Naya Diganta
সিন্ডিকেটকে দায়ী করছেন খামারিরা

ডিম-মুরগি সাধারণের নাগালে থাকছে না

সিন্ডিকেটকে দায়ী করছেন খামারিরা


দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন বৃদ্ধির ফলে আমিষের চাহিদা মেটাতে স্বল্প আয়ের মানুষের প্রধান উৎস পোলট্রি মুরগি। সহজলভ্য এই পণ্যটিও এখন আর সহজলভ্য রইলো না। ১৫০ টাকা কেজি থেকে বাড়তে বাড়তে এটি এখন ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একই সাথে বাড়ছে ডিমের দাম। এক মাস আগেও ১১০ টাকা ডজন বিক্রি হওয়া ডিম এখন বিক্রি হচ্ছে ১৪০-১৫০ টাকায়। দফায় দফায় এই দাম বৃদ্ধিতে সঙ্কটে পড়েছে বেশির ভাগ মানুষ। হঠাৎ করে এমন মূল্যবৃদ্ধিতে বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। দোকানে দোকানে দাম নিয়ে চলছে ক্রেতা-বিক্রেতার বাগি¦তণ্ডা।
মূল্যবৃদ্ধির কারণ হিসেবে বাচ্চা ও ফিডের দাম অস্বাভাবিক বাড়ার পাশাপাশি জ্বালানি তেল, গ্যাসসহ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধিকে দায়ী করছেন ব্যবসায়ী ও খামারিরা। অন্য দিকে প্রান্তিক খামারিদের একটি সংগঠন এ মূল্যবৃদ্ধির জন্য করপোরেট কোম্পানিগুলোর সিন্ডিকেটকে দায়ী করেছেন।


বাসাবো বাজারের ক্রেতা মণির হোসেন বলেন, গত সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগি ১৫০ টাকায় কিনেছি। এখন বলছে ২০০ টাকা। ডিমের দাম চাচ্ছে ৫০ টাকা হালি। এভাবে দাম বাড়তে থাকলে কিভাবে সংসার চালাব। বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারি বাজারে ডিম-মুরগির দাম বেড়ে গেছে। প্রতিদিন ডজনে ৫-৬ টাকা বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে। ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়ায় অন্য সব ধরনের মুরগির দাম বেড়েছে ৩০-৫০ টাকা। সোনালি মুরগির দাম প্রতি কেজি ৩৪০-৩৫০ টাকা পর্যন্ত। দেশী মুরগির দাম হাঁকা হচ্ছে ৫০০-৫৬০ টাকা কেজি।
এ বিষয়ে খামারিদের সংগঠন পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো: সুমন হাওলাদার বলেন, খামারেই ডিম-মুরগির দাম বেড়েছে, যার প্রভাব পড়েছে বাজারে। এ দাম বৃদ্ধির কারণ বাজারে অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে বাচ্চার দাম। গত ৫ জানুয়ারি প্রতি পিস মুরগির বাচ্চা ৯-১০ টাকা ছিল। এখন সেটা ৫৬ টাকা হয়েছে।


তিনি বলেন, যখন রোজা ও ঈদ সামনে রেখে খামারিরা বাচ্চা নিচ্ছে, তখন এই অবস্থা। গত বছর ফিডের দামও দ্বিগুণ করেছে এই কোম্পানিগুলো। সেজন্য এখন বাজারে ডিম ও মুরগির দাম অস্বাভাবিক বাড়ছে।
এ খামারির দাবি, পোলট্রি খাতে বাচ্চা ও খাবার (ফিড), মেডিসিনসহ প্রায় সবকিছু উৎপাদন করছে করপোরেট কোম্পানিগুলো। তারা ডিম এবং মুরগিও উৎপাদন করছে। পাশাপাশি খামারিদের সাথে কন্ট্রাক্ট ফার্মিংয়েও (চুক্তিভিত্তিক) জড়িত বেশির ভাগ কোম্পানি। সে কারণে তাদের সাথে টিকতে পারছে না দেশের সাধারণ খামারিরা। কোম্পানিগুলো বাজারে সিন্ডিকেট করে দাম বাড়াচ্ছে এখন।
এসব অভিযোগ তুলে করপোরেট কোম্পানিগুলোর মুরগির গোশত ও ডিম উৎপাদন এবং কন্ট্রাক্ট ফার্মিং বন্ধের দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএ) সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, দীর্ঘ সময় দেশের প্রান্তিক খামারিরা মুরগি ও ডিমের দাম না পেয়ে খামার বন্ধ করে দিয়েছেন। এক লাখ ৬০ হাজার খামার থেকে বন্ধ হয়ে এখন ৬০ হাজারে ঠেকেছে। তারপরও সব খামারে মুরগি নেই। ফলে এখন মুরগি ও ডিমের নিয়ন্ত্রণ প্রান্তিক খামারিদের কাছে নেই।