Naya Diganta
টুম্পার চিকিৎসা চলছে

ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের সিংহ রাসেল আর নেই

টুম্পার চিকিৎসা চলছে

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে পাঁচ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন জোড়া সিংহের মধ্যে ১৬ বছর বয়সী রাসেল অবশেষে মারা গেছে। মঙ্গলবার বিকেলে পার্কের ভেটেরিনারি হাসপাতালে সিংহ রাসেল মারা গেছে বলে নিশ্চিত করেছেন সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: মাজহারুল ইসলাম। পরে ঊর্ধ্বতন প্রশাসনের অনুমতি সাপেক্ষে ময়নাতদন্ত শেষে রাতে সিংহ রাসেলের দেহ পার্কের ভেতরে পুঁতে ফেলা হয়েছে। এ ঘটনায় সাফারি পার্কের পক্ষ থেকে বুধবার চকরিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। তবে অপর সিংহ টুম্পা এখনো চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছে। তার শারীরিক অবস্থা কিছুটা উন্নতির দিকে বলে দাবি করেন মাজহারুল। তিনি বলেন, পার্কের সিংহ রাসেল-টুম্পা গ্যাস্ট্রোলজিক্যাল রোগে আক্রান্ত হয়ে গত ১৪ ডিসেম্বর থেকে খাবার গ্রহণ বন্ধ করে দেয়। প্রথমদিকে দেখা গেছে, সিংহ রাসেল টুম্পার শরীরে বাত, ব্যথা অনুভব হচ্ছে। শরীরের বিভিন্ন স্থান অবশ হয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি দাঁতে ক্ষয়, ঘন ঘন প্রস্রাব শুরু করে।
তিনি বলেন, এ ধরনের পরিস্থিতিতে সিংহগুলোকে পার্কের বেষ্টনিতে রেখে চিকিৎসা দিয়ে আসছিলেন সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি সার্জন ডা: হাতেম সাজ্জাত মো: জুলকারনাইন। মাঝখানে তারা কিছুটা সুস্থ হলেও পরে আবার অসুস্থ হয়ে পড়ে।
সিংহগুলোর অধিকতর চিকিৎসার জন্য গত ৭ জানুয়ারি বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ চট্টগ্রামের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম চৌধুরীর কাছে চিঠি পাঠানো হয়। ওই চিঠির প্রেক্ষিতে গত ১৪ জানুয়ারি বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম চৌধুরী সিংহ রাসেল ও সিংহী টুম্পার চিকিৎসার জন্য পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি মেডিক্যাল টিম গঠন করেন। মেডিক্যাল টিমের প্রধান চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সাইসেন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন ও সার্জারি বিশেষজ্ঞ ড. বিবেক চন্দ্র সুত্রধরের নেতৃত্বে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. ভজন চন্দ্র দাস, প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের অব. পরিচালক ডা. মো: ফরহাদ হোসেন, চকরিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ও সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি চিকিৎসক ডা. হাতেম সাজ্জাদ মো. জুলকারনাইন। ইতোমধ্যে মেডিক্যাল টিমের প্রধানসহ পাঁচ সদস্যের টিম সাফারি পার্কে এসে রাসেল ও টুম্পার চিকিৎসা দিয়ে আসছিলেন। এরই মধ্যে ৩১ জানুয়ারি বিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সিংহ রাসেল। বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো: রফিকুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, আমাদের চেষ্টার কমতি ছিল না সিংহ রাসেল ও টুম্পার জীবন বাঁচাতে। অসুস্থ হওয়ার পর আমরা তাদের চিকিৎসায় সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। তিনি বলেন, গত ১৫ জানুয়ারি থেকে গঠিত মেডিক্যাল টিমের তত্ত্বাবধান এবং পরামর্শে রাসেল টুম্পার চিকিৎসা চলছিল। এরই মধ্যে সিংহ শাবকগুলো অনেকটা সুস্থ হয়ে উঠছিল। ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষ জানায়, সিংহ রাসেল ২০০৭ সালের ১৫ অক্টোবর ও সিংহী টুম্পা ২০০৮ সালের ২০ নভেম্বর সাফারি পার্কে জন্মগ্রহণ করে। বর্তমানে সিংহ রাসেলের ১৬ বছর এবং সিংহী টুম্পা ১৫ বছর বয়স অতিক্রম করছে। মূলত সিংহরা ১৬ থেকে ২০ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে।