Naya Diganta

বেশি টাকা নিয়ে মালয়েশিয়ায় লোক পাঠানো নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে : প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী

প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমদ।

প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেছেন, মালয়েশিয়া লোক পাঠাতে যে বেশি টাকা নেয়া হচ্ছে, তা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে।

তিনি বলেন, জনশক্তি নিয়ে সমস্যা আছে। বিভিন্ন পর্যায়ে আমরা তা সমাধানের জন্য ব্যবস্থা নিয়েছি।

এছাড়া বিদেশে গিয়ে বিভিন্ন কারণে পাসপোর্ট হারিয়ে ফেললে পরে নতুন করে ইস্যু করার সময় প্রবাসীরা সঠিক তথ্য দেন না বলে মন্তব্য করেন মন্ত্রী।

বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক সম্মেলনের তৃতীয় দিনের অধিবেশনে অংশ নিয়ে প্রবাসীকল্যণ মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

তিনি জানান, ‘তথ্য ভুল থাকলেও ফিঙ্গার প্রিন্টে ধরা পড়ে যায়। এখন এ বিষয়ে কী করা যায় সেটা নিয়ে ভাবছি। প্রবাসীরা কিন্তু দেশের জন্য অনেক কিছু সেক্রিফাইস করেন। আমাদের সবুজ পাসপোর্টের আন্তর্জাতিক মান ধরে রাখতে হবে। বুঝেশুনে আমাদের সমন্বয় করতে হবে।’

মানুষকে ভুলিয়ে-ভালিয়ে পাচার করা হয় বলে অভিযোগ নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমিতো আপনার গ্রামে নেই। আপনি তো আছেন, আমি অনুরোধ জানাবো এ ধরনের দালাল চক্র গরিবদের ভুলিয়ে প্রতারিত করলে সেক্ষেত্রে আপনারা আপনাদের ভূমিকা পালন করবেন। তাদেরকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাবেন। এতে প্রতারণা এমনিতেই কমে যাবে।’

দালাল চক্র কমিয়ে আনতে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকেও পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে বলে জানান মন্ত্রী।

ডিসিদের কী বার্তা দিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ডিসিদের সচেতনতার কথা বলেছি। সচেতনতা হলো আমাদের মূল বিষয়। আর ডিসিদের অনুরোধ করেছি প্রবাসী ইস্যুত যেন একটু নজর দেন। সবাই সহযোগিতা করলে এ খাত এগিয়ে যাবে।’

প্রবাসীরা হুন্ডিতে টাকা পাঠালে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার প্রশ্নে ইমরান আহমেদ বলেন, ‘এখানে কে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আর কে লাভবান হচ্ছে সেটা একটা ইস্যু। কেন মানুষ হুন্ডিতে টাকা পাঠায়; সেটা আপনারা ভালো বোঝেন। আমি কিছু বলতে চাই না।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যের চেয়ে আমেরিকা থেকে রেমিট্যান্স বেশি আসছে এ বিষয়টি আপনারা কীভাবে দেখছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন অঞ্চলের ইস্যু আলাদা। এটা কিন্তু কোনো সমস্যা না। গত বছর থেকে এ বছর এখন পর্যন্ত রেমিট্যান্সে এগিয়ে আছি বা পেছনে না। আমি টাকা হিসাবে না; ডলার হিসেবে বলছি। যেহেতু সারা বিশ্বে ফরেন কারেন্সি নিয়ে একটা সঙ্কট চলছে, এজন্য আমরা একটু বেশি ব্যথা অনুভব করছি। আশা করছি, এটাও সমাধান হয়ে যাবে।’

মালয়েশিয়া যেতে কোনো খরচ লাগে না; তারপরেও আড়াই থেকে তিন লাখ টাকা করে নেয়া হচ্ছে-এ জায়গাটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না কেন? এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘এটা নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। তবে এক হাতে তালি বাজে না। এখানে বাংলাদেশ, ওখানে মালয়েশিয়া আছে। অনেক সিস্টেমের ভেরিয়েশনের কারণে আপনি যে প্রশ্ন তুলেছেন, এ রকম কিছু একটা আছে। আমরা এ বিষয়ে খুশি না।’

তিনি আরও বলেন,‘আপনারাতো বলছেন আড়াই থেকে তিন লাখ; বাস্তবে নেয়া হচ্ছে চার লাখ টাকা। আমরা সব বিষয়ে খবর রাখি। এ বিষয়টি সমাধান করার জন্য তাদের (মালয়েশিয়ার) মন্ত্রী আসছেন আগামী সপ্তাহে। দেখি কী ফলাফল বের করতে পারি। মালয়েশিয়ার বিষয়ে আরেকটা কথা বলবো, অনেক সময় লোক পাঠালে অনেক এডজাস্টমেন্ট করতে হয়।’

জনশক্তি রফতানিতে অন্য দেশের তুলনায় আমাদের দেশে খরচ বেশি হয়, সেটা কমিয়ে আনার বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী বলেন, ‘খরচ বেশি লাগে কেন; আমি যদি বেশি দিতে রাজি থাকি, তাহলে এজেন্টরা বেশি নেবে না কেন? আপনারা সচেতন হোন তাহলে কমে যাবে। সবাই সম্মিলিতভাবে আমাদের সহযোগিতা করেন।’

সূত্র : ইউএনবি