Naya Diganta

উদ্যোক্তা হওয়ার পাঁচ সুফল

উদ্যোক্তা হওয়ার পাঁচ সুফল

চাকরি না করেও যে স্বাধীনভাবে কিছু করা যায়, তাই করে দেখিয়েছেন নরসিংদী জেলার আবেদ সরকার। পড়ালেখার পাশাপাশি দীর্ঘ পাঁচ বছরের কঠোর পরিশ্রমে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে তিনি এখন সফল এক উদ্যোক্তা।

আবেদ সরকার বলেন, আস্তে আস্তে করে সবাইকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। এজন্য উদ্যোক্তাদের কিংবা ব্যবসা করার কয়েকটি ইতিবাচক দিক আমাদের জানা প্রয়োজন।

এক. আপনি স্বাধীনভাবে আপনার ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবেন। এখানে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে আপনাকে অন্যের মুখাপেক্ষী হতে হবে না।

দুই. চাকরি করার ক্ষেত্রে আপনি যতই পরিশ্রম করুন কিংবা আপনার পরিশ্রমের ফলে প্রতিষ্ঠান যতই লাভবান হোক না কেন, আপনি নির্দিষ্ট অঙ্কের বেতনের বাইরে কোনো সুযোগ-সুবিধা পাবেন না। অথচ উদ্যোক্তাদের ক্ষেত্রে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যত লাভ হবে, সেই সুযোগ-সুবিধা দিনশেষে উদ্যোক্তাদের পকেটেই চলে যাবে। এখানে সবসময় উদ্যোক্তাদের পরিশ্রম না করলেও চলে।

তিন. একটা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দাঁড় করাতে পারলে, সেটা শুধু উদ্যোক্তার নিজের জন্য নয়, পরের প্রজন্মের জন্যও নিশ্চিত আয়ের ব্যবস্থা করবে। আর ব্যবসা যতই পুরাতন হয় এবং উদ্যোক্তা হিসেবে সেটি বর্ধিত করার সুযোগ ততই বেড়ে যায়।

চার. সকল ধরনের চাকরি (খুব ছোট মানের) কিন্তু আপনাকে আর্থিক সচ্ছলতা দেবে না। কিন্তু একজন উদ্যোক্তা যদি নিজের বুদ্ধিমত্তা খাটিয়ে ব্যবসা চালাতে পারেন, তবে ব্যবসা তাকে আর্থিক সচ্ছলতা প্রদান করবে। যে কোনো ভুলের কারণে, সকালে অফিসে গিয়ে জানা গেলো চাকরি নেই, এমন ঘটনা উদ্যোক্তাদের ক্ষেত্রে ঘটার সুযোগ নেই।

পাঁচ. উদ্যোক্তারা নিজেদের বহুবিধ দক্ষতার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায় বিনিয়োগ করতে পারেন। এখানে বিভিন্ন ক্ষেত্রে পড়ে থাকা সুযোগ-সুবিধার যেমন সর্বোচ্চ ব্যবহার যেমন সম্ভব, তেমনি কর্মসংস্থানেরও বিশাল সুযোগ সৃষ্টি সম্ভব। অফিসিয়াল বাধ্যবাধকতা উদ্যোক্তাদের পুঙ্ক্ষানুপুঙ্ক্ষভাবে মেনে চলতে হয় না। বসদের নিকট জবাবদিহিতা থাকে না। কিংবা সকাল বেলা অফিসে গিয়ে চাকরি থেকে বরখাস্ত হওয়ার খবরও শুনতে হয় না। একথা সত্য, উদ্যোক্তাদের ঝুঁকির সম্মুখীন হতে হয়। লাভের পরিমাণ যেমন অপরিসীম, ঝুঁকির পরিমাণও তেমন বেশি থাকে। তবে হ্যাঁ, সঠিক সময়ে যারা কার্যকর সিদ্ধান্ত নিতে পারে, তারা ব্যবসায়ে সাধারণত ক্ষতির সম্মুখীন হন না।

উদ্যোক্তা হতে হলে সবাইকে মিল কলকারখানা স্থাপন করতে হবে, বিষয়টা কিন্তু এমন নয়। এতটা কঠিন করে ভাবার আদৌ কোনো সুযোগ নেই। হাজার ধরনের অপশন আমাদের সামনে পড়ে আছে। প্রয়োজন শুধু যে কাজটা আপনি ভালোভাবে করতে পারবেন, সেটা ঠিকমত খুঁজে বের করে কাজটা শুরু করা। হাতের কাজ জানলে আরো ভালো হয়। ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ সুবিধা পাওয়া এখন অনেক সহজ।

১৬ কোটির অধিক মানুষের বাস আমাদের এই দেশে। ভালো কোনো পণ্য কিংবা সেবা বাজারে আনতে পারলে ভোক্তার অভাব নেই। প্রয়োজন শুধু উদ্যোগ। নির্দিষ্ট অঙ্কের বেতন পাওয়ার জন্য সার্টিফিকেট নিয়ে বছরের পর বছর ঘোরার দরকার কী? আত্মনির্ভরশীলতার জন্য উদ্যোক্তা হওয়ার বিকল্প নেই।