Naya Diganta

অতীতে দেশে বড় ভূমিকম্পে যে পরিবর্তন ঘটেছে

বাংলাদেশে মাঝে মধ্যেই ভূমিকম্প হচ্ছে। এসব ভূমিকম্প স্বল্পমাত্রার হলেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে যেকোনো সময় সংঘটিত বড় ভূমিকম্পে বিপুলসংখ্যক প্রাণহানি হতে পারে। কারণ নিকট অতীতে বাংলাদেশের সীমানার সামান্য দূরেই বড় ভূমিকম্প সংঘটিত হওয়ায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ভূপৃষ্ঠের ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে। তখন জনসংখ্যা কম থাকায় প্রাণহানি খুব বেশি ঘটেনি। কিন্তু বর্তমানে যেকোনো বড় ভূমিকম্পে বাংলাদেশে মুহূর্তের মধ্যেই কয়েক হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটতে পারে ভবন চাপা পড়ে কিংবা আগুনে পুড়ে।

বাংলাদেশ অবস্থিত ভারতীয়, ইউরেশীয় এবং মিয়ানমার- এই তিন টেকটনিক প্লেটের মাঝখানে। এই প্লেটগুলোর সংঘর্ষের কারণে বাংলাদেশে মাঝে মধ্যেই ভূমিকম্প হচ্ছে। ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতীয় এবং ইউরেশীয় প্লেট দুটো হিমালয়ের পাদদেশে আটকা পড়ে রয়েছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই দুই প্লেটের মধ্যে সংঘর্ষ বাধতে পারে যেকোনো সময়। এ ছাড়া বাংলাদেশের উত্তর ও পূর্ব সীমান্তে রয়েছে কয়েকটি ভূ-চ্যুতি বা ফল্ট। এজন্য বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিলেট ও সংলগ্ন এলাকা ভূমিকম্পপ্রবণ। এ ছাড়া ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের অঞ্চলগুলোতেও ভূমিকম্প হতে পারে। এ ভূমিকম্পগুলোর একটা বৈশিষ্ট্য সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। কারণ মোটামুটি প্রতি এক শ’ বছর পরপর এই অঞ্চলে বড় ধরনের ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে এবং ভবিষ্যতেও এখানে আবারো বড় ভূমিকম্প হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। নিকট অতীতে সিলেট ও এর আশপাশ অঞ্চলে বেশ বড় ধরনের ভূমিকম্প সংঘটিত হওয়ার ইতিহাস রয়েছে। ১৭৭২ সালে বাংলাদেশে ৭.৮ মাত্রার একটা ভূমিকম্প হয়েছিল। এর প্রভাবে নদী এবং বদ্ধ জলাশয়ে ঢেউ সৃষ্টি হয়েছিল। সে সময় বুড়িগঙ্গায় নৌকাডুবিতে প্রায় এক শ’ মানুষ মারা গিয়েছিল। ১৭৬২ সালে ৭.৬ মাত্রার একটি ভূমিকম্প চট্টগ্রাম উপকূলকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল যদিও এর উৎপত্তিস্থল কোথায় ছিল তা জানা যায়নি।

এ ছাড়া গত ১৫০ বছরে বাংলাদেশে সাতটা বড় ভূমিকম্প আঘাত হানে। এদের দুটোর উৎপত্তিস্থল ছিল বাংলাদেশের বর্তমান সীমানার মধ্যে। এই দুটোর একটি আঘাত হানে মানিকগঞ্জে ১৮৮৫ সালে। এটা ইতিহাসে ‘দ্য বেঙ্গল আর্থকোয়েক’ নামে পরিচিত। ওই ভূমিকম্পটি ছিল রিখটার স্কেলের ৭-এর বেশি। ওই ভূমিকম্পে বগুড়া থেকে সিরাজগঞ্জ এবং ময়মনসিংহ, জামালপুর ও শেরপুর অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়।