Naya Diganta

মালয়েশিয়ায় বড় ভাইয়ের লাশ ফেলে ছোট ভাই উধাও, দেশে পাঠাল স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা

উজ্জ্বল হোসেনের লাশ তার গ্রামের বাড়ি পৌঁছে দেয়া হয়েছে।

মালয়েশিয়ার রাজধানীর কুয়ালালামপুর থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরে ইপুহ প্রদেশের এক হাসপাতালে গত তিন মাস আগে হার্ট অ্যাটাকে মারা যান বগুড়ার উজ্জ্বল হোসেন (৩৪)। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করার পর থেকে তার ছোট ভাই নিহারুল ইসলামের আর খোঁজ পায়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

অবশেষে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ভয়েস ফর গ্লোবাল বিডি লন্ডনের তত্ত্বাবধানে শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে উজ্জ্বলের লাশ পৌঁছেছে তার গ্রামের বাড়িতে।

লাশে পচন ধরায় গত সপ্তাহে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সাংবাদিক আশরাফুল মামুনকে বিষয়টি অবহিত করে।

আশরাফুল মামুন বিষয়টি প্রথমে দূতাবাস ও পরে লন্ডনভিত্তিক ভয়েস ফর গ্লোবাল বিডি’র মালয়েশিয়াস্থ নেতৃবৃন্দকে জানান। তখন সংস্থাটির কান্ট্রি ডিরেক্টর মাহবুব আলম শাহ ও ব্যবসায়ী ইকবাল হোসেন এবং ব্যবসায়ী রাসেল এগিয়ে এসে মানবিক সহযোগিতা করে লাশ প্রেরণের সব খরচ বহন করেন।

বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছে। দূতাবাসের সহযোগিতা এবং ভয়েস ফর গ্লোবাল বাংলাদেশিজ’র সহযোগিতায় লাশ প্রেরণ করার পর আজ শুক্রবার সকালে উজ্জ্বলের গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়েছে।

উজ্জ্বল হোসেন বগুড়া জেলার কাহালু থানার নিশ্চিন্তপুর গ্রামের কাজিপাড়ার বাসিন্দা। জানা গেছে, উজ্জ্বল দালালের খপ্পরে পড়ে গত চার মাস আগে ট্যুরিস্ট ভিসায় মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান। মালয়েশিয়ায় আপন ছোট ভাই নিহারুল ইসলামের সাথে একসাথে বসবাস করতেন।

তবে চেষ্টা করেও মালয়েশিয়া প্রবাসী নিহারুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তাই তার বড় ভাইয়ের লাশ হাসপাতালে ফেলে যাওয়ার বিষয়ে কোনো তথ্য জানা যায়নি।

উজ্জ্বলের স্ত্রী রেশমা বেগম মোবাইলে বলেন, ‘আমাকে কিছুদিন আগে লোক মারফতে জানানো হয়েছে যে আমার স্বামী মারা গেছে। তবে কি কারণে এতদিন তা গোপন করা হলো আমি এখনো জানি না। আমার স্বামীর লাশ যারা আমার কাছে পৌঁছে দিয়েছেন তাদের ঋণ শোধ করতে পারবো না, বিশেষ করে দূতাবাস, ভয়েস ফর গ্লোবাল বাংলাদেশিজ লন্ডন ও সাংবাদিক আশরাফুল মামুনের জন্য জীবন ভর দোয়া করবো।’

ভয়েস ফর গ্লোবাল বাংলাদেশিজ লন্ডন থেকে সংস্থার প্রেসিডেন্ট ও ব্রিটিশ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শিক্ষা উপদেষ্টা ড. হাসনাত হোসাইন এমবিই এক বিবৃতিতে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, ‘লাশটি গত তিন মাস ধরে হাসপাতালের মর্গে পড়েছিল এবং তার মুখ চেনা যাচ্ছে না। আমাদের মালয়েশিয়া ভিএফজিবি সমন্বয়কারী দল; ভিএফজিবির মালয়েশিয়ার নির্বাহী পরিচালক মাহবুব আলম শাহের সরাসরি তত্ত্বাবধানে, ভিএফজিভি সমন্বয়কারী ইকবাল হোসেন এবং তার সহযোগী রাসেল রানা এবং ভিএফজিবি মালয়েশিয়ার সাংবাদিক আশরাফুল মামুনের সহায়তায় দূতাবাস থেকে কাগজপত্র প্রস্তুত করতে সক্ষম হয়েছে। এই প্রবাসীর লাশ অবশেষে আজ রাতে বাড়িতে পৌঁছে দেয়া হয়েছে। এভাবে আমরা ভিফরজিবি লন্ডন সারা বিশ্বে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বাংলাদেশীদের পাশে থাকবে। আমাদের এই সংগঠন সারা বিশ্বে শাখা রয়েছে।’