Naya Diganta
দেখা-অদেখা

ক্ষমতাসীনরাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অনিবার্যতা প্রমাণ করছে

দেখা-অদেখা

বাংলাদেশে নিবন্ধিত-অনিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সঠিক সংখ্যা কত বলা মুশকিল। তবে দেশের সবচেয়ে প্রাচীন ও অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। তাদের প্রধান প্রতিপক্ষ এবং দেশের আরেক বড় দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। দুই দলের মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন থেকে বিএনপির অহর্নিশ তীব্র সমালোচনা করে চলছে। প্রতিদিনের পত্র-পত্রিকায় যেসব ‘বকাবাজ্জি’ প্রকাশিত হচ্ছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় দুই দলের সম্পর্ক ‘শাপে নেউলে’। সম্প্রতি এমন অভিযোগও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে করা হয়েছে, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে রাষ্ট্রকে ধ্বংস করে ফেলবে। বাংলার মাটিতে বিএনপিকে আর ক্ষমতায় আসতে দেয়া যেতে পারে না। তারা গণতন্ত্রকে বাঁচতে দেবে না। তারা ক্ষমতায় এলে স্বাধীনতার আদর্শ বাঁচবে না, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ভলুণ্ঠিত হবে। এন্তার সব অভিযোগ। নিত্যনতুন সব অভিযোগ ধারাবাহিকভাবে করা হচ্ছে। পক্ষান্তরে বিএনপি এসব অভিযোগ নিয়ে তেমন ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে না। বরং তারা ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে পক্ষশক্তিকে লক্ষ করে তাদের ব্যত্যয়ের কথাগুলো বলছে। বিএনপি হয়তো সরকারের এমন ঢালাও সব অভিযোগকে অন্তঃসারশূন্য ও মিথ্যাচার বলে বিবেচনা করে অকারণ বাক্য ব্যয় করছে না। তাদের মাথার ওপর দিয়ে ক্ষমতাসীনদের এসব কথা চলে গিয়ে হাওয়ায় মিলিয়ে যাচ্ছে।
জনগণও ক্ষমতাসীনদের কথা-বার্তায় খুব কান পাতছে এমন বলা যাবে না। কেননা মানুষের সামনে রয়েছে বিদ্যমান কঠিন বাস্তবতা। পজিশন থেকে মানুষের কাছে যেসব ওয়াদা অঙ্গীকার অনবরত করা হচ্ছে, মাঠের পরিস্থিতি থেকে কিন্তু স্পষ্ট, ওইসব প্রতিশ্রুতির কোনো প্রতিফলন দেখা যায় না। তাই ক্ষমতাসীনদের নিয়ে জনমনে গভীর আস্থাহীনতা সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে সম্প্রতি পশ্চিমের দেশ থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ঢাকায় এসে সরকারের সাথে কথা বলছেন। সেসব আলোচনার পর সরকারের মুখপাত্র সেই আলোচনার বিষয়বস্তু নিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। অবাক হওয়ার মতো ঘটনা যে, একই আলোচনার পর অতিথিরাও কথা বলেছেন। কিন্তু বাংলাদেশের মুখপাত্র সে প্রসঙ্গে যা বলছেন সফরকারী অতিথির বক্তব্য তার সাথে মেলেনি বরং বিপরীত। দেশের সরকার এমন অসত্য তথ্য কেন দিচ্ছেন আমরা জানি না। কিন্তু সাধারণের মধ্যে এবং ওয়াকিবহাল মহলে এসব অসত্য বলায় গভীর হতাশা ও প্রশাসনকে নিয়ে অনাস্থা তৈরি হচ্ছে। এসব শুধু সরকারেরই নয় জনগণের ভাবমর্যাদা দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এভাবে আমাদের প্রশাসনও কিন্তু বিদেশীদের কাছে তাদের গ্রহণযোগ্যতা বিনষ্ট করছে।
পক্ষান্তরে পজিশনের পক্ষ থেকে বিএনপির প্রতি যত বকাঝকা করাই হোক, তা নিয়ে বিএনপির চিন্তিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। আরেকটি কারণ হয়তো রাজনৈতিক ময়দানের হাল আমলের চিত্রটা। যেমন বিএনপির পক্ষ থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে যেসব সমাবেশ করা হয়েছে তার প্রতিটি আর সমাবেশ থাকেনি। হাজারো প্রতিরোধ প্রতিবন্ধকতা মাড়িয়ে সেই সব সমাবেশকে ‘মহাসমাবেশে’ পরিণত করেছে জনগণ। সমাবেশ যেসব এলাকায় হয়েছে, সেখানে বিএনপি এত বিপুলসংখ্যক কর্মী অনুরক্ত থাকার কোনো প্রশ্নই আসে না। মূলত সেই সব মহাসমাবেশে হাজার হাজার সাধারণ মানুষই ছুটে এসে সমবেত হয়েছিল। তারা ক্ষমতাসীনদের অভিযোগ, গালমন্দ, হুমকি-ধমকি কোনোটাই কানে তোলেনি। এটাই আসলে বিএনপির ওপর জনগণের আস্থার প্রতিফলন এবং জনসমর্থনে এখন ধন্য হয়ে উঠছে বিএনপি।

রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রতিপক্ষকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে গিয়ে ক্ষমতাসীনদের এমন রাজনৈতিক ভাষায় (সেটা আরো কিছুটা পরিশীলিত হলে ভালো হতো) কথা বলা নতুন নয়। আর এসব শুনতে শুনতে সবার কাছেই এখন ‘গা সওয়া’ হয়ে গেছে। এমন সব বক্তব্যের তথা অভিযোগের সত্যতা নিয়ে কেউ আর তেমন কৌতূহলী নয় বা মাথাও ঘামায় না। তবে একটা বিষয় হয়তো সবারই দৃষ্টি আকর্ষণ করে থাকতে পারে। পক্ষ শক্তির কাছ যে বেসুমার ‘গাল-মন্দ’ করা হচ্ছে তা অনেকটা ‘অগ্নিবাণেরই’ মতো যা ভব্যতার বাইরে। কেউ কেউ যদি ভাবতে শুরু করে যারা ‘অগ্নিবাণ’ ছুড়ছেন, তাদের মানসিক সুস্থতা কতটুকু। হয়তো তারা এসব কথা বলার মাধ্যমে তাদের কর্মী-সমর্থক অনুরক্তদের মনোবল চাঙ্গা ও উদ্দীপ্ত রাখার চেষ্টা করছেন।
প্রতিপক্ষ শিবিরে এসব বক্তব্য নিয়ে দু’ধরনের প্রতিক্রিয়া হতে পারে। প্রথমত, বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের তাদের চলমান আন্দোলনে আরো নিষ্ঠাবান করে তুলতে পারে। বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের ক্ষিপ্তও করতে পারে এবং রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তাপ ও উত্তেজনা সৃষ্টির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। একই সাথে অন্য একটি মহলে ‘ভ্রু কুঞ্চন’ সৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। তারা সেই সব অগ্রসর মানুষ, যারা কখনোই সরাসরি রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত নন, তবে রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ পর্যবেক্ষণ ও চুলচেরা বিচার বিশ্লেষণ করেন। তারা কিন্তু ভাবছেন, পজিশন থেকে এমন সব বক্তব্য বিবৃতি অবশ্য রাজনৈতিক অঙ্গনে তিক্ততা অসহিষ্ণুতা সৃষ্টির পরিপ্রেক্ষিতে উভয়পক্ষের মধ্যে সীমাহীন দূরত্ব সৃষ্টি এবং মতবিনিময় সংলাপ ও সমঝোতায় পৌঁছানোর সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যেতে পারে। ক্ষমতাসীনদের প্রতি প্রতিপক্ষের বিদ্বেষ, ভুল বোঝাবুঝি ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকবে। অথচ আজকে রাজনৈতিক অঙ্গনে এ বিষয়টি খুব জরুরি যে, আসন্ন জাতীয় সংসদের নির্বাচনের প্রাক্কালে একটা সুষ্ঠু শান্তিপূর্ণ পরিবেশ তৈরিতে সব রকম উত্তাপ উত্তেজনা পরিহার করা ছিল পক্ষশক্তির জন্য সব দিক থেকে মঙ্গলজনক। তা ছাড়া পজিশনের পক্ষ থেকে যদি আক্রমণাত্মক বক্তব্য দেয়া, লাঠি নিয়ে শো-ডাউন ও ভীতি সৃষ্টি করা হয়, সেটা শালীনতার মাত্রা বিবর্জিত বলে মনে করা অযৌক্তিক নয়। বিএনপির সব কর্মসূচির সাথে সাথে ক্ষমতাসীনরা পাল্টা কর্মসূচি দিয়ে চলেছেন। ক্ষমতাসীনদের বক্তব্য বিবৃতি ও মাঠ রাজনীতির মাধ্যমে যে বার্তা পরিষ্কার হচ্ছে তাতে এ ধারণা বদ্ধমূল হয়ে উঠছে। পক্ষশক্তি রাষ্ট্র ক্ষমতা আঁকড়ে রাখার জন্য সব কিছু করতে মরিয়া হয়ে আছে। এতে তারা প্রকারান্তরে বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবির অনিবার্যতা প্রতিষ্ঠিত করে তুলছে। এখন মেসেজ খুব পরিষ্কার, ক্ষমতাসীনরা কোনোভাবেই রাষ্ট্রক্ষমতা অন্যের হাতে তুলে দেবে না। সেটা তারা কোনোভাবেই কল্পনায় নিতে পারছে না। যাদের এমন ধনুর্ভঙ্গ পণ ও মনোভাব- তাদের অধীনে সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের আয়োজন করা নিছক বাতুলতা মাত্র। তা ছাড়া বর্তমান সরকারের অধীনে বিগত দিনে পরপর তিনবার তথা তিনটি জাতীয় সংসদের নির্বাচন হয়েছে। সে নির্বাচনগুলোর স্বরূপ কেমন ছিল সেটা আর নতুন করে বলার প্রয়োজন নেই। যতটা মন্দ হয়, তেমন সব বিশ্লেষণ এই তিন নির্বাচনের শিরোস্ত্রাণে লেগে আছে।

এখন ক্ষমতাসীন দল কথায় কথায় গণতন্ত্রের প্রশ্নে চ্যাম্পিয়ন হতে চায়। তবে তাদের মন মগজে প্রোথিত হয়ে আছে, ‘সালিস মানি, কিন্তু তালগাছটা আমার।’ এমন চিন্তাপ্রসূত ধারণা আর যাই হোক সেটি দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসনের অনুকূল বলা যাবে না। তারা তো মনস্থির করেই নিয়েছেন ২০৪১ সাল পর্যন্ত তাদের ক্ষমতায় থাকতে হবে। কিন্তু সে পর্যন্ত যেতে কোন পথ পদ্ধতি অনুসরণ করে ক্ষমতায় থাকবেন তার রূপরেখা প্রকাশ করা হয়নি। ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ এসব ধারণা তাদের পথ চলার উপাত্ত হিসেবে যদি ধরে- তবে এসবের বিশ্লেষণ থেকে এটাই বেরিয়ে আসবে যে, এসবই নিছক খণ্ডচিন্তা। কোনো বিষয়েই সে ধারণা পূর্ণাঙ্গ কিছু নয়। আরো একটু গভীরভাবে যদি চিন্তা করা হয় তাহলে এটাই বেরিয়ে আসতে পারে যে- আজ যারা দলের তরুণ নেতাকর্মী তাদের নাকের ডগায় ২০৪১-এর একটা ‘মুলা’ ঝুলিয়ে রেখে দলে টিকে থাকার জন্য আশবাদী করে তোলা; সেটি না হলে আওয়ামী লীগের ভেতর বড় ধরনের দলছুটের ঘটনা ঘটবেই। কারণ তাদের সরকারের এমন কোনো অর্জন নেই যা তাদের পাথেয় হতে পারে।
ক্ষমতাসীনরা এই মুহূর্তে তাদের ক্ষমতায় থাকার যৌক্তিকতা প্রমাণের যেসব তথ্য ও তত্ত্ব দিচ্ছে তার অন্যতম হচ্ছে, দেশের প্রভূত উন্নতি তারা করেছেন। এসব ক্ষেত্রে ফিরিস্তি দিতে কেবল কয়েকটি মেগাপ্রকল্পের তালিকা পেশ করে বাজিমাৎ করতে চাচ্ছেন। এসব প্রকল্পের যে মুদ্রা দেখানো হচ্ছে, তারও যে একটা অন্ধকার ওপিঠ আছে সেই রহস্যের ভেদ অনেকেরই জানা আছে। যাক সেসব কথা; কিন্তু কর্তৃপক্ষ জানতে বা বুঝতে পারেন কি না, দেশের অধিকাংশ মানুষের এখন নুন আনতে পান্তা ফুরায়। পক্ষান্তরে সব পণ্যের মূল্য আরো বৃদ্ধি পাবে গ্যাস বিদ্যুৎসহ সব জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির সরকারি সিদ্ধান্তে। বিভিন্ন সেক্টরের উদ্যোক্তাদের কণ্ঠ থেকে করুণ আর্তনাদ বেরিয়ে আর হয়তো শিল্প বাঁচানো যাবে না। দেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার বা আত্মসাতের যে ভয়াবহ কাহিনী শুনতে পাচ্ছে মানুষ, তাতে সবাই হতবুদ্ধি হয়ে পড়েছে।
অন্যদিকে শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে পক্ষ শক্তি কোনো নজির প্রমাণ ব্যতিরেকেই নানা ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব ছড়াচ্ছেন। তা কিন্তু মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্য হয়ে উঠছে না। আরো বলা হচ্ছে, বিএনপির হাতে গণতন্ত্র বাঁচবে না। যদি সেটাই ঠিক হতো তবে দেশটি কেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার প্রবর্তন করতে চায়! এই ব্যবস্থা কয়েকবারই প্রমাণ করেছে; এটা জনগণের ভোটদানের পথ নির্বিঘœ করতে সক্ষম। সুষ্ঠু ভোট প্রদান করার মধ্যে গণতন্ত্র শক্তিশালী ভিত্তি লাভ করে এবং গণতন্ত্র সুরক্ষা পায়। আর অন্য দিকে সরকারের প্রোগ্রেস রিপোর্ট হচ্ছে ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের কর্ণধারের ভাষায় ‘বাংলাদেশ এখন অচিন্ত্যনীয় বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের মুখে।’

প্রকৃতপক্ষে, বাংলাদেশের উন্নয়নের সহযোগী বলতে জাপান, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পশ্চিমের গণতান্ত্রিক শক্তিকেই বোঝায়। এই বলয়ের দেশগুলো বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সুপ্রতিষ্ঠিত করা, প্রশ্নমুক্ত ও সব দলের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে সর্বমহলে গ্রহণযোগ্য একটা নির্বাচন চায়। কিন্তু এখন যে ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়ে আছে তা থেকে উত্তরণের জন্য বিভিন্ন প্রয়োজনীয় সংস্কার সাধনের মাধ্যমে রাষ্ট্রক্ষমতা হস্তান্তরের শান্তিপূর্ণ ব্যবস্থা করা মানুষের বহুদিনের লালিত স্বপ্ন। পশ্চিমের উল্লিখিত শক্তিও তাই চায় এবং সে জন্য দূতালীয়ও তারা করছে। কিন্তু দেশের জনগণ ও বাংলাদেশের পশ্চিমের মিত্ররা এখনো কিন্তু জনআকাক্সক্ষা পূরণে তাদের দূতালি সফল হওয়া নিয়ে সন্দিহান। কারণ পক্ষশক্তির বক্তব্য বিবৃতি ও দেহ ভঙ্গিমায় যা প্রতিভাত হচ্ছে, তা থেকে কারো পক্ষেই তাদের ভূমিকা নিয়ে সন্তুষ্ট হওয়ার কারণ নেই।
কিন্তু এটাই সত্য যে, আগামী দ্বাদশ সংসদের নির্বাচন যদি সুষ্ঠু না হয়, তবে ক্ষমতাসীনরা দেশ ধ্বংসের যে তত্ত্ব দিয়েছেন সেটি আসলেই সত্যে পরিণত হবে। আমরা আগে যেসব বিষয়ে গুরুতর পরিস্থিতির কথা বলেছি, তাকে ফেরানো না গেলে আজকের এই মরণযাত্রা আর কোনোভাবে রুখে দেয়া যাবে না। এখানে কারো প্রতি দ্বেষ-বিদ্বেষ, করুণা অনুকম্পা, অনুরাগ ও বিরাগের প্রশ্ন নয়। দেশটা আসলে ১৭ কোটি মানুষের, ভূত ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবতে হবে। তাদের কেবল বেঁচে থাকার মতো বেঁচে থাকা নয় বা জীবন্মৃত হয়ে থাকাও নয়। সত্যিকার অর্থেই বাঁচার মতো করে বাঁচাতে হবে। সব কিছু বাদ দিয়ে সবার এই চিন্তায় নিমগ্ন হতে হবে। যে পথ পদ্ধতি পন্থা অনুসরণ করলে লক্ষ্যে পৌঁছানো যাবে, সেটি খুঁজে দেখাই হবে সবার বিকল্পহীন অভিযাত্রা।
আমাদের পূর্বসূরি যেমন দেশ বিনির্মাণের জন্য যুদ্ধ জেহাদ করে গেছেন, তাদের সেই স্বপ্ন যদি বর্তমান নেতানেত্রীদের অহমিকার, অবিবেচনার ও বোধহীনতার কারণে, মরীচিকার মতো হারিয়ে যায়- সে ক্ষেত্রে আমাদের কাছে কী জবাব আছে? মনে রাখতে হবে, আজকের নেতানেত্রীদের কাছে পূর্বসূরিরা দেশটাকে ‘আমানত’ রেখে গেছেন। আরবি ভাষার এই আমানত শব্দটির যে অন্তর্নিহিত ভাবব্যঞ্জনা তা কিন্তু অত্যন্ত ওজনদার। এখানে ফাঁকিঝুঁকি বা গোঁজামিল দেয়ার কোনো সুযোগ নেই।
ndigantababar@gmail.com