Naya Diganta

মোল্লাকান্দিতে আ’লীগের ২ পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ১০

মোল্লাকান্দিতে আ’লীগের ২ পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ১০।

মুন্সীগঞ্জ সদরের চরাঞ্চল মোল্লাকান্দিতে আওয়ামী লীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষে আহত হয়েছে অন্তত ১০ জন। সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলিবর্ষণ হয়েছে।

মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এ সংঘর্ষ হয়।

জানা গেছে, মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের মুন্সীকান্দি, ঢালীকান্দি, নোয়াদ্দা ও লক্ষ্মীদিবি গ্রামে ওই ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান রিপন পাটোয়ারী ও সাবেক চেয়ারম্যান মহসিনা হক কল্পনার সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। বর্তমান চেয়ারম্যান রিপন পাটোয়ারী মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক। অপরদিকে সাবেক চেয়ারম্যান মহসিনা হক কল্পনা একই কমিটির (বহিষ্কৃত) মহিলাবিষয়ক সম্পাদক।

আহতদের মধ্যে ফারুক হোসেনকে (২০) ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং পরাণ মোল্লা (১২) ও সুমন মোল্লাকে (১৮) ঢাকা চক্ষু হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তারা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

এছাড়া আহত রাসেল (২৮), পারভেজ (২৭), শরীফ (২৮), নীরব (২৪) ও সোহেলকে (২৫) স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়।

মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মহসিনা হক কল্পনা জানান, সকালে ঢালীকান্দি গ্রামে তার এক সমর্থককে মারধর করে প্রতিপক্ষ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রিপন পাটোয়ীরর সমর্থকরা। এ ঘটনার জেরে দুপুরে ওই গ্রামে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পরে অপর গ্রামের লোকেরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ঘটনার জন্য তিনি বর্তমানে চেয়ারম্যানের সমর্থকদের দায়ী করেন।

মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান রিপন পাটোয়ারী সংঘর্ষের জন্য সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের সমর্থকদের দোষারোপ করেছেন। তিনি জানান, ঢালীকান্দি গ্রামে তার এক সমর্থককে মারধর করলে সংঘর্ষ বেধে যায়।

ইউনিয়ন পরিষদের ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের সদস্য পলি আক্তার মোবাইল ফোনে সংবাদিকদের বলেন, ‘এলাকায় অস্ত্র নিয়ে উভয়পক্ষই মারামারিতে জড়িয়েছে। আমার ছোটভাইকেও ছাড় দেয়নি তারা। প্রায় ১০ জন আহত হয়েছে।

কাদের হাতে অস্ত্র নিয়ে নামতে দেখেছেন এমন প্রশ্নে জবাবে পলি আক্তার বলেন, ‘আমি জানি কারা গুলি করেছেন। সকলকেই আমি চিনি।’

সাবেক চেয়ারম্যান মহসিনা হক কল্পনা বলেন, ‘১২ বছরের মনু মোল্লা বন্দুক নিয়ে আমাদের লোকদের ওপর হামলা করে।’ এ বিষয়ে পুলিশকে দায়ী করে তিনি বলেন, ‘পুলিশের সামনেই তিন-চার শ’ লোক আমাদের লোকদের হামলা করে।’

মহসিনা হক কল্পনা আরো বলেন, ‘পুলিশ সঠিক কোনো ভূমিকা না নেয়ায় মাসের পর মাস আমাদের লোক মার খাচ্ছে।’

বর্তমান চেয়ারম্যান রিপন পাটোয়ারির সাথে আলাপ কালে তিনিও থানা পুলিশের উপর দোষারোপ করে বলেন, ‘পুলিশের কারণেই একের পর এক আমাদের ইউনিয়নের মারামারি লেগে আছে।’

মারামারি মূলত কোন গ্রামে হয়েছে এর উত্তরে রিপন পাটোয়ারী বলেন, পুরো মোল্লাকান্দি ইউনিয়নেই ছড়িয়ে পড়েছে এই সংঘর্ষ।

মুন্সীগঞ্জ সদর সার্কেল থানার খাইরুল ইসলাম (পিপিএম-সেবা) বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থলে ছিলাম। পাঁচজন পুলিশের পক্ষে এত লোক সামাল দেয়া কঠিন। তবে এই বিষয় এলাকার সকলের সহায়তা প্রয়োজন। নিজ থেকে কেউ এলাকার শান্তি না চাইলে এই ধরনের সন্ত্রাসী কাজ বন্ধ করা সম্ভব নয়।’

কেউ আটক আছে কি না বা মামলা হয়েছে কি না জানতে চাইলে সদর সার্কেল থানার খাইরুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ দিতে কেউ আসেনি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।