Naya Diganta

অর্থ ফেরত পেতে ব্যাংকেই অবস্থান ধর্মঘটে ৯০ বছরের খিদার

আর্থিক সঙ্কটে জর্জরিত লেবাননের ব্যাংকগুলো থেকে আমানত ফেরত পাচ্ছেন না গ্রাহকরা। গত কয়েক মাসে গ্রাহকরা রীতিমতো হামলা, জিম্মি করে নিজেদের টাকা ফেরত নিয়েছেন। গত মঙ্গলবার এক বৃদ্ধা প্রতিবন্ধী টাকা ফেরত পেতে ব্যাংকের ভেতরেই অবস্থান করতে শুরু করেছেন। ৯০ বছর বয়সী ইদ্রো খিদার নামে ওই নারী গত মঙ্গলবার ছেলেকে নিয়ে অডি ব্যাংকের একটি শাখায় যান। তিনি ব্যাংকে জমা থাকা ২০ হাজার ডলার উঠাতে চাইলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাতে অস্বীকৃতি জানায়। এতে ওই নারী ক্ষিপ্ত হয়ে ব্যাংকেই বসে থাকার সিদ্ধান্ত নেন। আরব নিউজ।
প্রতিবন্ধী ওই নারীর ছেলে হুসেইন খিদার বলেন, আমরা ব্যাংকে বসে আছি এবং আমরা আমাদের আমানত ফেরত না পাওয়া পর্যন্ত এ স্থান ছাড়ব না। তিনি আরো বলেন, বৃদ্ধ বাবা-মায়ের ওষুধসহ অন্যান্য চিকিৎসার জন্য প্রতি মাসে আমার এক হাজার ডলার দরকার। আমাদের পরিবারের পক্ষে তা আর বহন করা সম্ভব হচ্ছে না। আমার মা পাঁচ বছর ধরে অসুস্থ। তারপরও আমরা এ টাকা তুলিনি। কিন্তু এখন এই খরচ সামলানো আর সম্ভব হচ্ছে না। বাবার ওপেন হার্ট সার্জারির প্রয়োজন ছিল। ব্যাংক টাকা না দেয়ায় আমরা ওষুধের মাধ্যমে সে রোগ দমানোর চেষ্টা করছি।


খিদার বলেন, আমার মা তিল তিল করে এই টাকা জমা করেছেন। এখন যখন প্রয়োজনের সময় এসেছে, অথচ ব্যাংক সেই টাকা ফেরত দিচ্ছে না। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আমাকে জানিয়েছে, তারা রেজুলেশন ১৫৮ অনুযায়ী ডিপোজিট রিলিজ করবেন। যার মানে তারা আমাদের চার হাজার ডলার দেবে। ব্যাংক ম্যানেজার জানিয়েছেন, তিনি আমাদের অতিরিক্ত দুই হাজার ডলার উপহার দেবেন। আমরা তাদের সে দাবি প্রত্যাখ্যান করে জানিয়েছি, আমরা পুরো টাকা ফেরত চাই। সে কি তার পকেট থেকে আমাকে দিচ্ছে? এটা আমার মায়ের টাকা।
বিষয়টি নিয়ে ডিপোজিটর আউটক্রাই অ্যাসোসিয়েশনের মিডিয়া কর্মকর্তা মুসা গাজী বলেন, আগামী দিনগুলোতে ব্যাংকগুলোতে আরো দুঃখজনক ঘটনা দেখা যাবে। কারণ রাজনৈতিক কর্তৃপক্ষের সমস্যা সমাধানে ব্যর্থতার ফলে আমানতকারীদের আমানত ব্যাংকে আটকে গেছে। অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস অভিযোগ করে জানায়, সরকারি খাত বেসরকারি খাতের তহবিল নষ্ট করেছে। রাষ্ট্র ও তার প্রতিষ্ঠানগুলো আমানতকারীদের তহবিল এবং ব্যাংক শেয়ারহোল্ডারদের মূলধন নষ্ট করে ফেলেছে।


সবচেয়ে বিপজ্জনক যে কাজটি তারা করেছে, সেটি হলো, সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব বেসরকারি খাতের ওপর চাপিয়ে দিয়ে নিজেদের দূরে সরিয়ে রাখছে। উল্লেখ্য, আমানতকারীরা ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে তাদের অর্থ বিদেশে পাচার করে দেয়ার অভিযোগ করেছেন। এ ক্ষেত্রে ব্যাংক ও রাষ্ট্র উভয়ই জনগণের আমানত লুটপাট করার জন্য অভিযোগে অভিযুক্ত।