Naya Diganta

ছাত্রলীগের বিকারগ্রস্ত কর্মকাণ্ড শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ঐতিহ্যকে ধূলিসাৎ করছে : ছাত্রশিবির

ছাত্রলীগের বিকারগ্রস্ত কর্মকাণ্ড শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ঐতিহ্যকে ধূলিসাৎ করছে : ছাত্রশিবির

দেশের ঐতিহ্যবাহী নারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ইডেন মহিলা কলেজে ছাত্রলীগের ঘৃণিত কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি প্রদান করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।

বুধবার এক যৌথ বিবৃতিতে এ নিন্দা জানিয়েছেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি রাশেদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল রাজিবুর রহমান।

বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় বলেন, দেশের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্বকীয়তা ও ঐতিহ্য আছে। কিন্তু ছাত্রলীগের বিকারগ্রস্ত রাজনীতি প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ঐতিহ্য ও মর্যাদাকে ধূলিসাৎ করে দিয়েছে। যার সর্বশেষ ঘৃণিত নজির স্থাপন হয়েছে ইডেন মহিলা কলেজে। ইডেনে ছাত্রলীগের নিকৃষ্ট কর্মকাণ্ড জাতিকে আবারো লজ্জিত করেছে। দেশের সর্ববৃহৎ নারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ইডেনে ৩৫ হাজার ছাত্রী পড়াশোনা করছে। কিন্তু অবৈধ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে গুটিকয়েক ছাত্রলীগ নেত্রী সকল ছাত্রীকে জিম্মি করে রেখেছে। সরকার ও প্রশাসনের
ছত্রছায়ায় ছাত্রলীগ নেত্রীদের দ্বারা সাধারণ ছাত্রীরা যৌন হেনস্থা, হুমকি, সিট বাণিজ্য এবং শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।

তারা আরো বলেন, সেখানে কোটি কোটি টাকার চাঁদাবাজি হচ্ছে। ছাত্রীদের জোর করে মিছিল-মিটিংয়ে যেতে বাধ্য করা হচ্ছে। ছাত্রীদের বিবস্ত্র করে ছবি তুলে ব্লাকমেইল করা হচ্ছে। আরো ভয়ঙ্কর বিষয় হচ্ছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন আওয়ামী লীগ নেতাদের বাসায় পাঠিয়ে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করছে ছাত্রলীগ নেত্রীরা। যা তাদেরই কেউ কেউ প্রকাশ্যে গণমাধ্যমে বলেছে। এ যেন মধ্যযুগীয় দাস প্রথার পুনঃপ্রচলন। ছাত্রলীগ নেত্রীদের প্রকাশ্যে মারামারি, নির্লজ্জতা ও অশালীন ব্যবহার দেখে দেশবাসী স্তম্ভিত ও ক্ষুব্ধ। তাদের ধারাবাহিক নিকৃষ্ট কর্মকাণ্ড শুধু ইডেন কলেজ নয়, পুরো শিক্ষার্থী-সমাজের মর্যাদাহানি করছে। ছাত্রলীগের অব্যাহত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অভিভাবকরা বিব্রত, ক্ষুব্ধ ও শঙ্কিত।

নেতৃদ্বয় বলেন, প্রতিদিনই ছাত্রলীগের সন্ত্রাসের শিকার হচ্ছে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকসহ সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ। হত্যা, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, দখল বাণিজ্য, মাদক গ্রহণ ও ব্যবসা, হামলা, নির্যাতনসহ এমন কোনো অপকর্ম নেই যা তারা করছে না। কিন্তু সরকার, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কার্যকর কোনো ব্যবস্থা তো নিচ্ছেই না। উল্টো নানাভাবে এসবের পেছনে মদদ দিচ্ছে। মনে হচ্ছে, ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের কাছে শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে রাখাকেই নিয়ম হিসেবে বৈধতা দেয়া হয়েছে। এর বাস্তব চিত্র ইডেন কলেজে দেখেছে দেশবাসী। কিন্তু দেশবাসী ও অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের ছাত্রলীগের সন্ত্রাসের কাছে জিম্মি করে দিতে প্রস্তুত নয়। উগ্রবাদী ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ছাত্রসমাজ মেনে নেবে না। অবিলম্বে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। শিক্ষার্থীদের জান-মালের নিরাপত্তার জন্য কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায় ছাত্রসমাজই এসব প্রতিহত করবে। নিজেদের জান-মাল, ইজ্জত রক্ষায় ছাত্রসমাজ কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজপথে নেমে আসতে বাধ্য হবে। আর তখন কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে তার দায়ভার সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগ ও তাদের মদদদাতা প্রশাসনকেই বহন করতে হবে।

-প্রেস বিজ্ঞপ্তি