Naya Diganta

যথেচ্ছা ব্যবহারে কার্যকারিতা হারাচ্ছে এন্টিবায়োটিক : সেমিনারে বক্তারা

যথেচ্ছা ব্যবহারে কার্যকারিতা হারাচ্ছে এন্টিবায়োটিক

দেশে অ্যান্টিবায়োটিকের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের ফলে ভয়াবহ ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। যথেচ্ছ ব্যবহারে কার্যকারিতা হারাচ্ছে এন্টিবায়োটিক বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

তারা বলছেন, এসব কারণে ওষুধ সেবন করেও রোগ সারছে না। এরূপ পরিস্থিতি রোধ করতে অ্যান্টিবায়োটিকের খুচরা বিক্রি বন্ধ করা জরুরি বলেও মত তাদের।

রাজধানীর একটি হোটেলে ‘অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স সমস্যা : প্রতিরোধ করি সবাই মিলে’ শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তারা একথা বলেন।

স্বাস্থ্য অধিদফতর, স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা (সিডিসি), ইউএসএআইডি ও বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএইচআরএফ) যৌথভাবে এই সেমিনারের আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে বিশেষজ্ঞরা বলেন, সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশেও অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্টেন্স (ওষুধ প্রতিরোধী জীবাণু) সমস্যা প্রতিনিয়ত বেড়ে চলছে। অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের যথেচ্ছ ব্যবহারের ফলে এসব ওষুধ প্রয়োজনীয় কর্মক্ষমতা হারাচ্ছে। ফলে অনেক ক্ষেত্রেই স্বল্প তীব্রতর অসুস্থতাতেও প্রাণ হারাচ্ছে অনেকেই।

বক্তারা বলেন, হাঁস-মুরগি, গবাদিপশু ও মাছের খামারসহ বিভিন্ন খাদ্যে নানাভাবে অ্যান্টিবায়োটিকসহ বিভিন্ন ওষুধের যথেচ্ছ প্রয়োগেও মানবদেহে নানা ধরনের অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল প্রবেশ করছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা: এ বি এম খুরশিদ আলম বলেন, দেশের মানুষ জ্বর হলেই সাধারণ ওষুধের সাথে অ্যান্টিবায়োটিক ট্যাবলেট দুই-তিনটা নিয়ে যাচ্ছে। এটি মানুষের শরীরে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্সের বড় কারণ। এ জন্য নিয়ম করা প্রয়োজন। কেউ অ্যান্টিবায়োটিক কিনলে ফুল ডোজ কিনতে হবে, না হয় কেনা যাবে না।

অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারে আইন প্রয়োজন, সাথে আইন প্রয়োগও প্রয়োজন বলে জানান তিনি।

ইউএসএআইডির গ্লোবাল হেলথ সিকিউরিটি এজেন্ডা (জিএইচএসএ) স্পেশালিস্ট ড. আবুল কালাম আজাদ বলেন, অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্টেন্স সমস্যা সারাবিশ্বে এতটাই বেড়েছে যে, জাতিসঙ্ঘ ২০১৬ সালের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্টেন্স প্রতিরোধকে বিশেষ গুরুত্ব সহকারে সন্নিবেশিত করেছে। এ বিষয়ে বিশ্বব্যাপী একত্রে কাজ করার জন্য ‘ওয়ান হেলথ গ্লোবাল লিডার্স গ্রুপ অন অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্টেন্স’ গঠিত হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা: আহমেদুল কবির, অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার (সিডিসি) পরিচালক অধ্যাপক ডা: মো. নাজমুল ইসলাম, বাংলাদেশ মাইক্রোবায়োলজি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক ডা: সানিয়া তাহমিনা, ওষুধ প্রশাসন আধিদফতরের পরিচালক ডা: মো: সালাউদ্দিন, আইইডিসিআর’র চিফ সায়েন্টিফিক অফিসার অধ্যাপক ডা: জাকির হোসেন হাবিব, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর পরিচালক ডা: মো. আবু সুফিয়ান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার, ফ্লেমিং ফান্ড কান্ট্রি গ্র্যান্ট বাংলাদেশের টিম লিড অধ্যাপক নীতিশ দেবনাথ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার টেকনিক্যাল অফিসার মোহাম্মাদ রামজি ইসমাইলম, ইউএসএইআইডির এমট্যাপ্স প্রোগ্রামের কান্ট্রি প্রজেক্ট ডিরেক্টর (ভারপ্রাপ্ত) মো: আব্দুল্লাহ, এমট্যাপ্স প্রোগ্রামের টিম লিড ডা: এস এম জাহিদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।