Naya Diganta

টেকনাফ উপকূলে মালয়েশিয়াগামী ট্রলারডুবি : ৩ রোহিঙ্গার লাশ উদ্ধার

টেকনাফ উপকূলে ট্রলারডুবির পর উদ্ধার হওয়া রোহিঙ্গারা : নয়া দিগন্ত

কক্সবাজারের টেকনাফে সাগরপথে পাচারকালে মালয়েশিয়াগামী ট্রলারডুবির ঘটনায় তিন রোহিঙ্গা নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় ৪৫ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে ৪জন বাংলাদেশি, ৩৩ জন রোহিঙ্গা পুরুষ ও ৮জন নারী। টেকনাফের বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ পরিদর্শক নূর মোহাম্মদ জানান, মঙ্গলবার বেলা ১টার দিকে টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শীলখালীস্থ সাগর উপকূল থেকে ভেসে আসা তিন নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়। জেলেদের দেয়া তথ্য মতে আরো লাশ সাগরে ভাসছে। এর আগে সকাল থেকে এ পর্যন্ত ট্রলারডুবির ঘটনায় সাঁতরিয়ে কূলে আসা চার বাংলাদেশিসহ ৪৫ জনকে উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ড।
কোস্টগার্ডের টেকনাফের বাহারছড়া আউটপোস্ট স্টেশনের কন্টিনজেন্ট কমান্ডার মো: দেলোয়ার হোসেন জানান, মঙ্গলবার ভোর রাতে টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের হলবনিয়া পাড়া এলাকার উপকূলবর্তী সাগরে ট্রলারডুবির এ ঘটনা ঘটে। উদ্ধার হওয়াদের মধ্যে ৮ জন নারী ও ৩৩ জন পুরুষ রোহিঙ্গা এবং অপর চারজন বাংলাদেশী। কোস্টগার্ডের এ কর্মকর্তা জানান, ট্রলারে কতজন ছিল তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। সাগরে আরো অনেকে ভাসছে বলে উদ্ধার হওয়া রোহিঙ্গারা জানিয়েছে। এতে আরো প্রাণহানির আশঙ্কা করা হচ্ছে। উদ্ধার লোকজনের দাবি, উপকূল থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে ট্রলারটি ডুবে যায়। ট্রলারে শতাধিক মালয়েশিয়াগামী ছিলেন।
উদ্ধার হওয়াদের মধ্যে কয়েকজনের সাথে আলাপকালে তারা জানিয়েছেন, দালাল চক্রের প্ররোচনায় বিভিন্ন অঙ্কের টাকা পরিশোধ আবার অনেকেই মালয়েশিয়ায় পৌঁছে টাকা দেয়ার শর্তে মালয়েশিয়ায় যাত্রা করেছিলেন তারা। কিন্তু ট্রলারে অতিরিক্ত মানুষ তুলে মাঝসাগরে অপেক্ষমাণ বড়ো ট্রলারে নিয়ে যাওয়ার সময় ট্রলার ডুবে যায়। এতে যারা সাঁতার কেটে কূলে আসতে পেরেছে তারা এসেছেন। অন্যরা নিখোঁজ।
তাদের দেয়া তথ্য মতে, দালাল চক্র শতাধিক নারী-পুরুষকে উখিয়ার কুতুপালং, লম্বাশিয়া, বালুখালী, মধুরছড়া ক্যাম্প থেকে গাড়িতে তুলে নিয়ে টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের হলবনিয়া গ্রামের একটি বাড়িতে এনে রেখেছিল।
টেকনাফ মডেল থানার ওসি হাফিজুর রহমান বলেন, সমুদ্র পথে রোহিঙ্গারা মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টা করলে তাদের বহনকারী ট্রলারটি ডুবে যায়। পরে কোস্টগার্ডের সহযোগিতায় তাদের জীবিত উদ্ধার করা হয়। তবে আরো কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছেন। এখনো উদ্ধার কার্যক্রম চলছে।
টেকনাফের শামলাপুরের স্থানীয় যুবক তারেক বলেন, ভোরের দিকে সমুদ্রে হাঁটতে বের হয়েছিলাম। সেখানে দেখি কয়েকজন লোক বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করছে। পরে শুনি তাদের ট্রলার ডুবে গেছে। পরে কোস্টগার্ডকে খবর দিলে তারা বোট নিয়ে তাদের উদ্ধার করে।