Naya Diganta

গেহলটের প্যাঁচে বেকায়দায় রাহুল গান্ধী

গেহলটের প্যাঁচে বেকায়দায় রাহুল গান্ধী

ভারতে অশোক গেহলটকে কংগ্রেস সভাপতি করতে গিয়ে রাজস্থানে সরকারের সঙ্কট ডেকে এনেছে গান্ধী পরিবার।

শীর্ষ নেতৃত্বকে আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন অশোক গেহলট। তিনি রাজস্থান রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়তে চান না। দলের সভাপতি হতে তিনি রাজি, তবে তাকে দুটি পদে থাকতে দিতে হবে। রাহুল গান্ধী ওই দাবি খারিজ করে দেন। এরপর রাজস্থানের ৯০ জন কংগ্রেস বিধায়ক বিদ্রোহ ঘোষণা করে জানিয়ে দিয়েছেন, অশোক গেহলটকেই তারা মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে চান। গেহলট মুখ্যমন্ত্রী না থাকলে তারা সরকারকে সমর্থন করবেন না।

আর অশোক গেহলটও জানিয়ে দিয়েছেন, পরিস্থিতি তার হাতের বাইরে চলে গেছে। তার আর এখন কিছু করার নেই। বিধায়কেরা খুবই রেগে গেছেন। তারা কিছুতেই শচিন পাইটকে মুখ্যমন্ত্রী হতে দিতে রাজি নন।

এই অবস্থায় কংগ্রেসের দুই পর্যবেক্ষক রাজ্যসভার বিরোধী নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে এবং রাজস্থানের দায়িত্বে থাকা অজয় মাকেন জয়পুর গেছেন। তারা বিধায়কদের সাথে আলাদাভাবে কথা বলতে চান। কিন্তু গেহলটপন্থী বিধায়কদের তরফে প্রতাপ সিং খাচারিয়াস জানিয়েছেন, নবরাত্রি শুরু হয়েছে। সব বিধায়ক নিজেদের বাড়িতে বা নির্বাচনকেন্দ্রে চলে গেছেন। এখন তাদের পক্ষে দেখা করা সম্ভব নয়। এইভাবেই সময় নিচ্ছেন বিধায়করা।

দুই শ' সদস্যের রাজস্থান বিধানসভায় কংগ্রেসের বিধায়কসংখ্যা ১০৮। এছাড়া ১৩ জন নির্দল বিধায়ক সরকারকে সমর্থন করছেন। এখন এই ১০৮-এর মধ্যে ৯০ জন গেহলটের পক্ষে। ফলে শচিন পাইলট বিধায়কদের সমর্থন পাওয়ার প্রশ্নে অনেকটাই পিছিয়ে।

প্রবীণ সাংবাদিক শরদ গুপ্তা ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, 'কংগ্রেস এখন একার ক্ষমতায় রাজস্থান ও ছত্তিশগড়ে ক্ষমতায় আছে। তার মধ্যে আবার রাহুল গান্ধী ভুলভাল সিদ্ধান্ত নিয়ে দলের বিপদ ডেকে এনেছেন।'

তিনি জানিয়েছেন, 'রাহুল ভেবেছিলেন, গেহলটকে কংগ্রেস সভাপতি করা হলে, তিনি মুখ্যমন্ত্রীর পদ শচিনকে ছেড়ে দিয়ে সানন্দে দিল্লি আসবেন। কংগ্রেসের এখন এমনই হাল যে, সর্বভারতীয় সভাপতি হওয়ার চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীর পদে থাকা ভালো। গেহলট এমন প্যাঁচ কষেছেন, তাতে হয় তার কথা মানতে হবে, নাহলে রাজস্থানেও ক্ষমতা হারাবে কংগ্রেস।'

সাংবাদিক জয়ন্ত ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, 'একের পর এক রাজ্য কিভাবে হারাতে হয় তা শিখতে গেলে কংগ্রেসের কাছে যেতে হবে।'

ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেছেন, 'এবার তো বিজেপি-কে কিছু করতেই হচ্ছে না। কংগ্রেসই হারাকিরি করছে। এখন রাহুলের পক্ষে সবচেয়ে সম্মানজনক পথ হতে পারে, যদি গেহলটের অনুগত কাউকে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী করে গেহলটকে কংগ্রেস সভাপতি করা। তাতেও শচিনের কাছে রাহুলের মুখ পুড়বে।'
সূত্র : ডয়চে ভেলে