Naya Diganta

চা শ্রমিকদের চিকিৎসা ও বাসস্থানের আশ্বাস দিলেন প্রধানমন্ত্রী

সিলেট, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ এবং চট্টগ্রাম বিভাগের চা বাগানগুলোর শ্রমিকদের সাথে ভার্চুয়ালি মতবিনিময় করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই প্রথম বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনো রাষ্ট্রপ্রধান অবহেলিত চা শ্রমিকদের সাথে সরাসরি কথা বলছেন। এ সময় চা শ্রমিকরা প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা বলতে গিয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন। শোনান তাদের দুঃখগাথা ও প্রত্যাশার কথা। প্রধানমন্ত্রীও কথাগুলো মন দিয়ে শুনে আশ্বাস দেন চা শ্রমিকদের শিক্ষা, চিকিৎসা ও বাসস্থানের ব্যবস্থা করে দেয়ার।
গতকাল শনিবার বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউসের সঞ্চলনায় অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভার শুরুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চা শ্রমিকদের উদ্দেশে কথা বলেন।
এরপর মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের পাত্রখোলা চা বাগান দলই ক্লাবে আয়োজিত অনুষ্ঠানস্থল থেকে সরাসরি কথা বলেন দুই নারী চা শ্রমিক। তারা হলেন- রিতা পানিতা ও সোনমানি রাজ হংসিমান। পরে হবিগঞ্জের শিমুল ও আরেকজন নারী শ্রমিক বক্তব্য রাখেন। এরপরে প্রধানমন্ত্রী সিলেট জেলার চা শ্রমিকদের কথা শোনেন।
সিলেটের লাক্কাতুরা চা বাগান এলাকার গলফ মাঠে আয়োজিত অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসক মো: মজিবর রহমান। এ সময় বক্তব্য রাখেন, লাক্কাতুরা বাগানের নারী শ্রমিক শ্যামলি গোয়ালা। তিনি প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে কয়েকটি দাবি পেশ করেন। সেগুলো হচ্ছে, সিলেটের চা শ্রমিকদের জন্য নিজস্ব ভূমি ও ঘর, চিকিৎসাসেবায় অ্যাম্বুলেন্স ও বিশেষজ্ঞ ডাক্তার এবং চা শ্রমিক গর্ভবতী নারীদের ছয় মাসের ছুটির ব্যবস্থা করার অনুরোধ জানান তিনি। এরপর চা শ্রমিকদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন- চা শ্রমিক ইউনিয়ন সিলেট ভ্যালির সভাপতি রাজু গোয়ালা। তিনি বক্তৃতাকালে চা শ্রমিক সন্তানদের জন্য চাকরির ক্ষেত্রে আলাদা কোটা ও উচ্চতর শিক্ষা অর্জনের সুযোগ প্রদান এবং গ্র্যাচ্যুইটি ব্যবস্থা চালুর দাবি জানান।
তাদের বক্তব্য শেষে প্রধানমন্ত্রী চা শ্রমিকদের সব শিক্ষা, চিকিৎসা ও বাসস্থানসহ নাগরিক বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ব্যবস্থা করে দেয়ার আশ্বাস প্রদান করেন।
খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সরকারের অগ্রাধিকার
বাসস জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকারের অগ্রাধিকার হচ্ছে বৈশ্বিক সঙ্কট বিবেচনায় রেখে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। এ ছাড়া তারা দরিদ্র গৃহহীন মানুষের জন্য স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, যোগাযোগ ও আশ্রয় নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় গুরুত্ব দিয়েছেন বলেও জানান তিনি। গতকাল সন্ধ্যায় গণভবনে হলি সি, ভ্যাটিকানের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত আর্চবিশপ জর্জ কোচেরি, পাপাল নানসিওর সাথে সাক্ষাৎকালে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস উপস্থিত ছিলেন।