Naya Diganta
আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন নির্দেশনা

অনুমোদন ছাড়া সহযোগীদের ঋণ প্রদান ও সুদ মাফ করা যাবে না

আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন নির্দেশনা

ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সহযোগী প্রতিষ্ঠানের ইচ্ছেমাফিক ঋণ বিতরণ, সুদ মওকুফ বা খেলাপি ঋণ অবলোপন করতে পারবে না। এখন থেকে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে আলোচ্য সুবিধা দিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদনের প্রয়োজন হবে। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে এক সার্কুলার জারি করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ ও সাবসিডিয়ারিতে দেয়া ঋণসীমা লঙ্ঘন করে অতিরিক্ত বিনিয়োগ ও ঋণ দিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। আবার সেই ঋণের সুদ মওকুফ ও ঋণ অবলোপন শুরু করেছে। এর ফলে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে ঋণ শৃঙ্খলা ভেঙে পড়ছে বলে মনে করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আর এ কারণেই বিদ্যমান নীতিমালা কঠোর করা হয়েছে।
জানা গেছে, নীতিমালা অনুযায়ী, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে তাদের সহযোগী প্রতিষ্ঠানকে ঋণ ও পুঁজি সরবরাহ করতে পারে। আবার নিজেও কোনো প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ধারণ করতে পারে। এ বিষয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন ১৯৯৩ এর ১৪(গ) ধারা অনুযায়ী, ‘কোনো কোম্পানি বা গোষ্ঠীর অনুকূলে মূলধনের ৩০ শতাংশের অধিক ঋণ সুবিধা অনুমোদন করবে না।’ তবে বিশেষ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন সাপেক্ষে মূলধনের সমপরিমাণ অর্থ ঋণ হিসেবে দিতে পারে।


আইনের ১৬ ধারা অনুযায়ী, ‘আর্থিক, বাণিজ্যিক কৃষি বা শিল্পবিষয়ক প্রতিষ্ঠানের বা অনুরূপ কোনো প্রতিষ্ঠানের যেকোনো ধরনের শেয়ার অর্জন বা ধারণের লক্ষ্যে কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান তার পরিশোধিত মূলধন ও রিজার্ভের ২৫ শতাংশের অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় বা ব্যবহার করতে পারবে না।’ গতকাল এ সংক্রান্ত এক সার্কুলারে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, কিছু আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে সাবসিডিয়ারি/ সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোতে সীমাতিরিক্ত বিনিয়োগ করছে। এ ছাড়া আলোচ্য প্রতিষ্ঠানগুলোতে ঋণের সুদ মওকুফ কিংবা ঋণ অবলোপনের ক্ষেত্রে বিদ্যমান বিধি-বিধান লঙ্ঘনের ঘটনা পরিলক্ষিত হচ্ছে। ফলে আর্থিক খাতের ঋণ শৃঙ্খলা ব্যাহত হচ্ছে। প্রতিষ্ঠান গুলোর ঋণ/বিনিয়োগ ফেরত না পাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। আর এ কারণেই আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর তদারকি বাড়াতে নতুন সার্কুলার দেয়া হয়েছে।
পরিবর্তিত সার্কুলার অনুযায়ী, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আমানতকারীদের স্বার্থে ও ঋণ শৃঙ্খলা আনতে নিজস্ব সাবসিডিয়ারি/সহযোগী প্রতিষ্ঠানে ঋণ বা বিনিয়োগ প্রদান, সুদ বা মুনাফা মওকুফ ও বিতরণকৃত ঋণ অবলোপনে বাংলদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমোদন নিতে হবে। প্রসঙ্গত, বর্তমানে দেশে অনুমোদতি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা হচ্ছে ৩৫টি। যার মধ্যে তালিকাভুক্ত হচ্ছে ২৩টি। আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আয়ের একটি অংশ আসে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ ও সহযোগী প্রতিষ্ঠানকে দেয়া ঋণের সুদ থেকে।