Naya Diganta

ঝালকাঠিতে ২৯৬ বিএনপির নেতাকর্মীর নামে মামলা

ঝালকাঠিতে ঢাকা থেকে ফেরার পথে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বহনকারী বাসে বোমা হামলার অভিযোগে বিএনপির ৪৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলায় জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম নূপুর, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক শামীম তালুকদারসহ ১৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ২৫ থেকে ৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

বুধবার (৭ ডিসেম্বর) বিকেলে জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক রেজাউল করিম জাকির বিস্ফোরক আইনে সদর থানায় এ মামলা করেন।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: নাসির উদ্দীন সরকার জানান, ঝালকাঠি জেলা ছাত্রীগের নেতাকর্মীরা ছাত্রলীগের কেদ্রীয় সম্মেলন শেষে ঢাকা থেকে ঝালকাঠি ফিরছিল। মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে বরিশাল-পিরোজপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠির কৃষ্ণকাঠি ব্রাকমোড় ব্রিজ এলাকায় বাস দুটি পৌঁছালে বাসে বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আহত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের উদ্ধার করে।

এ ঘটনায় মামলা রেকর্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করে ওসি বলেন, অভিযুক্তদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আবদুল্লাহ আল মাসুদ মধু বলেন, আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে বিএনপি-জামায়াত দেশব্যাপী অরাজকতা শুরু করেছে। তারই অংশ হিসেবে আমাদের হত্যার উদ্দেশ্যে চার থেকে পাঁচটি বোমা হামলা চালানো হয়।

অন্যদিকে নলছিটিতে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর ককটেল হামলার অভিযোগে শনিবার পৌর আওয়ামী লীগের ৭ নম্বর ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদক জুয়েল খান বিস্ফোরক আইনে নলছিটি থানায় একটি মামলা করেন। এতে উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান খান হেলাল, সাধারণ সম্পাদক হেলাল গাজী সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুম শরীফসহ ২৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৫০ জনকে আসামি করা হয়।

জানা গেছে, রাজাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক রফিকুল ইসলাম ইলিয়াস গত ৩ ডিসেম্বর রাজাপুরে উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট তালুকদার আবুল কালাম আজাদ, সম্পাদক নাসিম উদ্দীন আকনসহ ২৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৮০ জনসহ মোট ১০৬ জন বিএনপি নেতাকর্মীকে আসামি করে রাজাপুর থানায় মামলা করেন। মামলায় ২৯ নভেম্বর একটি দাওয়াত খেতে যাওয়ার সময় তাদের ওপর আসামিরা ককটেল হামলা চালায় বলে উল্লেখ করা হয়।

এদিকে কাঠালিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের আনন্দ মিছিলে ককটেল নিক্ষেপ করার ঘটনায় কাঠালিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান সুজন গত ৪ ডিসেম্বর উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জালালুর রহমান আকন, সম্পাদক আকতার হোসেন নিজাম মীর বহন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক কবির হাওলাদারসহ নামধারী ৯ জনসহ মোট ৬৯ জনকে বিএনপি নেতাকর্মীকে আসামি করে মামলা করেন।

বাসে বোমা ছোড়ার ঘটনা স্বীকার করে ঝালকাঠি পুলিশ সুপার আফরুজুল হক টুটুল বলেন, যেহেতু ওখানে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে সেহেতু আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে অপরাধী গ্রেফতারের অভিযান চালানো হবে।

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান মুবিন বলেন, ১০ তারিখের ঢাকার গণসমাবেশে নেতাকর্মী এবং জনতার ঢল থামাতে এই অপকৌশল স্বরূপ মিথ্যা গায়েবি মামলা করে পুলিশ বাড়ি বাড়ি অভিযান চালিয়ে নেতাকর্মীদের হয়রানি করছে। ঝালকাঠিতে ৪টি মামলার ঘটনা কোথাও ঘটেনি।

এদিকে মামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম নূপুর বলেন, আমি গত এক সপ্তাহ ধরে ঢাকায় অবস্থান করছি। বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে আরো অনেক নেতাকর্মী বর্তমানে ঢাকায় রয়েছেন। বিএনপির সমাবেশেকে কেন্দ্র করে মিথ্যা নাটক সাজিয়ে এ মামলা করা হয়েছে বলেও দাবি করেন এ বিএনপি নেতা।