Naya Diganta

মাঝে মাঝেই ‘ভয়ঙ্কর’ দুঃস্বপ্ন দেখেন সালমান রুশদি

সালমান রুশদি

বক্তব্য দেয়ার জন্য প্রস্তুতি নেয়ার সময় ছুরিকাঘাতে একটি চোখ অন্ধ হয়ে যাওয়ার কয়েক মাস পর প্রথমবারের মতো সাক্ষাৎকার দিয়েছেন বিতর্কিত লেখক সালমান রুশদি। তিনি ডান চোখ হারিয়েও লেখালেখি করতে চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তবে মাঝে মাঝেই ‘ভয়ঙ্কর’ দুঃস্বপ্ন দেখেন।

হামলার পর তিনি প্রথম সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তার এখনো কৃতজ্ঞতা প্রকাশের অনুভূতি রয়েছে।

তিনি সোমবার প্রকাশিত একটি সাক্ষাৎকারে ‘দি নিউ ইয়র্কার’র ডেভিড রেমনিককে বলেন, ‘আপনি জানেন, আমি আরো ভালো ছিলাম। কিন্তু যা ঘটেছে তা বিবেচনায় আমি এতটা খারাপ নেই।’

রুশদি তার শারীরিক অবস্থার বিষয়ে বলেন, ‘মূলত, বড় ইনজুরিগুলো সেরে গেছে। আমি আমার বুড়ো আঙুলে ও তর্জনীতে এবং তালুর নিচের অর্ধেক অনুভব করছি। আমি হাতের অনেক থেরাপি নিয়েছি এবং আমাকে বলা হয়েছে যে আমি খুব ভালো করছি।’

ব্যক্তিগতভাবে এবং ম্যানহাটনে তার এজেন্টের অফিসে জুমের মাধ্যমে রুশদির সাথে কথা বলে রেমনিক লিখেছেন, বুকার পুরস্কার বিজয়ী এই লেখক ৪০ পাউন্ডের (১৮ কিলোগ্রাম) বেশি ওজন হারিয়েছেন। এবং বেশিরভাগ পড়াই একটি আইপ্যাডের মাধ্যমে পড়েন, যাতে তিনি আলো এবং অক্ষরের আকার সামঞ্জস্য করতে পারেন।

রেমনিক লিখেছেন, ‘তার মুখের ডানদিকে টিস্যুতে দাগ আছে। তিনি বরাবরের মতোই সাবলীলভাবে কথা বলেন, কিন্তু তার নিচের ঠোঁট একদিকে ঝুলে পড়ে। তার বাম হাতের কিছু রগ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’

বিতর্কিত উপন্যাস ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’র জন্য ১৯৮৯ সালে রুশদির মৃত্যুদণ্ডের ফতোয়া জারি করেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। এরপর ৭৫ বছর বয়সী রুশদি বছরের পর বছর আত্মগোপনে ছিলেন। কিন্তু তিনি অনেক আগে থেকেই ন্যূনতম নিরাপত্তা নিয়ে অনেকটাই অবাধে চলাফেরা করেছিলেন। তেমন কোনো ঝুঁকি অনুভব না করায় গত আগস্টে পশ্চিম নিউইয়র্কের একটি অলাভজনক শিক্ষা ও পুনর্বাসন কেন্দ্র- চৌতাকুয়া ইনস্টিটিউশনে উপস্থিত হয়েছিলেন।

রুশদি যখন মঞ্চে ছিলেন তখন কালো পোশাক পরা এক যুবক তাকে ছুরিকাঘাত করে। তবে অভিযুক্ত আততায়ী হাদি মাতার হামলা ও খুনের চেষ্টার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। নিউ ইয়র্কারকে দেয়া সাক্ষাৎকারে রুশদি মাতারকে ‘মূর্খ’ হিসেবে উল্লেখ করেন। তবে তিনি কোনো ক্ষোভ প্রকাশ করেননি।

তিনি বলেন, ‘আমি এই কয়েক বছর ধরে নিন্দা ও তিক্ততা এড়াতে অনেক চেষ্টা করেছি। আমি শুধু মনে করি এটি একটি ভালো চেহারা নয়। এই পুরো জিনিসটির সাথে আমি যেভাবে মোকাবেলা করেছি তার মধ্যে একটি হলো সামনের দিকে তাকানো এবং পিছনে না যাওয়া। গতকাল যা ঘটেছে তার চেয়ে আগামীকাল কী ঘটবে তা আরো গুরুত্বপূর্ণ।’

রুশদির নতুন উপন্যাস ‘ভিক্টরি সিটি’ প্রকাশের প্রাক্কালে এই সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ হলো। যা তিনি হামলার শিকারের এক মাস আগে শেষ করেছিলেন।

সূত্র : এপি/ইউএনবি