Naya Diganta

বাংলাদেশ সীমান্তে মিয়ানমারের হামলা প্রতিরোধ করুন : শান্তি পরিষদ

বাংলাদেশ সীমান্তে মিয়ানমারের হামলা প্রতিরোধের আহ্বান জানিয়েছে শান্তি পরিষদ। বাংলাদেশ শান্তি পরিষদের উদ্যোগে গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘সীমান্তে মিয়ানমার সৃষ্ট উত্তেজনা, বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা এবং রোহিঙ্গাদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন প্রসঙ্গ’ শীর্ষক এক সেমিনারে আহ্বান জানান বক্তারা।
সেমিনারে দেশের বিশিষ্ট কূটনীতিক, নিরাপত্তা বিশ্লেষক, বিচারপতি ও রাজনীতিবিদরা আলোচনা করেন। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি মোজাফফর হোসেন পল্টু। সেমিনারে সূচনা বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী, বাংলাদেশ শান্তি পরিষদের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট হাসান তারিক চৌধুরী।
সভায় অন্যদের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পশ্চিম) শাব্বির আহমদ চৌধুরী, অধ্যাপক মাহফুজা খানম, সিপিবির সভাপতি কমরেড মোহাম্মদ শাহ আলম, বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক এমপি হারুন-অর-রশীদ, জাসদ সাধারণ সম্পাদক শিরীন আকতার (এমপি), গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা: শাহাদাত হোসেন, সাবেক রাষ্ট্রদূত মমতাজ হোসেন, শান্তি পরিষদের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ও ন্যাপের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন, শান্তি পরিষদের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ও ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা মোস্তফা আলমগীর রতন প্রমুখ।
সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন শান্তি পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: শাহজাহান খান, শান্তি পরিষদের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রাগীব আহসান মুন্না, জাহাঙ্গীর আলম ফজলু, আশরাফুল হক ঝন্টু, মিনহাজ সেলিম প্রমুখ।


সভায় বক্তারা বলেন, এক দিকে ইউক্রেনের যুদ্ধ বর্তমান বিশ্বকে এক ভয়াবহ জায়গায় নিয়ে গেছে। অন্য দিকে বাংলাদেশের সীমান্তে মিয়ানমারের অব্যাহত উসকানি এবং অস্থিরতা পরিস্থিতিকে আরো জটিল করে তুলেছে। বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে উত্তেজনা আচমকা সৃষ্ট কোনো ঘটনা নয়। এ রকম ঘটনা এর আগেও ঘটেছে। ২০২০, ২০১৮ এবং ২০১৪ সালেও সীমান্তে মিয়ানমার বাহিনী উত্তেজনা সৃষ্টি করেছিল। সম্প্রতি গত ১৬ সেপ্টেম্বর মিয়ানমার বাহিনী বাংলাদেশের ভূখণ্ডে শেল নিক্ষেপ করে এবং এতে রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে থাকা ১৮ বছর বয়সী মো: ইকবাল নামে এক তরুণ নিহত হয় এবং ছয়জন গুরুতর আহত হয়।
বক্তারা বলেন, মিয়ানমারের সামরিক জান্তা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে কিছু রাষ্ট্রের সহযোগিতায় বাংলাদেশ সীমান্তে প্রতিনিয়ত সামরিক তৎপরতা চালাচ্ছে। জনগণের ট্যাক্সের টাকায় চীন, রাশিয়া ও ভারত প্রভৃতি দেশ থেকে বেশি দামে অস্ত্র কিনে নিজ দেশের নিরীহ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী এবং গণতন্ত্রকামী মানুষের ওপর সন্ত্রাস এবং গণহত্যা চালাচ্ছে, যা বাংলাদেশের শান্তিকামী জনগণ কখনই মেনে নেবে না।


শান্তি পরিষদের সভাপতি মোজাফফর হোসেন পল্টু সভাপতির বক্তব্যে বলেন, সারাবিশ্বের সাধারণ জনগণ যখন কোভিড অতিমারী মোকাবেলায় অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে তখন স্বাস্থ্য খাতে অর্থ ব্যয় করার পরিবর্তে মিয়ানমার বাহিনী নিজ দেশের মানুষকে হত্যা করার জন্য অস্ত্র কিনছে। এই মিয়ানমার বাহিনী নানা অজুহাতে প্রতিনিয়ত বাংলাদেশ সীমান্তকে অস্থির করে তুলছে। বাংলাদেশের শান্তিকামী জনগণের পক্ষ থেকে এসব প্রশ্ন নানাভাবে উঠে আসছে। তাই দেশপ্রেমিক অবস্থান থেকে বাংলাদেশ সীমান্তে মিয়ানমারের সৃষ্ট এই উত্তেজনার প্রকৃত উদ্দেশ্য খুঁজে বের করা দরকার এবং এর একটি নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক তদন্ত হওয়া দরকার। হতাশার কথা হলো, এ প্রসঙ্গে জাতিসঙ্ঘের ভূমিকাও সন্তোষজনক নয়। সুতরাং আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সর্বোচ্চ কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান করা উচিত। একই সাথে সীমান্তে টেকসই শান্তি নিশ্চিত করা উচিত।