Naya Diganta

রানী অ্যান্জেল

বলছি রানী অ্যান্জেলের কথা। এটি অনুপম সৌন্দর্যের অধিকারী সামুদ্রিক মাছ। সমুদ্রের শৈলশ্রেণীতে বসবাসকারী সুন্দর মাছদের মধ্যে এটি অন্যতম। এদের মাথায় বৃত্তাকার নীল দাগের মধ্যে কালো ফোঁটা ফোঁটা দাগ রয়েছে, যা দেখতে অনেকটা রানীর মুকুটের মতো। এ বৈশিষ্ট্যের কারণেই এরা রাজকীয় নাম ‘রানী অ্যান্জেল’ অর্জন করেছে।
রানী অ্যান্জেলের দেহের দৈর্ঘ্য সর্বোচ্চ ১৮ ইঞ্চি পর্যন্ত হয়। ওজন এক দশমিক ছয় কেজি। পরিণত রানী অ্যান্জেলের গায়ের রঙ নীল অথবা নীল-সবুজ হয়। আঁইশের ওপর গোলাকার হলদে দাগ রয়েছে। বক্ষ ও উদরীয় পাখনাও হলদে। এদের ঠোঁট, পৃষ্ঠ ও পুচ্ছ পাখনার প্রান্তভাগ গাঢ় নীল। এরা এদের ঊর্ধ্ব ও নিম্ন পাখনা দিয়ে সোজা পেছনের দিকে চলতে পারে।
এরা ভীতু প্রকৃতির মাছ। এদের একাকী অথবা জোড়ায় জোড়ায় দেখা যায়। ক্যারিবিয়ান ও পশ্চিম আটলান্টিক সাগরে এদের পাওয়া যায়।
রানী অ্যান্জেল প্রধানত স্পঞ্জ ও শৈবালজাতীয় খাবার খায়। এ ছাড়াও এরা সি ফ্যান, নরম প্রবাল ও জেলি ফিশ থেকে খুঁটে খুঁটে খাবার খায়। অপরিণত রানী অ্যান্জেলের খাবার সংগ্রহের ধরন বেশ মজার। এরা সামুদ্রিক ঘাসের মধ্যে পরিচ্ছন্নতা স্টেশন স্থাপন করে। এ স্টেশনে বড় বড় মাছ আসে এদের ত্বক জীবাণুমুক্ত করতে। অপরিণত রানী অ্যান্জেল এ সময় এসব মাছের দেহ থেকে খুঁটে খুঁটে খাবার খায়। ফলে এসব মাছের ত্বক জীবাণুমুক্ত হয়।
রানী অ্যান্জেল মাছের নিকটতম প্রজাতি নীল অ্যান্জেল। এরা পরস্পর মিলিত হয়ে সংকর প্রজাতির জন্ম দেয়, যা অ্যান্জেল মাছের ক্ষেত্রে একটি বিরল ঘটনা। স্ত্রী রানী অ্যান্জেল প্রজনন ঋতুতে প্রতি সন্ধ্যায় ২৫ থেকে ৭৫ হাজার করে সর্বমোট ১০ মিলিয়ন ডিম ছাড়ে। ১৫ থেকে ২০ ঘণ্টা পরে ডিম ফুটে লার্ভা বের হয়।