Naya Diganta

৮ ভাগ বেশি ব্যয়ে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজ চীনকে

প্রাক্কলিত দরের চেয়ে ৮ ভাগ বেশি ব্যয়ে রাউজানে ৪০০ মেগাওয়াটের একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের প্রস্তাব দিয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণের জন্য একটি চীনা কোম্পানিকে কাজ দিতে চায় মন্ত্রণালয়।
সূত্র জানায়, ডিপিপি-তে প্রাক্কলিত দর এক হাজার ৬৪৮ কোটি ৫২ লাখ টাকার উল্লেখ রয়েছে। অন্য দিকে চীনা কোম্পানি সিএনটিআইসি-সিএমসি কনসোর্টিয়াম কর্তৃক উদ্ধৃত দর এক হাজার ৭৭৫ কোটি ২৬ লাখ টাকা দাখিল করা হয়েছে, যা প্রাক্কলিত দরের চেয়ে ৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ বেশি। বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় বলেছে প্রকল্প বাস্তবায়ন পর্যায়ে ডিপিপি সংশোধন করে অতিরিক্ত ব্যয় নির্বাহ করা হবে; কিন্তু এই প্রস্তাব অনুমোদন দেয়নি সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। অর্থমন্ত্রীর নেতৃত্বে এই কমিটি ব্যয় কমিয়ে প্রস্তাবটি পুনরায় উত্থাপনের নির্দেশ দিয়েছে।
জানা যায়, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) প্রকল্পটির ডিপিপি অনুমোদনের জন্য বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রী (প্রধানমন্ত্রী)’র কাছে পাঠানো হলে তাতে তিনি মন্তব্য করেন, ‘এখানে ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র ছিল। ৪০০ মেগাওয়াট ধারণ করার মতো জায়গা ও গ্রিড লাইন আছে বা ব্যবস্থা করা যাবে কি না সেটি পরিষ্কার নয়। যদি সম্ভব হয় তবে বাস্তবায়ন করা যায়।’
সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম অঞ্চলের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাতে চট্টগ্রামের রাউজানে ৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র করা হবে। কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগটি নিয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়। এতে ব্যয় হবে এক হাজার ৭৭৫ কোটি ২৬ লাখ টাকা।
জানা যায়, প্রাথমিকভাবে ৬০০ মেগাওয়াট এইচ ক্লাস বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা থাকলেও এ ধরনের ইক্যুইপমেন্ট প্রোভেন না হওয়ায় এর জায়গায় ৪০০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্ল্যান্ট নির্মাণ করার প্রস্তাব বিদ্যুৎ বিভাগ ২০১৯ সালের ১৮ মার্চ অনুমোদন করে। প্রকল্প প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হলে বৈদেশিক সহায়তার পরিবর্তে জিওবি অর্থায়নে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা দেয় কমিশন। টার্নকি ভিত্তিতে ‘বিদ্যুৎ খাত উন্নয়ন তহবিল’ থেকে এর অর্থায়ন করা হবে। ওই তহবিলের অর্থায়নের শর্ত অনুযায়ী বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)-এর নীতিগত অনুমোদন নেয়া হয়। প্রকল্পটি বিদ্যুৎ খাত উন্নয়ন তহবিলের মাধ্যমে বাস্তবায়নের বিষয়ে অর্থ বিভাগ ২০১৯ সালের ১৬ মে ছাড়পত্র দেয়।
সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসনের বিষয়ে বিউবো’র সম্মতিসূচক মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে বিদ্যুৎ বিভাগ গত ২০১৯ সালের ১৯ ডিসেম্বর প্রকল্পের প্রশাসনিক অনুমোদন দেয়। প্রকল্পের গ্যাস সরবরাহের বিষয়টি পেট্রোবাংলা নিশ্চিত করেছে। প্রসঙ্গত প্রস্তাবিত ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদিত বিদ্যুৎ রাউজান-হাটহাজারী ২৩০ কেভি ডাবল-সার্কিট লাইনের মাধ্যমে হাটহাজারী ২৩০ কেভি উপকেন্দ্রে ইভাকুয়েট করা হবে।
সূত্র জানায়, দরপত্র দাখিলের জন্য নির্ধারিত সময়ে সাতটি প্রতিষ্ঠানের কারিগরি প্রস্তাব উন্মুক্ত করা হয়। দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কারিগরি প্রস্তাব যাচাই করে মূল্যায়ন প্রতিবেদন ও আর্থিক প্রস্তাব যাচাই করে প্রতিবেদন দাখিল করে এতে সিএনটিআইসি-সিএমসি কনসোর্টিয়াম, চায়না সর্বনিম্ন দরদাতা বিবেচিত হয়। তবে তা প্রাক্কলিত দরের চেয়ে আট ভাগ বেশি। তবে জানা গেছে, এই প্রকল্পের ব্যয় কমিয়ে আনার জন্য ইতোমধ্যে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।