Naya Diganta

কোস্টারিকাকে ৭-০ গোলে উড়িয়ে দিল স্পেন

কোস্টারিকাকে ৭-০ গোলে উড়িয়ে দিল স্পেন।

কাতারের আল থুমামা স্টেডিয়ামে ‘ই’ গ্রুপের খেলায় আজ মুখোমুখি হয়েছিল ২০১০ সালের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন স্পেন ও কোস্টারিকা। ৭-০ গোলের বিশাল ব্যবধানে কোস্টারিকে হারিয়ে বিশ্বকাপে উড়ন্ত সূচনা করল লা রোজারা।

একক আধিপত্য ধরে রেখে খেললো স্পেন, কোস্টারিকার পুরোটা সময় ব্যস্ত ছিল স্পেনের আক্রমণ সামলাতে। বলা যায় পুরোটা সময় নিজেদের অর্ধেই খেলল কোস্টারিকা। গোল তো দূর, সামান্য সুযোগও তৈরি করতে পারল না কেইলর নাভাসের দল। একটা শটও নিতে পারেনি গোল অভিমুখে।

সার্জিও বুসকেটসের নেতৃত্বে এক ঝাক তরুণ খেলোয়াড় নিয়ে দল গড়েছেন স্প্যানিশদের কোচ লুইস এনরিকে। অন্যদিকে কোস্টারিকার দলটি বেশ অভিজ্ঞ। ২০১৪ সালে ব্রাজিল বিশ্বকাপে খেলেছিলেন,এরকম ছয়জন খেলোয়াড় রয়েছেন স্কোয়াডে। তারুণ্য বনাম অভিজ্ঞতার লড়াইয়ে আজকে জয় পেল স্প্যানিশ তরুণরাই।

ম্যাচের প্রথম থেকেই অ্যাটাকিং খেলতে শুরু করে স্পেন। ৫মিনিট সময়েই এগিয়ে যেতে পারত দলটি। দানি ওলমো পেদ্রির ক্রস থেকে বল রিসিভ করে কোস্টারিকান গোলরক্ষক কেইলর নাভাসকে একা পেয়েও গোল দিতে ব্যর্থ হন। অবশ্য সে ভুল শুধরে নেন তিনি কয়েক মিনিট পরেই। ম্যাচের ১১মিনিট সময়ে গাবির বাড়ানো বল রিসিভ করে নাভাসকে খুব সহজেই পরাস্ত করে বল জালে ঢোকান ওলমো।

তার এই গোলটি স্পেনের জন্য একটি নতুন রেকর্ড জন্ম দিয়েছে। আর.বি. লেইপজিগের মিডফিল্ডারের পা থেকে আসা এই গোলটি বিশ্বকাপে স্পেইনের শততম গোল। বিশ্বকাপে ৬ষ্ঠ দল হিসেবে শতবার গোল করার মাইলফলক স্পর্শ করল স্পেন। এর আগে ব্রাজিল, জার্মানি, আর্জেন্টিনা, ইতালি, ফ্রান্স এ মাইলফলক ছুঁয়েছে।

১০মিনিট পরে ম্যাচের দ্বিতীয় গোলটি করেন মার্কো অ্যাসেনসিও। জর্ডি আলবার বাম দিক থেকে নেওয়া ক্রস থেকে নাভাসকে ফাঁকি দিয়ে বল জালে জড়ান তিনি। নয় মিনিট পর দ্বিতীয় গোলের সাক্ষাৎ পায় স্পেন। ৩০মিনিট সময়ে ডি বক্সের ভেতর জর্দি আলবাকে ফাউল করে বসেন দুয়ার্তে। ফলে রেফারি স্পেনের পক্ষে পেনাল্টি ঘোষণা করলে স্পটকিক থেকে গোল করেন ফেরান তোরেস।

দ্বিতীয়ার্ধেও দেখা যায় একই চিত্র, স্পেনের একক আধিপত্য। ৫৪মিনিটের মাথায় কোস্টারিকার ডিফেন্ডারদের ভুলের সুযোগ নিয়ে ক্লোজ রেঞ্জে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন তোরেস। হ্যাট্রিকের সম্ভাবনা থাকলেও, ফেরান তোরেসকে উঠিয়ে নেন এনরিকে। তার পরিবর্তে খেলতে নামেন আলভেইরো মোরাতা। এরপর একে একে উঠে যান পেদ্রি, আলবা, বুস্কেটস, অ্যাসেন্সিও।

তাতে অবশ্য স্পেনের আক্রমণের ধার কমেনি একটুও। ম্যাচের ৭৪মিনিটে মোরাতার ক্রস থেকে ভলিতে দারুণ এক গোল করেন পেদ্রি। এই গোলের মধ্য দিয়ে বিশ্বকাপে স্পেনের ইতিহাসের সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতা হিসেবে রেকর্ড গড়েন বার্সেলোনার গোল্ডেন বয়।

ম্যাচের নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে নিকো উইলিয়ামসের ক্রস থেকে গোল করেন বদলি খেলোয়াড় কার্লোস সোলার। তাতেও মন ভরেনি লুই এনরিকের শিষ্যদের। অতিরিক্ত সময়ে আরো একটি গোল করে কোস্টারিকার কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেন মোরাতা।

গোটা ম্যাচে ৮২% সময় নিজেদের পায়ে বল রেখেছে স্পেন। এক হাজারেরও বেশি ১০৪৩টি পাস সম্পন্ন করেছে আজ স্পেন। অন্যদিকে বল দখলের লড়াইয়ে তেমন সুবিধে করে উঠতে পারেনি কোস্টারিকা। এমনকি পুরো ম্যাচে একটিও শট নিতে পারেনি দলটি। রীতিমতো নাস্তানাবুদ হয়েছে কেইলর নাভাসের দল।

উল্লেখ্য, বিশ্বকাপে এটিই কোনো দলের বিপক্ষে স্পেনের সর্বোচ্চ ব্যবধানে জয়।