Naya Diganta

রাজধানীতে ওয়াসার পানির লাইন স্থাপনে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ

রাজধানীতে ওয়াসার পাইপ লাইন স্থাপনে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। গ্রাহকরা জানিয়েছেন, ওয়াসার নিয়োজিত ঠিকাদারের কর্মচারীরা মূল সড়কের লাইন থেকে এলাকার গলির লাইন দুই-তিন ফুট উপরে স্থাপন করছেন। আর এটি নামিয়ে দিতে বাড়িমালিকদের কাছ থেকে অর্থ দাবি করছেন। অনেকের কাছ থেকে ইতোমধ্যে তারা টাকাও নিয়েছেন। ওয়াসার কর্মকর্তাদের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ দেয়া হয়েছে বলেও তারা জানান।


ঢাকা মহানগরীতে সার্বক্ষণিকভাবে নিরাপদ পানি সরবরাহের জন্য এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে ঢাকা ওয়াসা ‘ঢাকা ওয়াটার সাপ্লাই নেটওয়ার্ক ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট’ বাস্তবায়ন করছে। সম্প্রতি রাজধানীর দক্ষিণ মুগদায় তাদের পানির লাইন উন্নয়নের কাজ চলছে। এ জন্য মুগদা-বিশ্বরোড, বিশ্বরোড থেকে ওয়াসা রোড এবং আবাসিক এলাকার গলির রাস্তা খোঁড়া হচ্ছে। দক্ষিণ মুগদা এলাকার বেশ কয়েকজন বাড়িমালিক অভিযোগ করে বলেন, পাইপ লাইন স্থাপনে নিয়োজিত কর্মচারীরা মূল রাস্তার লাইন থেকে এলাকার লাইন দুই-তিন ফুট উঁচু করে স্থাপন করছেন। এতে পানিপ্রবাহে সমস্যা হবে। বিষয়টি গ্রাহকরা তাদের নজরে আনলে কর্মচারীরা লাইন নিচে নামাতে টাকা দাবি করছেন গ্রাহকদের কাছ থেকে। ওই এলাকায় প্রকল্পের কাজ তদারকি করছেন প্রকৌশলী শাহজাহান। তার নিয়োজিত কর্মচারীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে এ চাঁদা দাবি করছেন বলে তারা জানান।


এলাকার বাড়িমালিক আহমেদুল কবির জাকির নয়া দিগন্তকে বলেন, ওয়াসার পানির লাইন মূল সড়ক থেকে এলাকার লাইন দুই থেকে তিন ফুট পর্যন্ত উঁচু করে দিচ্ছে। এতে পরবর্তী সময়ে বাসায় পানি সরবরাহ সঠিকভাবে হওয়া নিয়ে আমরা আশঙ্কায় রয়েছি। মুগদা ব্যাংক কলোনির বাড়িমালিক অ্যাডভোকেট সুলতান আহমেদ নয়া দিগন্তকে বলেন, পানির লেভেল উঁচু করে দেয়া হচ্ছে। আবার গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে সেটি ঠিক করে দেয়া হচ্ছে। তারা বাড়িমালিকদের কাছ থেকে এ জন্য টাকা নিচ্ছেন।
সিরাজুল ইসলাম সিরাজ নামে এক বাড়িমালিক বলেন, পাইপ স্থাপনে অনিয়ম করা হচ্ছে। কোথাও ছয় ইঞ্চি পাইপ আবার কোথাও চার ইঞ্চি পাইপ দেয়া হচ্ছে। এতে পরবর্তী সময়ে সমস্যা তৈরি হতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা শওগাতুল আলম শওকত নয়া দিগন্তকে বলেন, অনেক বাড়িমালিকদের কাছ থেকে ওয়াসার প্রকল্পের লোকজন টাকা নিচ্ছেন বলে শুনেছি। তা ছাড়া মূল সড়কে রাবারের পাইপ দিলেও বাসাবাড়িতে প্লাস্টিকের পাইপ দিচ্ছে। এ পাইপ কতদিন টিকবে তা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। কাজ সঠিকভাবে না করার কারণে মানুষের দুর্ভোগ হচ্ছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
এ বিষয়ে প্রকৌশলী শাহজাহান বলেন, গ্রাহকরা আমাদের কর্মচারীদের বিরুদ্ধে টাকা নেয়ার বিষয়টি ওয়াসার কাছে অভিযোগ করেছে বলে আমিও শুনেছি।


এ বিষয়ে ঢাকা ওয়াসার জোন-১-এর নির্বাহী প্রকৌশলী আল আমিন নয়া দিগন্তকে বলেন, গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রকল্পের কর্মচারীদের টাকা নেয়ার বিষয়ে আমরা অভিযোগ পেয়েছি। প্রকল্পের পরিচালককে এ বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলেছি। তিনি বলেন, বর্তমানে ওয়াসার কোনো বিষয়ে নগদ টাকা দেয়ার নিয়ম নেই। সব টাকাই ব্যাংক অথবা বিকাশের মাধ্যমে নেয়া হয়। তা ছাড়া লিফলেটের মাধ্যমেও পানির লাইন উন্নয়ন প্রকল্পের কাজে গ্রাহকদের কোনো ধরনের টাকা না দেয়ার জন্য বলা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রকল্পের পরিচালক আব্দুল লতিফকে টেলিফোন করলে তিনি একটি মিটিংয়ে আছেন জানিয়ে পরে কথা বলবেন বলে জানান; কিন্তু পরে বারবার ফোন করলেও তিনি ফোন ধরেননি।