Naya Diganta

ফেসবুকে প্রেমের পর গণধর্ষণ, আটক ৫

ফেসবুকে প্রেমের পর গণধর্ষণ।

গাজীপুরে ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় ও প্রেমের সূত্রধরে এক কিশোরীকে ডেকে নিয়ে গণধর্ষণ করেছে প্রেমিক ও তার বন্ধুরা। এ ঘটনায় কিশোরীর প্রেমিকসহ দুই যুবককে আটক করেছে পুলিশ। এ সময় গ্রেফতারদের ছিনিয়ে নিতে পুলিশের ওপর হামলা চালালে এক পুলিশ সদস্য আহত হন। এ হামলার দায়ে গ্রেফতার প্রেমিকের বাবা-মাসহ অপর তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

বুধবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) টঙ্গী পূর্ব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আশরাফুল ইসলাম।

গ্রেফতাররা হলো- গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গীর মরকুন কবরস্থান এলাকার লুৎফর রহমানের ছেলে প্রেমিক আসাদুজ্জামান শাওন (২৮) ও চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার মদনেরগাঁও গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে বাবুল হোসেন বাবু (২৭)।

ভিকটিম কিশোরী ও স্থানীয়রা জানান, গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গীর পাগাড় এলাকার জৈমতখান রোডের মোসলেম উদ্দীনের বাড়িতে ভাড়া থাকেন ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার আজমপুর গ্রামের এক কিশোরী (১৯)। সামাজিক যোগযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তার সাথে পরিচয় হয় গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গীর মরকুন কবরস্থান এলাকার লুৎফর রহমানের ছেলে আসাদুজ্জামান শাওনের (২৮)। পরিচয়ের সূত্র ধরে তাদের মাঝে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ওই কিশোরীকে টঙ্গীর মরকুনের বাসায় ডেকে নিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করেন শাওন।

তারা আরো জানান, মঙ্গলবার রাত ১টার দিকে প্রেমিক শাওন মোবাইল ফোনে কল দিয়ে ওই কিশোরীকে তার সাথে দেখা করতে বলে। এ সময় কিশোরীটি বের হতে অস্বীকৃতি জানালে অপর আসামি মো: বাবুল হোসেন বাবু ওই কিশোরীকে হুমকি দেয়। বলে, বের হলে তাকে ক্ষতি করবে। হুমকির একপর্যায়ে ওই নারী বাধ্য হয়ে মরকুন কবরস্থান এলাকায় যায়। সেখানে ওঁৎ পেতে থাকা আসামি বাবুল হোসেন বাবু ও পলাতক আসামি রিপন মিয়া (৪০) কিশোরীটির মুখে গামছা চেপে ধরে জোরপূর্বক কবরস্থানে নিয়ে যায়। সেখানে তিনজন মিলে কিশোরীটিকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এ সময় কিশোরীটির ডাকচিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে। তার বর্ণনা মতে স্থানীয়রা আসামি বাবুল হোসেন বাবুকে আটক করে। পরে স্থানীয়রা জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে পুলিশে খবর দেয়।

জিএমপি’র টঙ্গী পূর্ব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আশরাফুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বাবুল হোসেন বাবুকে আটক করে। চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার মদনেরগাঁও গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে বাবুল হোসেন বাবু (২৭) টঙ্গীর মরকুন এলাকায় ভাড়া থাকে। পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তিতে অপর ধর্ষক টঙ্গী পূর্ব থানাধীন মরকুন কবরস্থান এলাকার মৃত হযরত আলীর ছেলে রিপন মিয়া (৪০) ও প্রেমিক শাওনের নাম প্রকাশ করে বাবুল। বুধবার ভোর রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে প্রেমিক আসাদুজ্জামান শাওনকে গ্রেফতার করে। দুপুরে গ্রেফতারদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

থানার এসআই নজরুল ইসলাম জানান, ওই নারীকে গণধর্ষনের পর জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। সেখান থেকে স্থানীয়দের মাধ্যমে আটক এক ধর্ষক বাবুল হোসেন বাবুকে নিয়ে আসার সময় তাকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে তার স্বজনরা। একপর্যায়ে তারা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এতে পুলিশের এক সদস্য আহত হয়। এ ঘটনায় তিনি ১২জনকে আসামি করে টঙ্গী পূর্ব থানায় মামলা করেন। এ মামলায় আসামি আসাদুজ্জামান শাওনের পিতা লুৎফর রহমান কালু (৬০), তার স্ত্রী সনি আক্তার (৪০) ও ফাতেমা বেগমকে (৪৫) গ্রেফতার করা হয়।

ওসি আশরাফুল ইসলাম আরো জানান, ধর্ষণের ঘটনায় তিনজনকে আসামি করে থানায় মামলা করেছেন ভিকটিম। স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ভিকটিমকে শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পলাতকদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।