Naya Diganta

সকালেই দুপুরের খাবার ও পানি নিয়ে গণ-সমাবেশস্থলে বিএনপি নেতাকর্মীরা

সকালেই দুপুরের খাবার ও পানি নিয়ে গণ-সমাবেশস্থলে বিএনপি নেতাকর্মীরা

বরিশাল বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের মঞ্চ প্রস্তুত সম্পন্ন হয়েছে। বেলসপার্ক (বঙ্গবন্ধু উদ্যানে) ৫০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ২৫ ফুট প্রস্থ এ মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। গণ-সমাবেশের ব্যানার লাগানোও সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়াও এ সমাবেশস্থলসহ আশে পাশে ১২০টি মাইক দেয়া হয়েছে।

বরগুনাসহ উপকূলের বিএনপির নেতা-কর্মীরা ভোররাতেই মধ্যেই ট্রলার যোগে বরিশাল লঞ্চঘাট এসে পৌছেছেন। তারা সকাল ৭টায় ট্রলারে বসেই খিচুড়ি খেয়েছেন। তারপর দুপুরের খাবার হিসেবে বিরানি প্যাকেট ও পানির বোতল নিয়ে মিছিল করে সমাবেশস্থল পৌঁছে অবস্থান নিয়েছেন।

এর আগে বরগুনা জেলা ছয়টি উপজেলা সদর,আমতলী, তালতলী,বেতাগী, বামনা ও পাথরঘাটা থেকে পৃথক পৃথক সময়ে ৪২টি ট্রলার যোগে ৯ হাজার বিএনপি নেতা-কর্মী বিভিন্ন সময়ে এ সমাবেশস্থলে পৌঁছেছেন।

অপরদিকে বিএনপির বিভাগীয় এ সমাবেশের এক দিন আগেই রাতে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান নেন বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মী। সমাবেশস্থলেই রাত্রিযাপন করেন এ বরিশাল বিভাগের ছয় জেলা এবং ৪২ উপজেলা থেকে আগত নেতাকর্মীরা।

বামনা উপজেলা বিএনপির আহবায়ক ইঞ্জিনিয়ার আবুল কালাম আজাদ রানা জানান, বিভাগীয় গণ-সমাবেশে যোগ দিতে আমি আমার উপজেলা থেকে তিনটি ট্রলার রাত ১১টায় ছেড়ে বরিশাল লঞ্চঘাটে সকাল ৬টায় এসে পৌঁছেছি। এরপর নেতাকর্মীদের নিয়ে খিচুড়ি খেয়ে, দুপুরের খাবারের জন্য বিরানি প্যাকেট ও পানির বোতল নিয়ে সমাবেশস্থলে এসেছি। আমি দলীয় ব্যানারে নেতাকর্মীদের নিয়ে বিক্ষোভ মিছিলসহকারে এসেছি।

বামনা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মিজানুর রহমান মজ্নু বলেন, কোনো বাধাই আমাদের আটকে রাখতে পারবে না। আমাদের অনেক নেতাকর্মী সাইকেল চালিয়ে ও হেঁটেও সমাবেশে আসছেন। আরেক যুগ্ম আহবায়ক অ্যাড.মশিউর রহমান হাসিব বলেন, আমরা রাতে এখানে থাকছি সমাবেশ সফল করার জন্য। আশা করি আমাদের এ কষ্টের আন্দোলন বিফলে যাবে না।

গণপরিবহন বন্ধে ভোগান্তিতে উপকূল

বিভাগীয় গণ-সমাবেশের দু'দিন আগে থেকেই বরিশালে আসছেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। উপকূলের গণপরিবহণ বন্ধের কারণে দুর্ভোগ এড়াতেই এই কৌশল অবলম্বন করছেন বিএনপি। বরিশাল নগরীর বিভিন্ন স্থানে দক্ষিণ উপকূলের বরগুনা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, ভোলা ও পটুয়াখালীর জেলার সকল উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বেশির ভাগ মানুষ বরিশালে এসে পৌঁছেছেন।

বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানান, পরিবহণ ধর্মঘটের কারণে সমাবেশে আসতে যাতে সমস্যা না হয়, সে জন্যে কর্মী-সমর্থকদের ২/৩ দিন আগেই আসার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ কারণেই তারা বরিশালে আসছেন। জেলা-উপজেলা পর্যায়ের সিংহভাগ নেতাকর্মী ইতোমধ্যে পৌঁছে গেছেন।

সকালে সমাবেশস্থল বঙ্গবন্ধু উদ্যানে গিয়ে শত শত নেতাকর্মীর উপস্থিতি চোখে পড়ে।
বরিশালের ছয় জেলার ৪২ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আসছে মানুষ। বিএনপি নেতাকর্মীরা জানান, অন্যান্য বিভাগে অনুষ্ঠিত সমাবেশের তুলনায় এখানে অনেক বেশি বাধার সম্মুখীন হয়েছেন তারা। খুলনা-রংপুরে সমাবেশের সময় কেবল বাস আর লঞ্চ বন্ধ থাকলেও থ্রি-হুইলার কিংবা রিকশা করে আসতে পেরেছে মানুষ। বরিশালে থ্রি-হুইলার চলাচলও বন্ধ রয়েছে।

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় বিএনপি সহ-সম্পাদক শ্রম ফিরোজ উজ জামান মামুন মোল্লা বলেন, বাধা যে আসবে, তা আমরা আগে থেকেই আঁচ করতে পেরেছিলাম। তাই জনসমাবেশে লোকসমাগমে নেয়া হয়েছে ভিন্ন ভিন্ন কৌশল। অপরাজনীতিকে সঠিক রাজনীতি দিয়ে মোকাবিলা করতে পেরেছে বিএনপি। বাংলাদেশের গণমানুষের অধিকার আদায় করতে আমরা বদ্ধপরিকর। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও পূণ:রুদ্ধার। দেশ নেত্রী ও আপসহীন নেত্রী,গণতন্ত্রের মা বেগম খালেদা জিয়াকে কারামুক্ত করে, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতেই এ গণ-সমাবেশ বিএনপির।