Naya Diganta

রাশিয়ার তেলের দাম বেঁধে দেয়ায় ক্রুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ক্রেমলিনের

ইউরোপিয়ান ইউনিয়নভুক্ত কোন দেশ এখন সমুদ্রপথে রুশ তেল আমদানি করবে না।

তেল রফতানি থেকে রাশিয়ার আয় কমানোর জন্য পশ্চিমা দেশগুলোর চেষ্টা প্রতিহত করার জন্য কড়া প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে ক্রেমলিন।

পশ্চিমা দেশগুলোর জোট জি-সেভেন, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও অস্ট্রেলিয়া গত শুক্রবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে রাশিয়ার তেল কেনার জন্য ব্যারেল প্রতি সর্বোচ্চ ৬০ ডলারের বেশি দাম দেয়া হবে না। তাছাড়া ইউরোপিয়ান ইউনিয়নভুক্ত কোনো দেশ এখন সমুদ্রপথে রুশ তেল আমদানি করবে না এবং অন্যত্র তেল রফতানির ক্ষেত্রেও বিভিন্ন বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।

জি-সেভেন বলেছে, রাশিয়া যেন ইউক্রেনের যুদ্ধ থেকে মুনাফা করতে না পারে – তা ঠেকানোর জন্যই এ ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দেয়া হচ্ছে। তবে রাশিয়া জোর দিয়ে বলেছে, ইউক্রেনে যুদ্ধ চালানোর ক্ষেত্রে তাদের যে সক্ষমতা – তার ওপর এসব পদক্ষেপ কোনো প্রভাব ফেলতে পারবে না।

রাশিয়া আরো হুমকি দিয়েছে যে যেসব দেশ এই ঊর্ধ্বসীমা আরোপের পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করবে- তাদের কাছে তারা তেল রফতানি করবে না।

প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ইউক্রেনে তাদের সামরিক কার্যক্রম চালানোর জন্য যা যা প্রয়োজন, তার সবই রুশ সামরিক বাহিনীর আছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, এবং ইইউভুক্ত দেশগুলো নিয়ম করেছে যে রুশ তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ৬০ ডলারের কম রাখা না হলে এসব দেশের পরিবহন এবং বীমা কোম্পানিগুলোকে এ সংক্রান্ত কোনো লেনদেন করতে পারবে না।
জি-সেভেন দেশগুলোর জোট রাশিয়ার তেলের দামে ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দেবার কথা ঘোষণার পর আগামী মাসগুলোয় বিশ্বব্যাপী তেল সরবরাহ বিঘ্নিত হতে পারে, এমন আশঙ্কায় বিশ্ববাজারে তেলের দাম বেড়েছে। এরই পাশাপাশি বিশ্বের প্রধান তেল উৎপাদনকারী দেশগুলো তাদের তেল উত্তোলন কমাতে একমত হওয়ার ফলেও তেলের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে।

সোমবার সকালে ব্রেন্ট অশোধিত তেলের দাম প্রায় দুই শতাংশ বেড়ে ব্যারেল প্রতি দাম দাঁড়ায় ৮৭.২৫ ডলারের ওপরে। তবে রাশিয়া ইউক্রেনে অভিযান চালানোর পর তেলের দাম যেখানে উঠেছিল, বর্তমান মূল্য তার চেয়ে এখনো বেশ নিচে। সেসময় একপর্যায়ে ব্যারেল প্রতি তেলের দাম ১২০ ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছিল। তবে পরে বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দা এবং দেশগুলোর তেল ব্যবহার কমে যাবার পর দাম নেমে আসে।

রাশিয়া ইউক্রেনে অভিযান চালানোর প্রেক্ষাপটে দেশটির ওপর চাপ বাড়াতে গত শুক্রবার জি-সেভেন জোট রুশ তেলের সর্বোচ্চ দাম ব্যারেল প্রতি ৬০ ডলারের বেঁধে দিতে একমত হয়। অন্যদিকে তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর জোট ওপেক প্লাস বলেছে, তারা তাদের উৎপাদন কমানোর নীতি অব্যাহত রাখবে।

ওপেক প্লাস হচ্ছে ২৩টি তেল উৎপাদনকারী দেশের জোট যার মধ্যে রাশিয়াও আছে।

কিছু বিশ্লেষক বলেছেন, চীনে কোভিড বিধিনিষেধ শিথিল করার ফলেও তেলের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। কারণ, এর ফলে সেদেশে তেলের চাহিদা বাড়বে।

সূত্র : বিবিসি