Naya Diganta
১৯ চিকিৎসকের মধ্যে মাত্র ২ জন ছিলেন

দেশের স্বাস্থ্যসেবার একটি চিত্র

১৯ চিকিৎসকের মধ্যে মাত্র ২ জন ছিলেন

রাজধানীর অদূরবর্তী গজারিয়া (মুন্সীগঞ্জ) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গত সপ্তাহের কর্মদিবসে ১৯ জন দায়িত্বশীল ডাক্তারের মধ্যে কেবল দু’জন হাজির ছিলেন। দেশের প্রধান মহাসড়ক ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইওয়েতে অবস্থিত; গত রোববার সপ্তাহের পয়লা কর্মদিবসেই উপজেলা সদরের এ হাসপাতালে উপজেলা স্বাস্থ্য অফিসারসহ ১৭ জন চিকিৎসক কোথায় গেছেন, তা জানা যায়নি। সাধারণত এখানে সারা দিনই রোগীদের আগমন ঘটে থাকে। বিভিন্ন ধরনের রোগী এ হাসপাতালে ভর্তি হয়। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যত দুর্ঘটনা, এর সব আহত ব্যক্তিও এখানেই ভর্তি হয়ে থাকেন।
এত গুরুত্ববহ এক হাসপাতালে মাত্র দু’জন ডাক্তার উপস্থিত এবং বাকি ১৭ জনই অনুপস্থিত থাকা সবার গভীর উৎকণ্ঠার বিষয়। এ অবস্থা দেখা গেছে গত ১৮ সেপ্টেম্বর রোববার। ব্যাপারটা যুগপৎ হাস্যকর ও মর্মান্তিক। দেশের চিকিৎসাব্যবস্থা তাহলে কোথায় গিয়ে ঠেকেছে, সে এক বড় প্রশ্ন। সে দিন উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালে ডা. খন্দকার আরশাদ কবির এবং আরএমও ডা: আশরাফুল ইসলাম। তখন গজারিয়ার মহিলা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাও গরহাজির ছিলেন বলে জানা যায়। ওই দু’জন ডাক্তার এ বিষয়ে কিছু বলতে পারেননি।
জানা গেছে, মাত্র দু’দিন আগে এখানে অপারেশন বিভাগ চালু হয়, যাতে একজন কন্যাশিশুকে সর্বপ্রথম ডেলিভারি করা হয়েছে। এটা স্থানীয়দের মধ্যেই শুধু নয়, মিডিয়াতে বেশ গুরুত্ব পায়। মাত্র দু’জন ডাক্তার থাকার প্রশ্নে গজারিয়ার উপজেলা স্বাস্থ্য অফিসার ক্ষুব্ধ হন। তিনি বলেন, ‘এখন দু’জনই থাকবেন’। তখন সন্ধ্যা ৫টা ৫০ মিনিট। বেলা ১টাতেও কেন মাত্র দু’জন চিকিৎসক, এটা মানতে তিনি নারাজ। একজন ভুক্তভোগী জানিয়েছেন, ‘আমি এ উপজেলা হাসপাতালে এসেছি বেলা ১২টা ৪০ মিনিটে। তখন কোনো ডাক্তার ছিলেন না এখানে।’ তার প্রশ্ন, ‘তাদের কেউ না থাকলে কী করে আমরা চিকিৎসাসেবা পাবো?’ আরেক রোগী দুপুর ১টায় এ হাসপাতালে এসেও ডাক্তারদের একজনকেও পাননি। মুন্সীগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন বলেন, ডাক্তাররা হয়তো নাইট ডিউটি করেন, তাই অনুপস্থিত ছিলেন। আবার তিনি বলেছেন, ‘তাদের গরহাজির থাকার কথা নয়। আমি এ ব্যাপারে দেখছি।’
এ বিষয়ে অবিলম্বে তদন্ত করে দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি দেয়ার জন্য আমরা কর্তৃপক্ষের প্রতি জোর দাবি জানাই।