Naya Diganta
৬২টি দেশে তামাক কোম্পানির সিএসআর নিষিদ্ধ

সচিবদের উচিত বিএটিবির বোর্ড থেকে দ্রুত সরে আসা : পরিকল্পনামন্ত্রী

৬২টি দেশে তামাক কোম্পানির সিএসআর নিষিদ্ধ

তামাক নিয়ন্ত্রণ ও সরকারের নীতিতে যাতে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ না হয় সেজন্য বিএটিবির বোর্ড থেকে সচিবদের দ্রুত বেরিয়ে আসা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। তিনি বলেন, তামাক কোম্পানির এসব কার্যক্রম আমাকে বিব্রত করে। যেখানে সরকার প্রধান পরিষ্কারভাবে তামাকমুক্ত করার ঘোষণা করেছেন সেখানে তামাক কোম্পানির প্রচারণা মেনে নেয়া যায় না। প্রধানমন্ত্রীর কমিটমেন্ট মানে আমাদের সবার কমিটমেন্ট। আর উপস্থাপনায় বলা হয়, ইতোমধ্যে বিশ্বের ৬২টি দেশ সিএসআর নিষিদ্ধ করেছে। কিন্তু বাংলাদেশে তামাক কোম্পানিগুলো নামে বেনামে কৌশলে তাদের সিএসআর কার্যক্রম পরিচালনা করছে।


শেরেবাংলানগরের পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের এনইসি সম্মেলন কক্ষে গতকাল বুধবার ওয়ার্ক ফর বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট ও ইনিশিয়েটিভ ফর পাবলিক হেলথ রিসার্চ অ্যান্ড কমিউনিকেশনে (আইপিএইচআরসি) যৌথভাবে আয়োজিত ‘তামাক কোম্পানির সিএসআর : মিথ ও বাস্তবতা’ শীর্ষক আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটির প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ডা: গোলাম মহিউদ্দিন ফারুকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, জাতীয় পার্টির সংসদসদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের (এনটিসিসি) সমন্বয়কারী (অতিরিক্ত সচিব) হোসেন আলী খোন্দকার, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নাসির উদ্দীন আহমেদ, দ্য ইউনিয়নের কারিগরি পরামর্শক অ্যাডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম তাহিন, তামাকবিরোধী নারী জোটের নির্বাহী পরিচালক ফরিদা আকতার, ভাইটাল স্ট্র্যাটেজিসের বাংলাদেশের হেড অব প্রোগ্রামস শফিকুল ইসলাম, ভাইটাল স্ট্র্যাটেজিসের নাসির উদ্দিন শেখ, ঢাকা আহসানিয়া মিশনের প্রকল্প পরিচালক ইকবাল মাসুদসহ তামাক নিয়ন্ত্রণ বিশেষজ্ঞরা।


পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, যারা তামাক নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন তারা এটা থেকে বেরিয়ে আসার সেফ এক্সিট পয়েন্ট খুঁজে বের করতে সহায়তা করুন। বিএটিবিতে সরকারের একেবারেই সামান্য শেয়ার আছে। আমি এটা প্রত্যাহারের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করব। তিনি বলেন, নবম পঞ্চবার্ষিকীতে কিভাবে তামাক নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা যায় সেটা নিয়ে সবাইকে ভেবে দেখতে হবে।
মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন তামাক নিয়ন্ত্রণ গবেষক ও একাত্তর টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিনিধি সুশান্ত সিনহা। গবেষণার ফল উপস্থাপনের সময় তিনি বলেন, বছরে মাত্র ছয় কোটি টাকা সিএসআর ব্যয় করে ফলাও করে প্রচার করে বিএটিবি। সরকার যখন তামাক নিয়ন্ত্রণে কোনো পদক্ষেপ নেয় তখন সিএসআরে ব্যয় বৃদ্ধি করে বিএটিবি। ইতোমধ্যে বিশ্বের ৬২টি দেশ সিএসআর নিষিদ্ধ করেছে। কিন্তু বাংলাদেশে তামাক কোম্পানিগুলো নামে বেনামে কৌশলে তাদের সিএসআর কার্যক্রম পরিচালনা করছে।


ফরিদা আকতার বলেন, তামাক কোম্পানিতে সচিবদের থাকা লজ্জার। জনগণের টাকায় যাদের বেতন হয় তারা কিভাবে তামাক কোম্পানিতে থাকতে পারে। আমরা সরকারের কাছে সরকারের শেয়ার প্রত্যাহার ও সচিবদের নিয়োগ বন্ধ করার দাবি জানাই। শফিকুল ইসলাম বলেন, বিএটিবির বোর্ডে বিভিন্ন সচিবকে দেখে আমি বিব্রত বোধ করছি। কারণ সচিবরা বোর্ডে থেকে তামাক নীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলছে। ফলে অতিদ্রুত সচিবদের হস্তক্ষেপ বন্ধ হওয়া প্রয়োজন।