Naya Diganta

এলএনজি আমদানি সত্ত্বেও ঘাটতি ৬০০ এমএমসিএফ

দেশের গ্যাস খাতের পাঁচটি চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করেছে জ্বালাানি বিভাগ। এসব চ্যালেঞ্জের মধ্যে রয়েছে- চাহিদা ও জাতীয় গ্রিডের চাপের সাথে সমন্বয় রেখে বিভিন্ন গ্যাস ক্ষেত্রের উৎপাদন অব্যাহত রাখা; নতুন গ্যাস ক্ষেত্র আবিষ্কার; গ্যাস উৎপাদন বৃদ্ধি; চাহিদামতো এলএনজি আমদানি ও বিশ্বব্যাপী চলমান কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করা। জ্বালানি বিভাগের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য দেয়া হয়েছে।

জানা গেছে, দেশের প্রধান জ্বালানি হিসেবে প্রাকৃতিক গ্যাসের ওপর চাপ ক্রমাগত বাড়ছে। চলতি বছরের জানুয়ারির হিসাবে দেশের ২৬টি গ্যাস ফিল্ডে অবশিষ্ট গ্যাস মজুদের পরিমাণ হচ্ছে ১০ দশমিক ৭৬ ট্রিলিয়ন ঘনফুট। এ মজুদ দিয়ে চাহিদানুযায়ী গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। এ অবস্থায় গ্যাসের চাহিদা পূরণে এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে। কিন্তু এলএনজি আমদানি করেও গ্যাসের চাহিদা মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। বর্তমানে গ্যাসের চাহিদা দৈনিক প্রায় তিন হাজার ৭০০ এমএমসিএফ। এর বিপরীতে আর-এলএনজিসহ দৈনিক সরবরাহকৃত গ্যাসের পরিমাণ প্রায় তিন হাজার ১০০ এমএমসিএফ। অর্থাৎ চাহিদার বিপরীতে গ্যাসের দৈনিক ঘাটতি ৬০০ এমএমসিএফ। এক বছর আগেও ঘাটতির পরিমাণ একই ছিল।

জ্বালানি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গ্যাসের চাহিদা পূরণে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৬৭০ বিলিয়ন ঘনফুট দেশজ গ্যাস উৎপাদন এবং ৩০ লাখ মেট্রিক টন এলএনজি আমদানির পরিকল্পনা করা হয়েছে।

জ্বালানি বিভাগের হিসাব মতে, এক বছরের ব্যবধানে মাথাপিছু জ্বালানির ব্যবহার ১০.৭৭ কেজিওই বেড়েছে। গত ২০২১ সালের জুন শেষে দেশে মাথাপিছু জ্বালানির ব্যবহার ছিল ৩১৫ কেজিওই। চলতি বছর জুন শেষে এটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২৫.৭৩ কেজিওই।

জ্বালানি বিভাগ সূত্রমতে, কিছু সমস্যা ও চ্যালেঞ্জ থাকলেও সরকারের যুগোপযোগী সিদ্ধান্তের ফলে জ্বালানি খাতে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জিত হয়েছে। তবে গৃহীত প্রকল্প যথাসময়ে বাস্তবায়ন এবং উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়নে যথাসময়ে অর্থায়ন এ খাতের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ।

জানা গেছে, দেশে গ্যাসের উৎপাদন বাড়াতে ২০২৩ সালের মধ্যে নতুন নতুন অনুসন্ধান কূপ খনন, উন্নয়ন কূপ খনন ও কূপের ওয়ার্কওভার করার কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। অগভীর সমুদ্রাঞ্চলে দু’টি ব্লকে (এসএস-০৪ ও এসএস-০৯) দু’টি অনুসন্ধান কূপ খননের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরে চারটি অনুসন্ধান/ উন্নয়ন/ ওয়ার্কওভার কূপ খননের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এ ছাড়া সমুদ্রাঞ্চলে তেল-গ্যাস প্রাপ্তির লক্ষ্যে ২ডি মাল্টিক্লায়েন্ট সিসমিক সার্ভে পরিচালনার প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

অন্যান্যের মধ্যে মাতারবাড়ীতে একটি স্থলভিত্তিক এলএনজি টার্মিনাল স্থাপনের লক্ষ্যে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। পাশাপাশি গ্যাস সঞ্চালন ক্ষমতা বাড়াতে পাইপ লাইন সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। গ্যাস খাত অটোমেশনের আওতায় আনার লক্ষ্যে প্রকল্প নেয়া হয়েছে।

এ ছাড়া চলতি অর্থবছরে ১১ লাখ মেট্রিক টন অপরিশোধিত ও ৪০ লাখ মেট্রিক টন পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি এবং ”ট্টগ্রাম-ঢাকা ৩০ কিলোমিটার তেল পরিবহন পাইপ লাইন স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের।