Naya Diganta

জাতীয় পার্টির ‘অধীনতামূলক মিত্রতা’

জাতীয় পার্টির ‘অধীনতামূলক মিত্রতা’।

বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বর্তমান সংসদের বিরোধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদের অতিসাম্প্রতিক সময়ে এমন সব মন্তব্য করছেন যা নাগরিক সমাজের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। স্পষ্টতই মনে হচ্ছে, তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের ‘গৃহপালিত’ বিরোধী দল থেকে জনতার কাতারে শামিল হওয়ার চেষ্টা করছেন। গণমাধ্যমে প্রকাশিত তার মন্তব্যগুলো উদ্ধৃত করলে এর তাৎপরতা বোঝা সহজ হবে।

এ মাসের প্রথম দিকে রংপুরে দলীয় কার্যালয়ে মহানগর ও জেলা পার্টি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের যৌথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জি এম কাদের অভিযোগ করেন, ‘অ্যালায়েন্স মানে বন্ধুত্ব। রাজনীতিতে জাতীয় পার্টি বন্ধুত্ব করবে কিন্তু কারো দাসত্ব করবে না। আওয়ামী লীগ বন্ধুত্বের নামে এখন পর্যন্ত যা করেছে সেটি হলো- আমাদের দাস বানানোর চেষ্টা করছে। তারা আমাদের ক্রীতদাসের মতো ব্যবহার করেছে। তারা আমাদের শুধু হুকুম করেছে। কোনো সুযোগ-সুবিধা দেয়নি। আমাদের কোনো বরাদ্দ দেয়নি। কোনো সম্মান দেয়নি। আমরা সম্মানের জন্য রাজনীতি করি। আমরা আর এমন কারো সাথে বন্ধুত্ব করব না, এমন কোনো রাজনীতি করব না। যেখানে আমরা সম্মানের সাথে তাদের চোখে রেখে কথা বলতে পারব না। আমাদের মতামত তাদের শুনতে হবে। তাহলে আমরা তাদের মতামত শুনব। সেরকম না হলে আমরা কারো সাথে রাজনীতিতে বন্ধুত্ব করব না। তিনি আরো বলেন, সরকার ও দলীয় সিন্ডিকেট থাকায় রমজানে দাম বেড়ে যায় দ্বিগুণ। এর সব দায় সরকারের। (নয়া দিগন্ত, ৫ মার্চ ২০২৩) জি এম কাদেরের এ মন্তব্যে জনগণের সুখ-দুঃখ ও ক্ষোভ-অসন্তোষের প্রতিধ্বনি রয়েছে। এটি জাতীয় পার্টির আত্মোপলব্ধি হিসেবেও বিবেচনা করা যায়। শুধু তাই নয়, গত কয়েক সপ্তাহে তার অন্যান্য মন্তব্য যদি বিশ্লেষণ করি তাও অনুরূপ প্রতিক্রিয়ার প্রতিফলন ঘটাবে।

একটি প্রধান দৈনিকে প্রকাশিত তার বক্তৃতা-বিবৃতি ও সংবাদভাষ্য এরকম : দেশের মানুষের আয় বাড়ছে না। কিন্তু প্রতিদিনই দ্রব্যমূল্য বেড়েই চলছে। গরুর গোশতের কেজি প্রায় ৮০০ টাকা হয়েছে। এখন ২৫০ গ্রাম গোশত বিক্রি হচ্ছে, কিন্তু ক্রেতা নেই। সাধারণ মানুষ সংসার চালাতে পারছেন না। গ্রামের মানুষ বাজার করতে পারছেন না। খুব অল্প মানুষ ভালো আছে। অবস্থা এমন হয়েছে যে, আমদানিকারকরা চিনির কেজি ৫০০ টাকা ঘোষণা করলে সেই দামেই চিনি কিনতে হবে। সরকার সিন্ডিকেট ভাঙতে পারছে না। হজ পালনে হাজীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নেয়ার অভিযোগ তোলেন জাপা চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, দুর্নীতির কারণেই হজযাত্রীদের জনপ্রতি প্রায় সাত লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। অথচ পাশের দেশগুলোতে প্রায় অর্ধেক খরচে মানুষ হজ পালন করতে পারছে। আগে হজের নিবন্ধনের জন্য মানুষ তদবির করত, এখন হাজার হাজার মানুষ নিবন্ধন বাতিল করছে। জি এম কাদের বলেন, ‘আমরা চাই, নিবন্ধনকারী এক লাখ ২৭ হাজার জনই যেন হজে যেতে পারে। প্রয়োজনে হজের জন্য ভর্তুকি দিতে হবে, হজ ফান্ড গঠন করতে হবে। দেশের মানুষ হজের জন্য ফান্ডে টাকা দিতে প্রস্তুত আছে। দেশের মানুষ সাধ্যমতো সহায়তা দিতে রাজি আছে। দেশের মানুষ যেন অর্ধেক খরচে হজে যেতে পারে সে উদ্যোগ সরকারকেই নিতে হবে। তিনি আরো বলেন, কারো স্বার্থরক্ষার জন্য আমরা রাজনীতি করি না। আমাদের রাজনীতি জনগণের স্বার্থরক্ষার জন্য। আমরা জনগণের সব অধিকার রক্ষা করতেই রাজনীতি করছি। আমরা কোনো দলের বি-টিম নই। আমরা গণমানুষের টিম হতে রাজনীতি করছি। (প্রথম আলো, ৬ মার্চ ২০২৩)

জি এম কাদের বলেছেন, এক শ্রেণীর মানুষ টাকা রাখার জায়গা পাচ্ছে না। বিদেশে পাঠাচ্ছে। বিদেশ থেকে আমাদের বলছে, আপনাদের দেশে নাকি টাকা রাখার জায়গা নেই, তাই বিদেশে পাচার করে রাখছে। তিনি বলেন, দেশে ভয়ের রাজনীতি শুরু করা হয়েছে। মানুষ কথা বলতে ভয় পায়। চলতে-ফিরতে ও কাজ করতে ভয় পায়। কোনোখানেই স্বাধীনতা নেই। এমন একটি অবস্থা সৃষ্টি করা হয়েছে, যারা ক্ষমতায় আছেন, তারাই ক্ষমতায় থাকবেন। এ জন্য বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানকে কুক্ষিগত করে দলীয়করণ করা হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের লোকজন (সরকারি) দলের পক্ষে কাজ করছে। দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, রাজনীতির ব্যাপারে আমরা কারো দিকে তাকিয়ে থাকব না। আমরা আমাদের রাজনীতি করব। সাংগঠনিকভাবে দলকে গুছিয়ে নিয়ে আমাদের মতো করে দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আমাদের দলকে নতুন করে শক্তি অর্জন করতে হবে। দেশের চিকিৎসাসেবা নিয়ে হতাশা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসাসেবা নেই। শুধু বড় বড় বিল্ডিং হচ্ছে। কিন্তু চিকিৎসাসেবা ঠিকমতো হচ্ছে না। রংপুরের মতো বিভাগীয় শহরে ভালো ডাক্তার নেই। চিকিৎসার জন্য ঢাকায় যেতে হয়। একজন কৃষক, শ্রমিকসহ সাধারণ মানুষ কিভাবে ঢাকায় যাবে চিকিৎসা করাতে? দেশের বায়ুদূষণ নিয়ে জি এম কাদের বলেন, বায়ুদূষণে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন, এ জন্য ফুসফুসে রোগের হার বাড়ছে। এ রকম ঝুঁকিতে আমরা বসবাস করছি। আমারই একটু পরপর কাশি হচ্ছে। ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলাম, কোনো কিছু ধরা পড়েনি। ডাক্তার বলছে, কোনো ভাইরাস হতে পারে। (প্রথম আলো, ৪ মার্চ ২০২৩)

জি এম কাদের বলেছেন, জাতীয় পার্টি ৩০০ আসনে প্রার্থী দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে। সব জায়গায় জাতীয় পার্টির লোক আছে। এই বাস্তবতায় আমরা যোগ্য প্রার্থী ঠিক করার জন্য চেষ্টা করছি। এখন আমাদের রাজনীতি ও সংগঠন, দু’টিকে সুসংগঠিতভাবে গড়ে তোলার কাজ করছি, যেন আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সার্বিকভাবে জাতীয় পার্টি এককভাবে নির্বাচন করতে সমর্থ হয়, সেই লক্ষ্য সামনে রেখে কাজ করছি। জি এম কাদের বলেন, আগামী নির্বাচনের আগে কতটুকু সমর্থ হলাম আমাদের সংগঠন গোছাতে, আমাদের রাজনীতির ওপর জনগণের আস্থা অর্জনে আমরা কতটুকু সমর্থ হলাম, সেগুলো খতিয়ে দেখে আমাদের সার্বিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। (প্রথম আলো, ৩ মার্চ ২০২৩)

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশে বর্তমানে নির্বাচনগুলো সম্পর্কে সাধারণ মানুষের আস্থা নেই বললেই চলে। আমি যতটুকু দেখেছি, নির্বাচনে সঠিকভাবে জনগণের প্রত্যাশা বা জনমতের প্রতিফলন হচ্ছে না। এ কারণে আজকাল ভোট নিয়ে সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে অনেকটা অনীহা দেখা যাচ্ছে। রংপুরে জাতীয় পার্টির প্রয়াত চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের কবর জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। দেশের রাজনীতি বিরাজনীতিকীকরণ হয়ে গেছে এ মন্তব্য করে জি এম কাদের বলেন, এটি আমাদের দেশের জন্য কখনোই মঙ্গলজনক নয়। জনগণ নির্বাচনবিমুখ হয়েছে। বলতে গেলে রাজনীতিবিমুখ হয়েছে। স্বাধীনতাযুদ্ধের মূল চেতনা দেশের মালিক হবে জনগণ। এটি আমার মনে হয় বাস্তবায়ন হচ্ছে না। আমরা চাই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। ভারতের সংবিধানের উদাহরণ দিয়ে জি এম কাদের বলেন, ভারতে সংবিধান মেনে সুন্দর নির্বাচন হচ্ছে। কিন্তু আমাদের দেশে সংবিধান মেনে সুষ্ঠু নির্বাচন হচ্ছে না। সরকার সব কিছু কুক্ষিগত করে রেখেছে। সরকার যখন পক্ষ হয়, তখন নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হয় না। সরকারের পক্ষপাতিত্ব দেখা যায়। নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকারি কর্মকর্তারা, এমনকি নির্বাচনের সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোকজন সরাসরি সরকারদলীয় মানুষ হিসেবে কাজ করে। (প্রথম আলো, ২ মার্চ ২০২৩)

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সংসদের বিরোধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদের বলেছেন, বাকস্বাধীনতা মানুষের জন্মগত অধিকার। মানুষের কথা বলার অধিকার হরণ করতে নানা নিবর্তনমূলক আইন করা হয়েছে। কালো আইনের বেড়াজালে গণমাধ্যমের কণ্ঠ রোধ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, প্রজাতন্ত্রের মানে হচ্ছে দেশের সাধারণ মানুষ দেশের মালিক। তারা দেশ পরিচালনার জন্য প্রতিনিধি নির্বাচন করবে। সাধারণ মানুষের ইচ্ছা অনুযায়ী তাদের প্রতিনিধিত্বকারী সরকার দেশ পরিচালনা করবে। জনগণের ইচ্ছা অনুযায়ী সরকার দেশ পরিচালনায় ব্যর্থ হলে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে প্রতিনিধি পরিবর্তন করবে সাধারণ মানুষ। এটিই প্রজাতন্ত্র বা প্রজাদের তন্ত্র। সে ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের ইচ্ছা ও অনিচ্ছার খোঁজখবর রাখাটা সরকারের জন্য অত্যন্ত জরুরি। (প্রথম আলো, ১ মার্চ ২০২৩)

জি এম কাদেরের বক্তব্যের বেশির ভাগই হচ্ছে সরকারবিরোধী ও সংবেদনশীল। অতিসাম্প্রতিক এসব বক্তব্যের একটি প্রাক-পটভূমি আছে। সন্দেহ নেই, দেশের একটি বড় দল হিসেবে জাতীয় পার্টি ইতোমধ্যেই তার অবস্থান প্রমাণ করেছে। তবে এই প্রমাণের সাথে একটি নেতিবাচক সমীকরণ আছে। আর সেটি হলো- অতীতে ইচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায় বা বাধ্যবাধকতায় আওয়ামী লীগ সরকারের সহযোগী হয়েছে। জি এম কাদের যখন শক্তভাবে জাতীয় পার্টিকে প্রকৃত বিরোধী দল হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য অগ্রণী ভূমিকা নিয়ে এগোচ্ছিলেন তখন সরকারের সন্দেহের চোখে পড়েন তিনি। সরকার ‘ডিভাইড অ্যান্ড রুল’ প্রয়োগ করে মাত্র তিন খণ্ড করেছে জাতীয় পার্টিকে। দলের সুবিধাবাদী নেতৃত্বের ধারক রওশন এরশাদকে ব্যাংকক থেকে চিকিৎসা অসমাপ্ত রেখেই তাকে দেশে আনে সরকার। তারপর বিভক্তি ও কোর্টের নিষেধাজ্ঞার কথা সবার জানা। বিস্মিত হতে হয়, আদালত থেকেও জি এম কাদেরকে সভাপতির দায়িত্ব পালনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। আপস নাটকের পর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়। এখন জি এম কাদের একটি গণমুখী ভ‚মিকা পালনে চেষ্টা করছেন।

তবে জি এম কাদেরের সে পথ কুসুমাস্তীর্ণ নয়। অতীতে সরকারি ও বিরোধী দলের যৌথ ভ‚মিকায় যে অভিনবত্ব তারা দেখিয়েছেন, সে ধরনের লোক এখনো সরব। ঘরের শত্রু বিভীষণ আছে। আরো আছে সরকারের সাথে আপস করার ঘাপটি মেরে থাকা বড় অংশ। অনেকেই মনে করেন, আগামী নির্বাচনে তারা যদি মানুষের পক্ষে না দাঁড়াতে পারেন তবে তাদের অস্তিত্ব হুমকির সম্মুখীন হবে। একদিকে তারা প্রকৃত বিরোধী দল হিসেবে ভ‚মিকা রাখতে চাইছে, অপরদিকে আগামী নির্বাচনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বা নির্বাচনকালীন সরকারের প্রতি সমর্থন জানাচ্ছে না। তারা আগাম ৩০০ আসনে প্রার্থী দেয়ার কথা বলে প্রকারান্তরে গণদাবির বিপরীতটি করছে। জনগণের সাথে তাদের অল্প বেশি যোগাযোগ আছে। তারা কি জনগণের নাড়ির খবর রাখে না?

দেশের বেশির ভাগ মানুষ পরিবর্তন চায়। পরিবর্তনের লক্ষ্যে যে জাতীয় ঐক্যের সৃষ্টি হয়েছে তাতে শামিল হওয়া জাতীয় পার্টির কর্তব্য। এ ক্ষেত্রে বিরোধী রাজনৈতিক দল বিশেষত বিএনপির সক্রিয় ভূমিকা থাকতে হবে। অতীতকে ভুলে গিয়ে উজ্জ্বল ঐক্যবদ্ধ ভবিষ্যৎ নির্মাণ করতে হবে। আস্থা ও বিশ্বাসের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। সরকার থেকে নিষ্ক্রিয় করতে হবে জাতীয় পার্টিকে। এমনিতেই বিএনপি নির্বাচন-পরবর্তী যে জাতীয় সরকারের কথা বলেছে তারা তাদের অবস্থানগত কারণেই সরকারের অংশ হতে পারবে। জাতীয় পার্টির ক্ষমতাকামী অংশ এর মাধ্যমে সন্তুষ্ট হতে পারবে। রাজনৈতিক অভিজ্ঞ মহল মনে করে, জাতীয় পার্টি জাতির ভাঙা-গড়ার একটি নিয়ামক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই সময়ে যৌথ আন্দোলনের যে ধারা সৃষ্টি হয়েছে তাতে জাতীয় পার্টিকে শামিল করতে পারলে তাদের সিংহাসন টলে উঠবে। সুতরাং লোভ-লালসা, ভয়-ভীতি ও অত্যাচার-অনাচারকে অগ্রাহ্য করে জাতীয় পার্টি জনগণের দল হয়ে উঠুক এটিই দেশবাসীর কামনা।

লেখক : অধ্যাপক, সরকার ও রাজনীতি বিভাগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
Mal55ju@yahoo.com