Naya Diganta

সন্ধ্যার পরই সৈয়দ নজরুল সেতুতে ঘুটঘুটে আঁধার

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার যোগাযোগব্যবস্থার উন্নতি হলেও বালিয়াতলী পয়েন্টের আন্ধারমানিক নদীর ওপর নির্মিত সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুর ল্যাম্পপোস্ট ঠিক থাকলেও জ্বলে না বাতি। সন্ধ্যা হলেই অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে ভূতুড়ে পরিবেশের সৃষ্টি হয় সেতুতে। ফলে সেতুতে চলাচল যেমন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে, তেমনি ঘটে দুর্ঘটনা। এ ছাড়াও মাদকসেবীরা সেতুতে নানা ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ আছে।
স্বপ্নের সৈয়দ নজরুল সেতুর দুই প্রান্তের সব কয়টি ল্যাম্পপোস্টের বাতি একসাথে জ্বালিয়ে সেতু খুলে দেয়ায় আলোর ঝলকানিতে উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়ে সাগরপাড়ের মানুষ। সেতুর ঝলমল আলো দেখতে দুই প্রান্তেই লোকজন জড়ো হয়। কিন্তু শুরু হওয়ার কয়েক মাসের মধ্যেই স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি) সীমিত আকারে বাতি জ্বালানোর ব্যবস্থা করে। ওই সেতু দিয়ে বালিয়াতলী, লালুয়া, মিঠাগঞ্জ, ধুলাসার ও ডালবুগঞ্জ ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষের যোগাযোগ উপজেলা শহরের সাথে। বিকল্প পথ হিসেবে এ সেতু পার হয়ে পর্যটন পল্লী গঙ্গামতি ঘুরে কুয়াকাটা যাওয়ার সুযোগ মিলে পর্যটকসহ দর্শনার্থীদের।
এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ১৪২ কোটি টাকা ব্যয় এ সেতু নির্মিত হয়েছে। ১৩টি স্প্যানের ওপর ফুটপাথসহ নয় দশমিক ৮ মিটার প্রস্থ। ৬৬৮ মিটার দৈর্ঘ্যরে সেতুটির দুই পাড়ে রয়েছে ৫০০ মিটার অ্যাপ্রোচ সড়ক। ২০১৩ সালের ১৯ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সেতুতে গর্ত হওয়া ছাড়াও কোথাও কোথাও ল্যাম্পপোস্টের খুঁটির গোড়া হেলে পড়ার উপক্রম হয়েছে। ল্যাম্পপোস্টের বাতিগুলো হয় ঝুলে আছে, নয়তো ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। সেতু এলাকা ফাঁকা থাকায় এবং সড়কের বাতি না জ্বলায় সেতুর ওপর দিয়ে চলাচলকারীরা যে কোনো সময় ছিনতাইয়ের কবলে পড়েন। প্রায়ই যানবাহন দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। দীর্ঘদিন ধরে সেতুতে বাতি না জ্বললেও কর্তৃপক্ষের কোনো মাথাব্যথা নেই।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক স্কুলশিক্ষক বলেন, সন্ধ্যার পর এ সেতু মাদকসেবীদের আখড়ায় পরিণত হয়। রাতের অন্ধকারে প্রায়ই যাত্রীরা মাদকসেবী ছিনতাইকারীদের কবলে পড়ে সর্বস্ব খোয়ান।
আটো চালক রহিম বলেন, প্রথম দিকে সেতুতে বাতি জ্বলতো, তখন আমাদের গাড়ি চালাতে কোনো ভয় ছিল না। কিন্তু বর্তমানে বাতি না জ্বলায় যেকোনো সময় আমাদের গাড়ি দুর্ঘটনার শিকার হয়। সেই সাথে ছিনতাই আতঙ্কে থাকি।
এলজিইডি উপজেলা উপ-প্রকৌশলী আবুল হোসেন বলেন, সেতুতে বাতি জ্বললে মাসে কারেন্ট বিল অনেক টাকা আসে। এলজিইডির পক্ষে এত খরচ বহন করা সম্ভব নয়। এ জন্য সেতু চালু করার কয়েক মাস পর এলজিইডি কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তা বন্ধ করে দেয়া হয়।