয়েল রোমান, জেটেব সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার ফখরুল আলম, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ -ডিএ্যাব সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার সাইফুজ্জামান সান্টু, ইঞ্জিনিয়ার সাখাওয়াত,ইঞ্জিনিয়ার এবিএম রুহুল আমিন আকন্দ, মেডিকেল টেকনোলজি এসোসিয়েশন-অ্যামট্যাবের হাফিজুর রহমান, বিপ্লব উজ্জামান, কৃষিবিদ নুরুন্নবী ভূইয়া শ্যামল, কৃষিবিদ ড.শফিকুল ইসলাম শফিক, কৃষিবিদ ড. আমিনুজ্জামান রিপন, কৃষিবিদ ড.আশাবুল হক আশা, কৃষিবিদ ডা. আহমেদুল কবির,কৃষিবিদ সিরাজুন্নবী মামুন,কৃষিবিদ ওসমান গনি তুহিন ,কৃষিবিদ মো: আব্দুর রাকীব,কৃষিবিদ আসাদুজ্জামান আসাদ,কৃষিবিদ শফিকুর রহমান নোবেল, কৃষিবিদ নিয়াজ মোর্শেদ,কৃষিবিদ আহমেদুল কবির তাপস প্রমুখ অংশ নেন।

বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহবায়ক প্রফেসর ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন গাজীপুরে মানববন্ধনে নেতৃত্ব দেন।

ঢাকার মানববন্ধনে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গনি চৌধুরী বলেন, বর্তমান সরকারকে হঠাতে না পারলে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হয়ে পড়বে।

তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে পেশাজীবীরা সবচেয়ে বেশি নিগৃহীত হয়েছেন। ভিন্নমতের হাজার হাজার পেশাজীবীকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। দলীয় বিবেচনায় যোগ্য অফিসারদের পদোন্নতি আটকিয়ে রাখা হয়েছে। বহু পেশাজীবীকে গুম ও খুন করে হয়েছে। শুধু এ সরকারের আমলে ৫৪ জন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে। মামলা দিয়ে পেশাজীবীদের ঘর ছাড়া, বাড়ি ছাড়া করা হয়েছে। ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনামের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহসহ ৮৫টি মামলা দেয়া হয়েছে। প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দেয়া হয়েছে। সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র যেভাবে হামলে পড়েছে এটা সভ্য সমাজে কল্পনাও করা যায় না। আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান ,যায়যায়দিন সম্পাদক শফিক রেহমানসহ অসংখ্য সাংবাদিককে দেশান্তর হতে হয়েছে। আমরা বহু অপেক্ষা করেছি। এ সরকার দিন দিন হিংস্র থেকে হিংস্রতর হচ্ছে। আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। তাই আর বসে থাকলে চলবে না। পেশাজীবীদের ঐক্যবদ্ধভাবে বাঁচা-মরার লড়াইয়ে শামিল হতে হবে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত প্রতিটি পেশাজীবী-বুদ্ধিজীবীদের ইস্পাত-দৃঢ় ঐক্য নিয়ে রাজপথে থাকতে হবে।

প্রফেসর ডা. হারুন আল রশিদ বলেন, সরকার ক্ষমতায় গিয়ে জনগণের সকল অধিকার ছিনিয়ে নিয়েছে। জনগণ আজ ভোট দিতে পারে না, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, অর্থনীতি আজ বিপর্যস্ত।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানবাধিকার নিশ্চিত, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন আদায়ের দাবিতে জনগণ ঐক্যবদ্ধ। পেশাজীবিদেরও জনতার কাতারে গিয়ে শামিল হতে হবে। পেশাজীবী জনতা একতা গড়ে তুলে এই সরকারকে বিদায় করতে হবে।

প্রফেসর ড. লুৎফর রহমান বলেন, দেশে মানুষের জান, মাল, ইজ্জতের নিরাপত্তা নেই। স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি নেই। দেশ মনুষ্য বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। একদিকে মানুষ না খেয়ে মরছে অন্য দিকে সরকারের লোকেরা দুর্নীতি ও লুটের টাকা দিয়ে বিদেশে সেকেন্ড হোম কিনছে। এমনি পরিস্থিতিতে দেশের মানুষের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে।

কৃষিবিদ রাশিদুল হাসান হারুন বলেন, এ আন্দোলন গোটা জাতির জন্য অস্তিত্বের লড়াই।