Naya Diganta

রোনালদোর রেকর্ডের রাতে পর্তুগালের কষ্টার্জিত জয়

রোনালদোর রেকর্ডের রাতে পর্তুগালের কষ্টার্জিত জয়।

আধিপত্য, ঘুরে দাঁড়ানো, আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ, উত্তেজনা, শিহরণ একটা ম্যাচে যা কিছু থাকার দরকার সব কিছুই ছিল আজ। বিশেষ করে দ্বিতীয়ার্ধে খেলাকে উপভোগ্য করে তুলতে যা কিছু উপাদান প্রয়োজন সবই ছিল তাতে। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের এই ম্যাচে শেষ হাসি হেসেছে পর্তুগালই।

রোনালদোর রেকর্ডের রাতে কষ্টার্জিত জয়ের দেখা পেয়েছে পর্তুগাল। ঘানাকে ৩-২ গোলে হারিয়ে জয় দিয়েই বিশ্বজয়ের মিশন শুরু করল পর্তুগিজরা। তবে প্রথমার্ধে ছিল পর্তুগালের একক আধিপত্য, দ্বিতীয়ার্ধে এসে সমানে সমানে লড়েছে ঘানা। ফলে প্রথমার্ধে যেখানে গোলের দেখাই মেলেনি, সেখানে দ্বিতীয়ার্ধে দুই দল মিলিয়ে গোল সংখ্যা ৫টি।

শুরুটা করেছিলেন প্রথমার্ধের ব্যর্থতায় ঢুবে থাকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোই। নিজের আদায় করা পেনাল্টি থেকে গোল করে দলকে গোল উল্লাসে ভাসান রোনালদো। সেই সাথে বিশ্বের প্রথম ফুটবলার হিসেবে পাঁচটি ভিন্ন ভিন্ন আসরে গোল করার কীর্তি গড়েছেন এই পর্তুগিজ সুপারস্টার। তাছাড়া ইতিহাসের ষষ্ঠ ফুটবলার হিসেবে পাঁচটি বিশ্বকাপ আসরে খেলার সৌভাগ্যও অর্জন করেছেন রোনালদো


অবশ্য ম্যাচের শুরু থেকেই আধিপত্য বিস্তার করছিল পর্তুগাল। যার ফলাফল আসতে আসতেও আসে। দশম মিনিটে সিলভার বাড়িয়ে দেয়া বল প্রায় জালে জড়িয়ে ফেলেছিলেন রোনালদো। তবে সামনে এগিয়ে এসে চমৎকারভাবে রুখে দেন ঘানার গোলকিপার আতি জিগি। ম্যাচের ২৮তম মিনিটে আবার সুবর্ণ সুযোগ আসে পর্তুগালের সামনে আবারো বার্নারদো সিলভা ক্রিয়েটর রূপে আবির্ভূত হোন, তবে এবার তার বানানো সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হোন জোয়াও ফেলিক্স।

একের পর এক আক্রমণের সুফল প্রথমার্ধেই পেয়ে যেতো পর্তুগাল। যদি না ৩১তম মিনিটে রোনালদোর করা গোল ফাউলের কারণে বাতিল না হতো। ম্যাচের প্রথমার্ধ ঘানার ওপরে এক প্রকার এক চেটিয়া আধিপত্য বিস্তার করেও গোলের দেখা পায়নি পর্তুগাল। পর্তুগালের একের পর এক আক্রমণের বিপরীতে বলার মতো কোনো সুযোগই তৈরি করতে পারেনি ঘানা। ফলে প্রথমার্ধ শেষ হয় গোলশূন্য সমতায়।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পায় পর্তুগাল, রোনালদোর নেয়া শট ব্লক হয়ে যায়। তবে ম্যাচের ৬১তম মিনিটে ডি বক্সে রোনালদোকে ফাউল করেন ঘানা ডিফেন্ডার সালিসু। সেই পেনাল্টি থেকে গোল করে পর্তুগালকে এগিয়ে দেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো।

পিছিয়ে পড়ার পর একের পর এক আক্রমণ চালাতে থাকা ঘানা। ৭২ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে দুর্দান্ত এক শট নেন মোহাম্মদ কুদুস, তবে তা কোণাকুণি গোলপোস্টের বাইরে চলে যায়। তবে তার ১মিনিট পরই আন্দ্রে আয়েউ-এর গোল ম্যাচে সমতা এনে দেয় ঘানাকে।

ম্যাচের ফলাফল সমতায় আসার ৬মিনিট পর ব্রুনো ফার্নান্দেসের বাড়িয়ে দেয়া বল জালে জড়িয়ে পর্তুগালের লিড পুনরুদ্ধার করেন জোয়াও ফেলিক্স। দ্বিতীয় গোলের ৩মিনিট পরই ম্যাচের তৃতীয় গোল পায় পর্তুগাল। এবার পর্তুগালের হয়ে বল জালে জড়ান রাফায়েল লেয়াও, লেয়াও এর গোলের পাসও আসে ব্রুনো ফার্নান্দেসের পা থেকে।

পর্তুগালের তৃতীয় গোলের পর ভাবা হচ্ছিল ঘানা বোধহয় আর কামব্যাক করতে পারবে না কিন্তু ৮৯ মিনিটে বদলি হিসেবে নামা মিডফিল্ডার বুকারির গোল পুনরায় ঘানাকে ম্যাচে ফিরে আসার আশা জাগায়। ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ের মুহূর্তটুকু বেশ উত্তেজনা ছড়িয়েছে। দ্বিতীয় গোল পাওয়ার পরই তৃতীয় গোলের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে ঘানা, চালাতে থাকে একের পর এক আক্রমণ।

ম্যাচের একদম শেষ মিনিটে সমতায় ফিরে আসার সুবর্ণ সুযোগ পায় ঘানা। ঘানা ফরোয়ার্ড ইনাকি উইলিয়ামস নাটমেগ করে পরাস্ত করেন পর্তুগিজ গোলকিপার দিয়োগো কস্তাকে, তবে দানিলোর গোল লাইন ক্লিয়ারেন্স পর্তুগালকে বিপদ থেকে রক্ষা করে। অবশেষে ৩-২ গোলের জয় নিয়ে এবারের বিশ্বকাপে শুভ সূচনা করে মাঠ ছাড়ে পর্তুগাল।