Naya Diganta
সিলেটে সংবাদ সম্মেলনে ধর্ষণের শিকার দুই তরুণী

সম্ভ্রম হারিয়েও আত্মগোপনে থাকতে হচ্ছে, মূল হোতা ধরাছোঁয়ার বাইরে

সিলেটে সংবাদ সম্মেলনে ধর্ষণের শিকার দুই তরুণী

সিলেট নগরের পাঠানটুলায় একটি হোটেলে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার দুই তরুণী জানিয়েছেন, পাশবিক নির্যাতনের শিকার হয়ে বিচারপ্রার্থী হওয়ায় তারা নিরাপত্তাহীনতায় আছেন। নানা চাপের মুখে এখন অনেকটা আত্মগোপনে থাকতে হচ্ছে তাদের। গতকাল সোমবার দুপুরে সিলেট প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন তারা। এ সময় লিখিত বক্তব্যে দুই তরুণী রিয়া ও চম্পা বলেন, ‘এখন পর্যন্ত মামলার মাত্র দুই আসামি তানিয়া ও রাহি গ্রেফতার হয়েছে। তবে মূল হোতা জুবেলসহ অন্য আসামিরা এখনো ধরা-ছোঁয়ার বাইরে রয়েছে। আসামিরা মামলা আপস করার জন্য আমাদের দু’জনকে বিভিন্ন মাধ্যমে অবিরত চাপ দিচ্ছে।’
তারা আরো বলেন, ‘এত বড় ঘটনার পরও আসামিরা থেমে নেই। আমাদের মোবাইল ফোন তাদের কাছে থাকায় ফোনে থাকা ব্যক্তিগত কিছু ভিডিও এবং ছবি এডিট করে বিভিন্ন আপত্তিকর কথা জুড়ে দিয়ে সেগুলোর মাধ্যমে ব্ল্যাকমেইলের চেষ্টা করা হচ্ছে। এসব ভিডিও ইন্টারনেটে ভাইরাল হলে আমাদের মৃত্যু ছাড়া সামনে আর কোনো পথ খোলা থাকবে না। কারণ- সাধারণ মানুষ কোনটা এডিট আর কোনটা রিয়েল ভিডিও সেটি বুঝতে পারবে না।’
দুই তরুণী তাদের মোবাইল ফোন উদ্ধারে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের প্রতি অনুরোধ জানান। তারা বলেন, ‘সব আসামি গ্রেফতার করে শাস্তি নিশ্চিত করা হোক। তারা আমাদের সম্ভ্রম কেড়ে নিয়েছে। বেঁচে থাকার অধিকারও যাতে কেড়ে নিতে না পারে সে ব্যবস্থা করুন।’ পাশবিক নির্যাতনের শিকার দুই তরুণী নিজেদের মামলায় এজাহারনামীয় দুই আসামির সংশ্লিষ্টতা নেই বলে উল্লেখ করেন। তারা বলেন, ‘আমাদের মামলায় সিলেট নগরের পাঠানটুলা এলাকার আলী আকবরের ছেলে যুবলীগ নেতা রানা আহমদ শিপলু ওরফে শিবলু ও সুনামগঞ্জ সদর থানার হরিনাপাট গ্রামের ফরহাদ রাজা চৌধুরীর ছেলে মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহসাংগঠনিক সম্পাদক নাবিল রাজা চৌধুরীর নাম উল্লেখ করেছিলাম। পরবর্তীতে পুলিশ যখন আমাদের নাবিল-শিপলুসহ অভিযুক্তদের ছবি দেখায় তখন নাবিল-শিপলু সেদিন আমাদের নির্যাতন করেনি বলে আমরা নিশ্চিত হই।’
কী কারণে তাদের আসামি করা হয়েছিল জানতে চাইলে তারা বলেন, ‘অভিযুক্ত আসামিদের মুখে তাদের দুজনের নাম শুনেছি। তাই মামলায় তাদের নাম দিয়েছি। কিন্তু পরবর্তীতে ছবি দেখার পর নিশ্চিত হই ওইদিন নাবিল-শিপলু আমাদের ওপর কোনো প্রকার নির্যাতন করেননি।’
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তারা আরো জানান, একটি বিভীষিকাময় রাত শেষে পরদিন দুপুরে ‘ধর্ষণের কোনো ঘটনা ঘটেনি’ এ মর্মে আমাদের (রিয়া ও চম্পা) কাছ থেকে স্বীকারোক্তিমূলক কথা মোবাইল ফোনে রেকর্ড করে। এরপর বেলা একটার দিকে তারা আমাদের হোটেল থেকে বের করে দেয় এবং আমাদের মোবাইল ফোনসহ সাথে থাকা সব জিনিসপত্র রেখে দেয়। এ সময় জুবেল ও তানিয়া বলে তাদের কথামতো চললে তিনদিন পর মোবাইলসহ সব কিছু ফিরিয়ে দেবে। দুই তরুণী বলেন, ‘আমরা সেদিন মানসিকভাবে ভেঙে পড়ায় এবং শারীরিকভাবে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ায় দ্রুত ওসমানী হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করি। পরবর্তীতে আমরা (রিয়া ও চম্পা) জালালাবাদ থানায় গিয়ে পৃথক মামলা দায়ের করি।’