Naya Diganta

ভূমিকম্পের উদ্ধারকাজে কুকুরের পরিবর্তে রোবট

ভূমিকম্পের উদ্ধারকাজে কুকুরের পরিবর্তে রোবট।

তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভূমিকম্পের ধ্বংসস্তূপ থেকে জীবিত কাউকে বের করা যেন অলৌকিক ঘটনা। এক্ষেত্রে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুরের সহায়তা নেয়া হচ্ছে। তবে ভবিষ্যতে উদ্ধারকাজে রোবট ব্যবহার করা হতে পারে।

শক্তিশালী ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত দেশ দুটিতে এখনো যারা বেঁচে আছেন, তাদের উদ্ধারের জন্য দিনরাত কাজ করছে উদ্ধারকারীরা। তবে জীবিতদের সবাইকে উদ্ধারের সম্ভাবনা দিনে দিনে কমছে।

বিভিন্নভাবে ধ্বংসস্তূপে আটকে পড়া জীবিত ব্যক্তিদের উদ্ধারের চেষ্টা করা হচ্ছে। যেখানে জীবিত মানুষ পাওয়ার সম্ভাবনা, উদ্ধারকারীরা সেখানে সরাসরি তাদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছে। চিৎকার করে অবস্থান জানানোর পাশাপাশি মোবাইল ফোন থেকে পরিবারের সদস্যদের বার্তা দেয়ারও অনুরোধ করছে উদ্ধারকারীরা। তবে এ ধরনের উদ্ধার তৎপরতায় সাধারণত আধুনিক যন্ত্রপাতির উপর নির্ভর করতে হয়। নতুন নতুন অনেক সরঞ্জাম যুক্ত হচ্ছে উদ্ধার কাজে।

মঙ্গলবার ইউরোপিয় ইউনিয়ন (ইইউ) এক প্রকল্পের আওতায় ধ্বংসস্তূপ থেকে মানুষ উদ্ধারে রোবট ও ড্রোন ব্যবহারের কথা জানিয়েছে। অনুসন্ধান অভিযানে রোবোটিক সরঞ্জাম ও উন্নত সেন্সর সমন্বিত ইনফ্রারেড এবং থার্মাল ক্যামেরার মাধ্যমে ধ্বংসস্তূপের মাঝে কার্বন ডাই অক্সাইড ও মানুষের প্রোটিন বাতাসে পরীক্ষা করা হবে। ফলে জীবিত কেউ থাকলে তা জানা সম্ভব হবে। এরপর উদ্ধারকারীরা লাউডস্পিকার এবং মাইক্রোফোনের সাহায্যে সম্ভাব্য বেঁচে থাকা ব্যক্তিদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করবে। এ ক্ষেত্রে জীবিত ব্যক্তির অবস্থান নির্ণয়ে ড্রোনের নেয়া থ্রিডি চিত্র কাজে আসবে।

কম্পিউটার বিজ্ঞানী ও রাইনল্যান্ড-পালাটিনেট টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি অব কাইসারস্লাউটার্ন-লান্ডাউয়ের রোবোটিক সিস্টেম চেয়ারের প্রধান কার্স্টেন বার্নস জানান, জীবিতদের অনুসন্ধান উদ্ধারকারী দলের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক।

বার্নস রোবট ভূমিকম্পে উদ্ধারের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ। ২০১৬ সালে তার দল ইইউর এক প্রকল্পের সাথে জড়িত ছিল।

তার মতে, বৃহৎ আকারের রোবট আটকে পড়া মানুষদের ত্রান পৌঁছে দেয়া ছাড়াও ভেঙে পড়া ভবনের বড় অংশ সরিয়ে ফেলতে সক্ষম। ধসে পড়া ভবনের যেখানে ক্ষতিগ্রস্ত গ্যাসপাইপ থেকে বিস্ফোরণের ঝুঁকি আছে, রোবটগুলো সেখানে ঢুকেও কাজ করতে পারে।

দুটি প্রকল্পের আওতায় কিছু রোবটের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। এর ফলে ভবিষ্যতে ভূমিকম্পের উদ্ধারকাজে রোবট ব্যবহারের সম্ভাবনা রয়েছে।

তবে সত্যিকার ভূমিকম্পের উদ্ধারে রোবট এখনো ব্যবহৃত হয়নি। এছাড়াও ভূমিকম্পের ধ্বংসস্তূপে ব্যবহার করতে হলে নতুন করে রোবট তৈরি করতে হবে, যা অনেক ব্যয়বহুল। এ কারণে সিরিয়া ও তুরস্কের উদ্ধার তৎপরতায় এগুলো ব্যবহার করার কোনো সম্ভাবনা নেই। তাই আপাতত উদ্ধারকারী কুকুরের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে।

সূত্র : ডয়চে ভেলে