Naya Diganta

গণতন্ত্র, সুশাসনকে প্রাধান্য দিয়ে ইইউর সাথে চুক্তিতে রাজি বাংলাদেশ

ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত ঢাকার রাজনৈতিক সংলাপে সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে পার্টনারশিপ কো-অপারেশন অ্যাগ্রিমেন্ট (পিসিএ) করতে উভয়পক্ষ সম্মত হয়েছে। সুবিধাজনক সময়ে ওই চুক্তি সম্পাদন হবে। এই চুক্তিতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের মৌলিক বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত থাকছে। যার মধ্যে গণতন্ত্র, সুশাসন, মানবাধিকার এবং ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল প্রাধান্য পাবে। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ওই সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।
সংলাপে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো: শাহরিয়ার আলম। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষে জোটের বৈদেশিক কার্যক্রম দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপমহাসচিব এনরিকে মোরা পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন।
বৈঠকের মাঝামাঝিতে অনুষ্ঠিত যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ দলের নেতা পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, এর আগে সচিব বা কর্মকর্তা পর্যায়ে সিরিজ আলোচনা হলেও এই প্রথম রাজনৈতিক নেতৃত্ব পর্যায়ে সংলাপ হচ্ছে। এই সংলাপে দুই পক্ষের সম্পর্ক আরো নিবিড় করতে অংশীদারিত্ব সহযোগিতা চুক্তি করতে সম্মত হয়েছি আমরা। আলোচনা চলমান রয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের সাথে ইইউ নিরাপত্তা ইস্যুতে কাজ করতে আগ্রহ দেখিয়েছে। যার মধ্যে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ দমন, ইন্টারনেট সিকিউরিটি, অর্গানাইজড ক্রাইম, জলবায়ু পরিবর্তন, অভিবাসন, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, সংযুক্তির মতো বিষয় রয়েছে।
রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা এর নিরাপত্তার দিকটি যেমন আলোচনা করেছি, তেমনি তাদের মানবিক সহায়তা এবং এই সঙ্কটের রাজনৈতিক সমাধান তথা প্রত্যাবাসন নিয়েও দীর্ঘসময় আলোচনা করেছি। এ ইস্যুতে ইইউ তাদের অবস্থান এবং পদক্ষেপ তুলে ধরেছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী। ইন্দো-প্যাসিফিক নিয়ে আলোচনা তখনো চলমান জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সংলাপে আমরা অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা করছি। বাংলাদেশের সাথে প্রতিবেশী দেশসহ জাতিসঙ্ঘের সদস্য বিভিন্ন দেশের সম্পর্কের বিষয়ে কথা হচ্ছে। ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে কথা হয়েছে। বৈশ্বিক উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে খাদ্য নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা কিভাবে আরো সুসংহত করা যায় সেই পথ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।
এ দিকে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্যকে এনডোর্স করে ইইউ প্রতিনিধিদলের প্রধান এনরিকো মোরা বলেন, আমাদের সম্পর্ক নতুন স্তরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে আমরা আলোচনা করছি, যার মূল ভিত্তি গণতন্ত্র, সুশাসন ও মানবাধিকার। সামনে আমরা অংশীদারিত্ব সহযোগিতা চুক্তি করব।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইন্দো-প্যাসিফিক কিংবা রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ কোনো ইস্যুতেই বাংলাদেশের ওপর কিছু চাপিয়ে দিতে চায় না ইইউ। বরং ঢাকার স্বাধীন সিদ্ধান্তের প্রতি তাদের সম্মান রয়েছে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, ২৭ রাষ্ট্রের জোট ইইউর সাথে এশিয়ার দুই দেশ ভারত ও পাকিস্তান এবং জোট হিসেবে আসিয়ানের অংশীদারিত্ব সহযোগিতা চুক্তি রয়েছে।