Naya Diganta

নারীদের জন্য পুনরায় স্কুল খুলে দেয়ার আহ্বান তালেবান কর্মকর্তার

আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা নারীদের জন্য পুনরায় স্কুল খুলে দেয়ার জন্য ক্ষমতাসীনদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

তিনি বলেছেন, ইসলামে নারী শিক্ষা বন্ধের কোনো যৌক্তিক কারণ নেই।

মঙ্গলবার রাজধানী কাবুলে এক সমাবেশে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী শের মোহাম্মদ আব্বাস স্তানিকজাই এই আহ্বান জানান।

২০২১ সালের আগস্টে তালেবান দেশটির ক্ষমতা দখলের পর এমন আহ্বান বিরল ঘটনা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

এর আগে ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় থাকাকালীন ছয় বছর দেশটির নারী শিক্ষা বন্ধ ঘোষণা করেছিল তালেবান।

দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় আসার পর তালেবান আবারো মেয়েদের মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা বন্ধ করে দেয়। পাশাপাশি নারীদের কর্মক্ষেত্রে হিজাব পরা, জনসম্মুখে মুখ ঢেকে রাখা এবং নিকট পুরুষ আত্মীয় ছাড়া নারীদের দূরে ভ্রমণের ওপরও কঠোর নিদের্শ জারি করে।

তালেবান বলছে, তারা মেয়েদের জন্য পুনরায় মাধ্যমিক স্কুল খুলে দেয়ার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে। তবে এ বিষয়ে কোনো সময়সীমা উল্লেখ করা হয়নি।

জাতিসঙ্ঘ তালেবানের এ নিষেধাজ্ঞাকে ‘লজ্জাজনক’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তাদের এ নির্দেশনার জন্য উদ্বিগ্ন। আশঙ্কা করা হচ্ছে, ১৯৯০’র এর শেষের দিকে ক্ষমতায় থাকাকালে যে অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল তা আবারো হবে।

স্তানিকজাই বলেন, ‘এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে কোনো বৈষম্য ছাড়া সবার জন্যে শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। নারীদের অবশ্যই শিক্ষিত হতে হবে। তাদের শিক্ষার ব্যাপারে ইসলামের কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই।’

তিনি বলেন, ‘আমরা এমন সুযোগ দিতে চাই না যেটা সরকার ও অন্যদের মাঝে ব্যবধানের সৃষ্টি করবে। যদি এখানে কোনো কারিগরি ত্রুটি থাকে, তাহলে তা সমাধান করা হবে। ইসলামে মেয়েদের শিক্ষার ব্যাপারে কোনো বাধা নেই।’

স্তানিকজাই ২০২০ সালে কাতারে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে দেশটি থেকে সেনাঘাটি সরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে এক সমঝোতা চুক্তিতে তালেবানের প্রধান ছিলেন।

জাতিসঙ্ঘ পুনরায় মেয়েদের জন্য স্কুল খুলে দেয়ার আহ্বান জানানোর পর তিনি এই মন্তব্য করেন। এর পর নতুন শিক্ষামন্ত্রী নিয়োগ দিয়েছে তালেবান।

জাতিসঙ্ঘ বলছে, গত বছর থেকে তালেবানের এ নিষেধাজ্ঞার পর এক মিলিয়নের বেশি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলশিক্ষার্থী স্কুলে যেতে পারছে না।

এ নিষেধাজ্ঞার লক্ষ্য ছিল সাত থেকে ১২ বছরের শিক্ষার্থীরা। আর প্রাথমিকভাবে এতে প্রভাবিত হয়েছে ১২ থেকে ১৮ বছরের মেয়েরা।

সূত্র : আল জাজিরা