Naya Diganta

পাঠ্যবই বিতর্ক : শিশুদের কী শেখাচ্ছি

পাঠ্যবই বিতর্ক : শিশুদের কী শেখাচ্ছি।

২০২৩ নতুন শিক্ষাক্রমের বই শিক্ষার্থীদের হাতে আসার পর থেকেই সচেতন অভিভাবক মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। নতুন পাঠ্যক্রম নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে বিতর্ক। অভিভাবকরা এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন, নানাভাবে প্রতিবাদ করছেন। নতুন বছরের প্রথম দিন নতুন বই উপহার দেয়ার সরকারের দীর্ঘ দিনের প্রশংসিত কাজটি আর আলোচনায় আসছে না। বিভিন্ন শ্রেণীর বইয়ে বিভিন্ন বিতর্কিত বিষয়ের সংযোজন অভিভাবকদের দৃষ্টি এড়ায়নি। যদিও বেশ কয়েক বছর ধরেই বিভিন্ন বিতর্কিত বিষয় পাঠ্যসূচিতে স্থান পেয়ে আসছে।

ইসলাম-বিষয়ক বিভিন্ন গল্প, কবিতা, জীবনী কাটছাঁট করা হয়েছে। তবে ২০২৩-এর নতুন পাঠ্যসূচি অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে ব্যাপক বিতর্কিত তত্ত্ব স্থান পেয়েছে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড সরকারকে বিতর্কিত করছে। যেকোনো দেশের শিক্ষাক্রমের পাঠ্যসূচি ওই দেশের জাতীয় চেতনা, ধর্মীয় মূল্যবোধ, দেশপ্রেম ও দীর্ঘদিনের লালিত ঐতিহ্য ধারণ করে। বিশেষ করে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠ্যসূচিতে তা সযত্নে রাখা হয়। যাতে তারা দেশের আগামী দিনের সম্পদে পরিণত হয়। শিশু-কিশোরদের দেশপ্রেম ধর্মীয় মূল্যবোধের শিক্ষা দেয়াই পাঠ্যসূচির প্রধান উপজীব্য বিষয় হয়। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের পাঠ্যসূচির দিকে তাকালেই এটি বুঝতে পারি। তারা তাদের সিলেবাসে দেশপ্রেম, জাতীয় চেতনা ও তাদের ধর্মের মূল্যবোধকেই প্রাধান্য দিয়ে আসছে।

অনেক কষ্টে অর্জিত আমাদের স্বাধীনতা। দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে লাখো শহীদের তাজা প্রাণের বিনিময়ে এসেছে আমাদের স্বাধীনতা। তাই আমাদের পাঠ্যপুস্তকে দেশপ্রেম, ধর্মীয় মূল্যবোধ, জাতীয় চেতনার প্রতিফলন থাকবে- এটিই স্বাভাবিক। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড নতুন পাঠ্যক্রমের বিভিন্ন শ্রেণীতে এমন বিষয় অন্তর্ভুক্ত করেছে, যা কোনোভাবেই আমাদের সন্তানদের উপযোগী নয়।

নতুন পাঠ্যপুস্তকে নিম্নোক্ত বিষয়গুলোর উপস্থিতি অভিভাবকদের মর্মাহত করেছে-

ইসলামবিদ্বেষ ও ইসলামী সংস্কৃতিকে মুছে ফেলার চেষ্টা।

ভারত বর্ষের মুসলিম শাসকদেরকে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন।

চরমভাবে ইতিহাস বিকৃতি।

ট্রান্সজেন্ডার ও সমকামিতার মতো চরম ঘৃণিত ও বিকৃত কাজকে সহজীকরণ।

দেশীয় ঐতিহ্য ও মূল্যবোধগুলোকে উপহাস করার প্রচেষ্টা।

হিন্দুয়ানি কালচারকে আমাদের দেশের সবার সংস্কৃতি হিসেবে উপস্থাপন করা।

বিবর্তনবাদের মতো অবৈজ্ঞানিক বাতিল দর্শন প্রতিষ্ঠা করার অপচেষ্টা।

সপ্তম শ্রেণীর ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুশীলনী বইয়ে পর্দা, হিজাব, বোরকা, দাড়ি ও ধর্মীয় পোশাক নিয়ে কটূক্তি লক্ষণীয়। হিজাব বা পর্দার প্রতিশব্দে বলা হয়েছে- অবরোধ আর যেসব মুসলিম নারী পর্দা মেনে চলেন তাদের অবরোধবাসিনী বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। বিশেষত অবরোধবাসিনীর কাহিনীতে যে পাঁচটি পয়েন্ট তুলে ধরা হয়েছে তা মুসলিম অভিভাবকরা মেনে নিতে পারছেন না। ভারতীয় উপমহাদেশে ইসলাম ও মুসলমানদের দীর্ঘ ইতিহাস। ইসলামের শাশ্বত গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা ভারতের বর্তমান বিজেপি সরকার অস্বীকার করছে। প্রায় ৮০০ বছরের মুসলমানদের রাজত্বকালকে ভুলিয়ে দেয়ার অপচেষ্টা সে দেশে চলছে। মুসলমানদের অসংখ্য কীর্তি ভারতবর্ষের মাটিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। বিজিপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে মুসলিম শাসন ও কীর্তিমান মুসলিম শাসকদের সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা দিয়ে পাঠ্যপুস্তক লেখা হচ্ছে। ঘৃণার বিষবাষ্প ছড়িয়ে দিয়ে বিজেপি সরকার রাজনৈতিক সুবিধা নিচ্ছে। ইতোমধ্যে বলিউডে সিনেমা নির্মাণ করে মুসলিম শাসকদের ব্যাপারে নেতিবাচক ধারণা দেয়া হয়েছে। দুঃখজনক হলেও সত্য, পার্শ্ববর্তী দেশের এ হিন্দুত্ববাদী প্রজেক্ট কিভাবে বাংলাদেশের এনসিটিবির ঘাড়ে চেপে বসল তা রীতিমতো উদ্বেগের বিষয়।

আমরা অভিভাবকরা বিশ্বাস করতে চাই, সরকারপ্রধানকে অন্ধকারে রেখে একটি কুচক্রী মহল ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করছে। সবচেয়ে অবাক করা বিষয়, যিনি এ ভূখণ্ডে, এ বাংলায় ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠা করেছেন সেই ইখতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মদ বখতিয়ার খিলজিকে বিশেষভাবে টার্গেট করা হয়েছে এ বছরের পাঠ্যপুস্তকে। নবম শ্রেণীর ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা বইয়ে বলা হয়েছে- বখতিয়ার লুণ্ঠন করেছেন। এর বাইরেও তিনি হিন্দুদের বিহার ধ্বংস করেছেন। সর্বোপরি তাকে অত্যাচারী ও দখলদার হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। পুরো পাঠ্যক্রমে মুসলামনদের শাসন সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা দেয়া হয়েছে। সপ্তম শ্রেণীর ইতিহাস ও সামাজক বিজ্ঞান অনুশীলনী বইয়ে বলা হচ্ছে- হিন্দু, বৌদ্ধ রাজাদের মতো মধ্যযুগে মুসলিম রাজারাও একই প্রক্রিয়ার যুদ্ধ, দখলদারিত্ব চালিয়েছেন। প্রাচীন যুগের মতো মধ্যযুগের রাজারাও ভারত ও বাংলা অঞ্চল দখলে নিয়ে সুলতানি এবং মোগল নামে শাসনব্যবস্থা চাপিয়ে দিয়েছেন। কীর্তিমান মুসলিম শাসকদের যুদ্ধ ও দখলদারিত্বের ক্ষেত্রে হিন্দু ও বৌদ্ধদের সাথে তুলনা করা হলো। যেন মুসলিমরাও তাদের মতো হত্যাকাণ্ড, ধর্ষণ, লুণ্ঠন ও গণহত্যা চালিয়েছেন। অথচ বাস্তবতা হলো- মুসলিম শাসকরা বাংলাসহ পুরো ভারতবর্ষে একটি নতুন সভ্যতা বিনির্মাণ করেছিলেন। তারা ভিন্ন ধর্মের মানুষের অধিকার নিশ্চিত করেছিলেন। মুসলিম শাসকদের আগমন নির্যাতিত হিন্দু ও বৌদ্ধ জাতিগোষ্ঠীর কাছে একজন ত্রাণকর্তার আবির্ভাবের মতোই ছিল। তারা চাইলে প্রায় ৮০০ বছরের শাসনকালে অন্যসব ধর্ম বিলুপ্ত করে দিতে পারতেন। ইতিহাস সাক্ষী, কালজয়ী মুসলিম শাসকরা জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার অধিকার নিশ্চিত করেছিলেন।

ষষ্ঠ শ্রেণির সমাজবিজ্ঞান অনুশীলন বইয়ে বলা হয়েছে- মুসলিম শাসকরা ছিলেন ক্ষমতালিপ্সু। ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছেন। ধর্মের মাধ্যমে স্বার্থ হাসিল করেছেন। অত্যন্ত কৌশলে সুলতানি আমল সম্পর্কে ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে। ইতিহাস শেখানোর নামে অত্যন্ত কৌশলে ইসলাম ও মুসলিম ঐতিহ্যের প্রতি বিদ্বেষ ও ঘৃণা সৃষ্টি করা হচ্ছে। অবাক করা বিষয় ইংরেজ শাসনের গোলামি থেকে মুক্তির জন্য দীর্ঘ লড়াই সংগ্রাম অসংখ্য শহীদের আত্মদান পাঠ্যপুস্তকে স্থান পায়নি। উপরন্তু মোগল ও মুসলিম শাসনকে অবজ্ঞা অবহেলা করে ইংরেজ শাসনের ভালো দিক সম্পর্কে জ্ঞান দান করা হয়েছে।

সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান পাঠ্যবইয়ে সংযোজিত হয়েছে- ‘শরীফার গল্প’ নামে একটি কল্পকাহিনী। এই কল্পিত গল্পের প্রধান চরিত্র শরীফা দৈহিক গঠনে ছেলে হলেও নিজেকে সে মেয়ে মনে করে। তাই সে তার নাম বদলে শরীফা রেখেছে। বইতে বলা হচ্ছে- একজন মানুষ শারীরিকভাবে ছেলে হলেও মানসিকভাবে সে মেয়ে হতে পারে। এই গল্পে আরো এক ব্যক্তির কথা বলা হয়েছে, যে শারীরিকভাবে মেয়ে হলেও মানসিকভাবে ছেলে! একই বইয়ে গল্পের চরিত্রে রনির মায়ের বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে। রনির মা বলেন, ছোটদের কোনো ছেলেমেয়ে হয় না। বড় হতে হতে তারা ছেলে বা মেয়ে হয়ে ওঠে। শিশু-কিশোরদের মনে মানব লিঙ্গ সম্পর্কে এসব উদ্ভট ও আজগুবি ধারণা দেয়ার মাধ্যমে সমকামিতার মতো ঘৃণিত বিষয় গ্রহণযোগ্য করার চক্রান্ত করা হচ্ছে বলে অভিভাবকরা মনে করেছেন। শিশুদের কোমল মনে সমকামিতার প্রতি আকর্ষণ ও দুর্বলতা তৈরি করা হচ্ছে এসব গল্পের মাধ্যমে। কৌশল শেখানো হচ্ছে একজন ছেলে শারীরিকভাবে ছেলে হলেও মানসিকভাবে মেয়ে হতে পারে। এটি স্বাভাবিক বিষয় ও নিন্দনীয় নয়। এসব পড়ে শিশুরা সমকামিতাকে স্বাভাবিক ও প্রাকৃতিক বিষয় ভাবতে শিখবে। ট্রান্সজেন্ডারকে বিষয়টি কৌশলে এগিয়ে আনা হচ্ছে।

ষষ্ঠ শ্রেণির বিজ্ঞান বই যৌনতায় ভরা। এতে অশ্লীলতা এত মারাত্মক যে, বাবা-মায়েরা এসব পৃষ্ঠা দেখে রীতিমতো আঁতকে উঠছেন। পশ্চিমা ষড়যন্ত্রের ফাঁদে আমাদের এনসিটিবির কর্মকর্তারা পড়েছেন কি না, তা দেখার বিষয়। সৃষ্টির সেরা জীব মানুষ কোথা থেকে এলো? এটি খুবই পরিচিত একটি প্রশ্ন। মহাগ্রন্থ আল-কুরআনে আল্লøাহ আমাদের দ্ব্যর্থহীন ভাষায় এ প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন। বিভিন্ন সূরার অনেক আয়াতে মহান আল্লাহ জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন মাটি থেকে। মানুষ বিবর্তনের মাধ্যমে বর্তমান আকৃতিতে আসেনি। বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থার জীববিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান বইয়ে মানুষ সৃষ্টির ইতিহাস লিখতে গিয়ে ঈমান বিধ্বংসী বিষয়বস্তু সামনে আনা হয়েছে। থিউরি অব ইভোলিউশন তথা বিবর্তনবাদ প্রতিষ্ঠা করার কৌশল অবলম্বন করা হয়েছে। নানা রকম বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর মাধ্যমে বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে, ইতিহাসের দীর্ঘ সময়ের পথচলায় ধীরে ধীরে পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে আধুনিক মানবপ্রজাতির উদ্ভব ঘটেছে।

সমাজবিজ্ঞান অনুসন্ধান পাঠ্যবইয়ে বলা হচ্ছে, আমাদের প্রথমে মনে রাখতে হবে- আধুনিক মানুষ ও বানর-গোত্রের নানা প্রাণী যেমন- (শিম্পাঞ্জি, গরিলা) একটি সাধারণ প্রাইমেট জাতীয় প্রজাতি থেকে তাদের যাত্রা শুরু করে। তারপর লাখ লাখ বছর ধরে বিবর্তন হয়ে মানুষ এই পর্যায়ে এসেছে।

মহান আল্লাহ মানুষ সৃষ্টি করেছেন এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য বইয়ে স্থান পায়নি। উপরন্তু ষষ্ঠ শ্রেণির ইতিহাস ও সমাজবিজ্ঞান অনুশীলন বইয়ে যা বলা হলো তা আরেক বিস্ময়। সেখানে ১৯৭৪ সালে খুঁজে পাওয়া ‘লুসি’ নামক একটি হনুমানের ফসিলের কথা উল্লেখ করে তার ছবি দেয়া হয়েছে এবং এ লুসিকে মানুষের পূর্বপুরুষ হিসেবে শিক্ষার্থীদের ধারণা দেয়া হয়েছে। একই বইয়ে বলা হচ্ছে, মানুষ কোথা থেকে এলো? এ প্রশ্ন করে শিক্ষার্থীদের বিবর্তনবাদের বস্তাপচা প্রত্যাখ্যাত মতাদর্শ গেলানোর অপচেষ্টা চালানো হয়েছে, যা মুসলমানদের ঈমান আকিদা সম্পূর্ণরূপে বিনষ্ট করার অপকৌশল বলে অভিভাবকরা মনে করছেন। অথচ ঊনবিংশ শতাব্দীতেই জীববিজ্ঞানীরা ডারউইনের থিউরি অব ইভোলিউশন অপ্রমাণিত ও অবৈজ্ঞানিক বলে বাতিল করে দিয়েছেন। শুধু কিছু নাস্তিক বিজ্ঞানী ও কথিত বুদ্ধিজীবী এ তত্ত্বটি সামনে নিয়ে আসেন তাদের হীন স্বার্থচরিতার্থ করতে। বাস্তববাদী বিজ্ঞানীরা ডারউইনের বিবর্তনবাদ তত্ত্বের অসারতা প্রমাণ করেছেন নানা বাস্তব পরীক্ষা-নিরীক্ষার ভিত্তিতে।

অনেক অভিভাবক বলছেন, আমরা কোনো বৈজ্ঞানিক যুক্তিতর্কে যেতে রাজি নই। আমরা মুসলমান, আমরা মানুষ। মহান আল্লাহ মানুষ সৃষ্টি করেছেন এটি আমাদের ঈমান ও এটি আমাদের পাঠ্যপুস্তকে থাকতে হবে। মুসলমানদের ঈমান আকিদার বিপরীত কোনো বিষয় পাঠ্যক্রমে থাকবে তা আমরা মেনে নিতে পারি না। প্রথম শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত বিভিন্ন বইয়ের প্রচ্ছদে হিন্দুয়ানি সংস্কৃতি, মূর্তিপূজার ছবির আধিক্য অভিভাবকদের ভাবিয়ে তুলেছে।

সচেতন মহল মনে করে, জনগোষ্ঠীর ৯০ শতাংশের বেশি মুসলমানের দেশে এ ধরনের পাঠ্যপুস্তক রচনা সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্রের অংশ। এটি শুধু সরকারকে চরমভাবে বিতর্কিত করার অপপ্রয়াসই নয়; বরং দীর্ঘ দিনের লালিত মূল্যবোধ ঐতিহ্য ধ্বংস করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার সুদূরপ্রসারী গভীর ষড়যন্ত্র। সর্বোপরি আগামী দিনের মুসলিম প্রজন্মকে কৌশলে ঈমানহারা করাই এ ধরনের পাঠ্যপুস্তকের লক্ষ্য বলে তারা মনে করছেন। অবিলম্বে এ জাতীয় হীন কার্যক্রমের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনার জন্য অভিভাবকরা জোর দাবি তুলছেন। তারা বিভিন্ন বিতর্কিত ও ইতিহাস বিকৃতির দায়ে অভিযুক্ত সব বই অবিলম্বে বাজেয়াপ্ত করার দাবি জানাচ্ছেন।

আমরা আশা করি, সরকার কোটি কোটি অভিভাবকের আশা-আকাক্সক্ষা অনুধাবন এবং তাদের অনুভ‚তির প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করে ইতিবাচক পদক্ষেপ নেবেন। আমাদের আশা, কোমলমতি শিক্ষার্থীরা যাতে সঠিক ও বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর চেতনার অনুকূল পাঠ্যপুস্তক পেতে পারে সেই উদ্যোগ সরকার নেবে।