Naya Diganta

চকরিয়ায় বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে সিংহের মৃত্যু

চকরিয়ায় বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে সিংহের মৃত্যু

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৬ বছর বয়সী সিংহ রাসেল অবশেষে মারা গেছে।

মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় সিংহটির মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম। বৃহস্পতিবার সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেন তিনি।

সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: মাজহারুল ইসলাম দৈনিক নয়া দিগন্তকে জানান, ২০০৭ সালের ৭ অক্টোবর সিংহ শাবক রাসেল ও ২০০৮ সালের ২০ নভেম্বর সিংহ শাবক টুম্পা এ সাফারি পার্কে জন্ম গ্রহন করে। এ সিংহ শাবক দুটি গত ১৪ ডিসেম্বর অসুস্থ হয়ে পড়লে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঁচ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করে চিকিৎসা দেয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৬ বছর বয়সী সিংহ রাসেল অবশেষে মৃত্যু হয়েছে। তাকে ঊর্ধ্বতন মহলের অনুমতি সাপেক্ষে ময়নাতদন্ত শেষে ওই দিন রাতে পার্কের ভেতরে পুঁতে ফেলা হয়েছে।

তিনি জানান, এ ঘটনায় সাফারি পার্ক কতৃপক্ষ বুধবার চকরিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে।

পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, অপর সিংহ টুম্পা এখনো চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে। তার শারীরিক অবস্থা কিছুটা উন্নতির দিকে বলেও জানান তিনি।

ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের এ ধরনের সিংহকে পার্কের বেষ্টনিতে রেখে চিকিৎসা দিয়ে আসছিলেন সাফারি পার্কের ভেটেরেনারি সার্জন ডাক্তার হাতেম সাজ্জাত মো: জুলকার নাইন।

তিনি জানান, সিংহ রাসেল ও টুম্পা গ্যাস্ট্রলোজিকেল রোগে আক্রান্ত হয়ে গত ১৪ ডিসেম্বর থেকে খাবার গ্রহণ বন্ধ করে দেয়। প্রথম দিকে দেখা গেছে, সিংহ রাসেল ও টুম্পার শরীরে বাতব্যথা অনুভব হচ্ছে। শরীরের বিভিন্ন স্থান অবশ হয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি দাঁতে ক্ষয়, ঘন ঘন প্রস্রাব শুরু করে। পরে এ সিংহ শাবকগুলোর অধিকতর চিকিৎসার জন্য গত ৭ জানুয়ারি বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ চট্টগ্রামের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম চৌধুরীরকে অবগত করা হলে তিনি গত ১৪ জানুয়ারি সিংহ রাসেল ও সিংহী টুম্পার চিকিৎসার জন্য পাঁচ সদস্যের একটি মেডিক্যাল টিম গঠন করেন।

জানা গেছে, এ মেডিক্যাল টিমের প্রধান করা হয় চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এ্যানিমেল সাইনসেন্স বিশ্ববিদ্যালয়েল মেডিসিন ও সার্জারি বিশেষজ্ঞ ড. বিবেক চন্দ্র সুত্রধর। তার নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. ভজন চন্দ্র দাস, প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের অব: পরিচালক ডা: মো. ফরহাদ হোসেন, চকরিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ও সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি চিকিৎসক ডা: হাতেম সাজ্জাদ ও মো. জুলকার নাইন এ মেডিক্যাল টিমের সদস্য ছিলেন। তারা সাফারি পার্কে এসে সিংহ রাসেল ও টুম্পাকে চিকিৎসা প্রদান করে আসছিলেন।

এ দিকে, বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ চট্টগ্রামের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ( ডিএফও) মো: রফিকুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, আমাদের চেষ্টার কমতি ছিল না সিংহ রাসেল ও টুম্পার জীবন বাঁচাতে। অসুস্থ হওয়ার পর তাদের চিকিৎসার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। সেই জন্য পাঁচ সদস্যের মেডিকেল বোর্ডও গঠন করা হয়। গত ১৫ জানুয়ারি থেকে গঠিত মেডিকেল টিমের তত্ত্বাবধান এবং পরামর্শে রাসেল টুম্পার চিকিৎসা চলছিল।

তিনি জানান, এরই মধ্যে সিংহ শাবকগুলো অনেকটা সুস্থ হয়ে উঠছিল। চিকিৎসাধীন অপর সিংহ টুম্পাকে বাঁচিয়ে রাখতে সর্বাত্মক চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। বর্তমানে এ পার্কে আর চারটি সিংহ রয়েছে বলে তিনি জানান।